(বাঁদিকে) নেহার কোলে ছোট্ট আলিশা। গাছ পুঁতছেন রঞ্জিত নাইক। (ডানদিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
চলতি বছরের ১৮ অগস্ট জন্ম নিয়েছে তাঁদের কন্যাসন্তান। সেই মেয়েরই নামকরণ অনুষ্ঠান, নিমন্ত্রিত বহু মানুষ। কিন্তু এই নামকরণ অনুষ্ঠানটাই এক্কেবারে অন্য ধাঁচের করে নজির গড়লেন পুণের এক দম্পতি। ১০১টি গাছের চারা পুঁতে দিলেন পুণে থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে একটি অঞ্চলে, যে অঞ্চলটি বহু দিন ধরে খরা প্রবণ অঞ্চল বলে চিহ্নিত।
পুণের রঞ্জিত এবং নেহা নায়েকের উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কিছু করা। যে দলে পড়ছে তাঁদের দেড় মাসের কন্যা আলিশাও। কিন্তু সাধারণ রীতিনীতি বাদ দিয়ে গাছের চারা পুঁতে আলিশার নামকরণের অনুষ্ঠানটা এক্কেবারে অন্যরকম করে দিলেন নায়েক দম্পতি।
পুণে থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে ভূলেশ্বর মন্দিরের কাছে মালশিরা গ্রামে গাছ পুঁতবেন বলে আগেভাগেই ঠিক করে রেখেছিলেন নায়েক দম্পতি। মূলত পরিবেশের দিকেই নজর রেখেই বেনজির এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিলেন এই যুগল। বিভিন্ন ধরনের গাছ পোঁতা হয় এই অঞ্চলে। তালিকায় ছিল নিম থেকে আম, বাঁশ থেকে কলা, নারকেল, গুলমোহর, ডুমুর, তেঁতুল-সহ একাধিক প্রজাতির গাছ। পশুদের থেকে গাছগুলিকে রক্ষা করার জন্য লাঠি দিয়ে বেড়া দিয়ে দেন তাঁরা। সেখানেই ছোট্ট আলিশার জন্য কেক কাটা হয়।
আরও পড়ুন:
থ্রি ইডিয়টস্-এর কায়দায় অস্ত্রোপচারের চেষ্টা তিন নার্সের, মৃত্যু সদ্যোজাতর
তাজমহলই নেই যোগীর পর্যটন বুকলেটে!
কোথরাডে একটি অটোক্যাড সফ্টওয়্যার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট চালান রঞ্জিত নায়েক। আর রঞ্জিতের স্ত্রী নেহা একটি বেসরকারি সংস্থায় শিক্ষকতা করেন। মেয়ের নামকরণের এই নতুন ধরনের উদ্যোগে খুশি রঞ্জিত বলছেন, “পরিবেশ আমাদের যে পরিমাণ উপকার করে, তার কিছুটা অন্তত ফিরিয়ে দেওয়ার এটাই সেরা সময়। আগামী প্রজন্মের জন্য নতুন কিছু করার ইচ্ছা আমার বহু দিনের। পরিবেশকে সঙ্গে নিয়ে এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম যা পরবর্তীকালে অনেকে মেনে চলতে পারবে। পরিবার, বন্ধু-বান্ধবদের সে কথা জানাতে সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এক বন্ধু মালশিরা গ্রামের কথা জানায় আমাকে। ওঁরই সাড়ে তিন একর জমিতে আমরা এই গাছের চারাগুলো বসাই। ওখানে একটা পুকুর থাকায় জলের কোনও অসুবিধা হয়নি। তবে গাছ বসানোর চেয়েও গাছগুলোকে সযত্নে লালন পালন করাটাই আসল চ্যালেঞ্জ।”
রঞ্জিত এবং নেহার পরিবারের সকলেই হাত লাগিয়েছেন গাছ পুঁততে।
আর রঞ্জিতের স্ত্রী নেহা বলছেন, “মহিলারা আজও এই সমাজে উপেক্ষিত। সামাজিক ভারসাম্য বজায় রাখতে কন্যাশিশুদের বাঁচানোর জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্যের দিকেও নজর দেওয়া দরকার। আর তার শুরুটা নিজেদের বাড়ি থেকেই আমরা করলাম। আশা করি, পরবর্তীকালে আমাদের বাচ্চারও এই প্রথা মেনে চলবে। পরিবেশকে আরও সুন্দর ভাবে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy