একসঙ্গে অনিল বৈজল (বাঁ দিকে) এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র
রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী সংঘাতে সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা খেল দিল্লির আম আদমি পার্টি (আপ) সরকার। অন্যদিকে কার্যত জয় পেলেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল অনিল বৈজল। দিল্লিতে আমলাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তের অধিকার কেন্দ্রেরই, জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। তদন্ত কমিশনও গঠনের প্রয়োজন হলে, সেটাও কেন্দ্রই করবে বলেও রায় শীর্ষ আদালতের। রায়ের পর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সংবিধান বিরোধী। সরকার আইনি পথে সমাধানের চেষ্টা করবে।
অন্য দিকে, দিল্লিতে অফিসারদের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কেন্দ্র নাকি রাজ্য সরকারের হাতে থাকবে, সে বিষয়ে এ দিন সিদ্ধান্ত হয়নি। দুই বিচারপতির মধ্যে মতপার্থক্য হওয়ায় বিষয়টি আরও বড় বেঞ্চে পাঠানোর সুপারিশ করেছেন বিচারপতিরা। এক্ষেত্রে দু’পক্ষের ‘পারস্পারিক সহযোগিতা জরুরি’ বলে পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের।
দিল্লিতে দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার অধিকার, অফিসারদের বদলি-পদোন্নতি-সহ নানা বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কেন্দ্র নাকি রাজ্য সরকারের, এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বিরোধ দীর্ঘদিনের। কার্যত ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ নিয়ে শুরু হয় সংঘাত। কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে উপ-রাজ্যপালের সঙ্গে এই সংঘাত গড়ায় আদালতে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং অশোক ভূষণের সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলা ওঠে। দীর্ঘ শুনানির পর বৃহস্পতিবার মামলার রায়ে বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, দিল্লির দুর্নীতি দমন ব্যুরোর নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকবে কেন্দ্রের হাতেই।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের সঙ্গে সঙ্ঘাত: মমতার পথে রাতভর ধর্না পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রীর
আরও পড়ুন: ডুবছে পিএফ-পেনশনের ২০ হাজার কোটি, অবসরের পাওনা অনিশ্চিত ১৪ লক্ষ কর্মীর
আপের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল, এই ব্যুরোর নিয়ন্ত্রণের অধিকার একমাত্র দিল্লির নির্বাচিত রাজ্য সরকারের হাতেই থাকা উচিত। কিন্তু সেই যুক্তি টেকেনি।
কিন্তু শুধু দুর্নীতি নয়, কেজরীওয়াল-বৈজল সংঘাতের মূল বিষয় ছিল, অফিসারদের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, সেটা নিয়ে। সে বিষয়ে এদিন বিচারপতি সিক্রি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণ একমত হতে পারেননি। বিচারপতি সিক্রি মনে করেন, অফিসারদের বদলি ও অন্যান্য বিষয় কেন্দ্রের প্রতিনিধি উপ-রাজ্যপালের হাতেই থাকা উচিত। তার পরও কোনও সমস্যা হলে রাষ্ট্রপতির কাছে যেতে পারে দু’পক্ষই। যদিও ভিন্ন মত পোষণ করেন বিচারপতি অশোক ভূষণ। সেই কারণেই এই মামলা বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোর সুপারিশ করেন দুই বিচারপতি।
তবে রায়ের পরই কেজরীওয়ালের তোপ, এই রায় গণতন্ত্র বিরোধী। পাশাপাশি এই রায় দিল্লির সাধারণ মানুষের প্রতি অবিচার বলেও মন্তব্য করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy