Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

৩টি আসন কেন! তিন মাসে কারণ খুঁজবে সিপিএম

লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের স্লোগান ছিল, ‘বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও’ এবং ‘তৃণমূল হটাও বাংলা বাঁচাও’।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৯ ০২:২১
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম তিনটি আসনে জয়ী হয়েছে। ওই ফলাফলের ময়নাতদন্তের জন্য তিন মাসের সময় ঠিক করল সিপিএম। ঘুরে দাঁড়াতে এ বার সীতারাম ইয়েচুরি-সূর্যকান্ত মিশ্রেরা ঝুলকালি ঝেড়ে সাড়ে তিন বছর আগের কলকাতা প্লেনামের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি বার করতে চলেছেন।

আজ শেষ হল সিপিএমের তিন দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। সেখানে লোকসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করা হয়। সিপিএম নেতারা মনে করছেন, সংগঠন চাঙ্গা করতে ২০১৫-র ডিসেম্বরে কলকাতা প্লেনামের অধিকাংশ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। বিভিন্ন সময় নির্বাচন থাকায় তাঁরা সংগঠনের দিকে নজরই দেননি। এ বার প্লেনামের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হবে। রাজ্য কমিটিগুলির কাছে নির্দেশ যাচ্ছে, কলকাতা প্লেনামে গৃহীত সিদ্ধান্ত কতখানি কার্যকর হয়েছে, তা তিন মাসের মধ্যে জানাতে হবে। সেই রিপোর্ট পেয়ে ভবিষ্যতের কর্মসূচি ঠিক করতে ফের আলোচনায় বসবে সিপিএম। তিন মাস পরে প্রয়োজনে ফের প্লেনাম বা বর্ধিত কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডাকা হতে পারে।

লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের স্লোগান ছিল, ‘বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও’ এবং ‘তৃণমূল হটাও বাংলা বাঁচাও’। সিপিএম নেতৃত্বের একাংশের মতে, ভোটের সময় দেখা যায়, বাংলায় তৃণমূলকে হটাতে বাম সমর্থকেরাও বিজেপিকেই বেছে নিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির একটা বড় অংশের যুক্তি, সংগঠন মজবুত না-হলে কোনও রাজনৈতিক রণকৌশলের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই আগে সংগঠন মজবুত করতে হবে। কলকাতা প্লেনামে ঠিক হয়েছিল, পার্টির সদস্যদের গুণগত মান বাড়াতে হবে। পার্টির সদস্যেরা যেন নিয়মিত গণসংগঠনে কাজ করেন, আন্দোলনে যুক্ত থাকেন সে দিকে নজর দিতে হবে। তরুণদের পার্টিতে আকৃষ্ট করতে হবে। দলের সর্বস্তরে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব ও গুরুত্ব বাড়াতে হবে। তিন বছরের মধ্যে পার্টিতে মহিলা সদস্যদের সংখ্যা ২৫ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে। করতে হবে জনস্বার্থবাহী আন্দোলন। পলিটবুরোর এক নেতা বলেন, ‘‘ভোট নিয়ে মাতামাতি করতে গিয়েই আমাদের সংগঠনে নজর দেওয়া হচ্ছে না। এখন ভোটের কথা ভুলে সংগঠন মজবুত করা দরকার।’’

কেরলের নেতাদের অভিযোগ, বাংলার জন্যই রাজনৈতিক লাইন বদল হয়। অথচ তাঁরাই বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়ায় ব্যর্থ। বাংলাকে সামনে রেখে এই প্রশ্নে ইয়েচুরিকেও নিশানা করেছেন তাঁরা। জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ফলে বার্তা যায়, অ-বিজেপি সরকার হলে বামেরা কংগ্রেসকে সমর্থন করবে। তাই কেরলের বিভ্রান্ত বাম ভোটাররা কংগ্রেসকেই ভোট দিয়েছেন। তাছাড়া রাহুল গাঁধী নিজে কেরলে গিয়ে ভোটে লড়ায় কংগ্রেসের ভোট বেড়েছে।

ইয়েচুরি অবশ্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাংলার পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, শুধু বাংলার জন্য রাজনৈতিক লাইন বদল হয়নি। কেরলে শবরীমালা নিয়ে বাম সরকারের অবস্থান এবং পিনারাই বিজয়ন সরকারের অন্যান্য সিদ্ধান্তের মূল্য দিতে হয়েছে। বাংলার নেতারা স্বীকার করেন, দলের দীর্ঘ দিনের সমর্থকেরা এ বার তৃণমূলকে শাস্তি দিতে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। রাজ্যের এক নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আক্ষেপের সুরে বলেছেন, ‘‘বাম সমর্থকেরা বুঝতে পারছেন না, বিজেপি ক্ষমতায় এলে সিপিএমের অবস্থা আরও করুণ হবে। কারণ বিজেপি মতাদর্শগত ভাবেই কমিউনিস্টদের শেষ করতে চায়।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE