ছবি: শাটারস্টক।
সাইবার জালিয়াতির কোপে এ বার ইতালীয় সংস্থা। মুম্বইয়ে তাদের একটি শাখা রয়েছে। সংস্থার কর্ণধার সেজে সেখান থেকে প্রায় ১৩১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল জালিয়াতরা। সংস্থার তরফে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কয়েক জন চিনা জালিয়াত এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ।
ইতালীয় ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা টেকনিমন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের (টিসিএমপিএল) শাখা রয়েছে মুম্বইয়ের মালাডে। গত ৫ জানুয়ারি তাদের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাতে বলা হয়, গত বছর নভেম্বরে ওই টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। সেই সময় ভারতে সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন মারিও রুজ়ো। ১৩ নভেম্বর ইতালি থেকে সংস্থার কর্ণধার পিয়েরোবার্তো ফোলজিয়েরো-র কাছ থেকে একটি ইমেল পান তিনি। কিছু গোপন বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে চান বলে জানান ফোলজিয়েরো।
গোপনীয়তা বজায় রাখতে রুজ়োকে একটি অন্য ইমেল আইডি-ও তৈরি করতে বলা হয়। নির্দেশ মেনে তেমনটাই করেন তিনি। সেখানে কথাবার্তা চলাকালীন তাঁকে জানানো হয়, সংস্থাটিকে আরও বড় করার চিন্তাভাবনা চলছে। একটি চিনা সংস্থার শেয়ার কেনা হবে। তার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা প্রয়োজন। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষের হিসাবনিকাশ দেখে ইতালির সদর দফতর থেকে ওই টাকা বের করা সম্ভব নয়। তাই ভারতীয় শাখার টাকা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০ দিনে ১ লক্ষ ৩০ হাজার অ্যাকাউন্ট ব্লক করল হোয়াটসঅ্যাপ
আরও পড়ুন: দ্রুত দিক বদলাচ্ছে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র, দিক নির্ণয়ে বিভ্রান্তি স্থলে-জলে-আকাশে
লুইজি কোরাদি নামের এক আইনজীবীর সঙ্গে ফোনেও কথা হয় রুজ়োর। যার পর চিনের তাইজু জেইজিয়াংয়ে অবস্থিত একটি সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া হয় তাঁকে। মালাডের অফিস থেকে অ্যাকাউন্ট্যান্টের সাহায্যে কয়েক দফায় তাতে প্রায় ১৩১ কোটি টাকা জমা দেন রুজ়ো।
২২ নভেম্বর আরও ২০ লক্ষ ৮০ হাজার ডলার জমা দিতে বলা হয় ওই অ্যাকাউন্টে। কিন্তু সংস্থার চেয়ারম্যান ভারতে এসে পড়ায় তা আর জমা পড়েনি। জালিয়াতি ধরে ফেলেন তিনি। কিন্তু তত ক্ষণে প্রায় ১৩১ কোটি টাকা হাপিস হয়ে গিয়েছে। তদন্তে নেমে জানা যায়, যে ইমেল থেকে টাকা পাঠানোর অনুরোধ এসেছিল, সেটি আসলে সংস্থার কর্ণধার পিয়েরোবার্তো ফোলজিয়েরো-র নয়। বরং হুবহু তাঁর মতো ইমেল আইডি বানিয়ে রুজ়োর সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছিল জালিয়াতরা। তিনি বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেননি। মালিক ভেবে অক্ষরে অক্ষরে যাবতীয় নির্দেশ মেনে নেন। সাইবার অপরাধের ভাষায় হুবহু একই দেখতে ইমেল আইডি তৈরির পদ্ধতিকে বলা হয় ‘ফিশিং।’ বহুকাল ধরে এই পদ্ধতিতেই মানুষকে বোকা বানিয়ে আসছে পেশাদার হ্যাকার এবং সাইবার জালিয়াতরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy