Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সংগঠন বাড়েনি, চাপ ইয়েচুরিকে

বলা বাহুল্য, অভিযোগটি তুলেছে প্রকাশ কারাট শিবির। দিল্লিতে পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক-সাংগঠনিক খসড়া রিপোর্ট নিয়ে আজ থেকে আলোচনা শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০৩:০৬
Share: Save:

রাজনৈতিক লাইন নিয়ে বিতর্কে পলিটব্যুরো-কেন্দ্রীয় কমিটিতেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছিললেন তিনি। এ বার সংগঠন নিয়ে বিতর্কেও সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ফের কাঠগড়ায়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নির্বাচনী জোট নিয়ে মাথা ঘামাতে গিয়ে তিনি সংগঠনের দিকে নজর দেওয়ার সময় পাননি। ফলে ইয়েচুরি-জমানায় সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে।

বলা বাহুল্য, অভিযোগটি তুলেছে প্রকাশ কারাট শিবির। দিল্লিতে পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক-সাংগঠনিক খসড়া রিপোর্ট নিয়ে আজ থেকে আলোচনা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, রিপোর্ট অনুযায়ী, সিপিএমের সদস্যসংখ্যা গত তিন বছরে প্রায় ১০ হাজার কমে এখন ১০ লক্ষের মতো হয়েছে। কারাট শিবিরের এক নেতা বলেন, ‘‘তিন বছর আগে বিশাখাপত্তনম পার্টি

কংগ্রেসে কিন্তু সংগঠন মজুবত করাকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হয়েছিল। সেখানেই ইয়েচুরি সাধারণ সম্পাদক হন।’’

পলিটব্যুরো বৈঠকে কারাট শিবিরের যুক্তি, অ-বাম দলগুলির সঙ্গে, বিশেষ করে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হবে কি না, তা নিয়েই ইয়েচুরি জমানায় বিতর্ক বজায় থেকেছে। যার সূত্রপাত পশ্চিমবঙ্গে, ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে। সেখানে প্রথমে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়। হারের পরে সেই জোট ভুল ছিল বলে পার্টিই ঘোষণা করে। এতে এক দিকে বাম ভোটাররা বিভ্রান্ত হয়েছেন। অন্য দিকে সংগঠন মজবুত করার কাজেও নজর দেওয়া হয়নি। পুরনো ক্ষতে নুন ছিটিয়ে ত্রিপুরার রাজ্য কমিটি ভোটের ফলাফলের বিশ্লেষণ করে বলেছে, ত্রিপুরায় পার্টি হেরেছে ঠিকই। কিন্তু সেখানে পশ্চিমবঙ্গে মতো সাংগঠনিক বিপর্যয় ঘটেনি।

ইয়েচুরি শিবির পাল্টা যুক্তিতে মহারাষ্ট্রে কৃষক আন্দোলন থেকে শ্রমিক, দলিত বিভিন্ন সংগঠনকে একজোট করে আন্দোলনের সাফল্য দাবি করছে। তাঁদের দাবি, সব সংগঠনকে এক ছাতায় নিয়ে আসার কাজটা গত এক বছরেই হয়েছে। তা সে দিল্লিতে দলিত স্বাভিমান সংঘর্ষ র‌্যালিই হোক বা মহারাষ্ট্রে কৃষকসভার লং মার্চ। কারাট জমানায় এ সবের কোনওটাই হয়নি। আগামী ২৩ মে মোদী সরকারের ৪ বছর পূর্তির দিনেও বাম কৃষক, শ্রমিক, সামাজিক সংগঠনগুলির মঞ্চ ‘জন একতা, জন অধিকার আন্দোলন’ রাস্তায় নামবে। স্লোগান তুলবে ‘পোল খোল, হাল্লা বোল’।

এখান থেকেই ফের ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির সঙ্গে জোটের পক্ষে যুক্তি দিচ্ছে ইয়েচুরি-শিবির। তাঁদের মতে, যদি কৃষকসভার আন্দোলনে বাকি সব দলগুলির সমর্থন থাকতে পারে, তা হলে ভোটে সেই সমর্থন নিতে আপত্তি কোথায়। বিজেপিকে হারাতে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির জোটের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে উত্তরপ্রদেশে গোরক্ষপুর-ফুলপুর উপনির্বাচনের ফলেরও উদাহরণ দিচ্ছে ইয়েচুরি শিবির। সেখানে সপা-বসপা জোট বেঁধেই বিজেপিকে হারিয়েছে। কিন্তু কারাট শিবির এতেও সুর নরম করতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, সপা-বসপা-র জোটে কংগ্রেস গেলে এত ভাল ফল হত না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sitaram Yechuri CPM Prakash Karat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE