প্রতীকী ছবি।
চিতায় উঠেও শান্তি নেই!
এক দলিত মহিলার দেহ চিতার উপর থেকে নামিয়ে এনে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে ‘নিম্নবর্ণের জন্য নির্দিষ্ট’ জায়গায় গিয়ে দাহ করাতে বাধ্য করলেন স্থানীয় ঠাকুর সম্প্রদায়ের কয়েক জন। তাঁদের দাবি, যেখানে ওই মহিলাকে দাহ করার তোড়জোড় হচ্ছিল সেটি ব্যবহারের অধিকার নাকি শুধু ‘উচ্চ বর্ণের’ মানুষের। উত্তরপ্রদেশের এটাওয়া জেলার কাকরপুর গ্রামের ঘটনা।
মৃতার স্বামী রাহুল সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৯ জুলাই। জরায়ুতে সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর স্ত্রী নাগলা দাসের। এর পর বছর ২৬-এর ওই মহিলার দেহটি গ্রাম সভার শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় পরিবারের তরফে। মৃতার বছর চারেকের পুত্র যখন সবে মুখাগ্নি করতে যাবে, তখনই সেখানে এসে হাজির হন ঠাকুর সম্প্রদায়ের বেশ কয়েক জন ‘প্রতিনিধি’। দাবি করেন, এখানে নাগলার দেহের সৎকার করা যাবে না। নিম্নবর্ণদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গাতেই সেই কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। গ্রাম প্রধান এবং স্থানীয় নেতারা বিষয়টির সমাধান করতে এগিয়ে এলেও লাভ হয়নি বলে খবর। নিজেদের দাবি থেকে একচুলও সরতে রাজি হননি ঠাকুররা। শেষমেশ তাঁদের নির্দেশ মেনেই চিতা থেকে নামিয়ে আনা হয় নট সম্প্রদায়ের ওই মহিলার দেহটি। নিয়ে যাওয়া হয় সেখান থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে ‘নিম্নবর্ণদের জন্য নির্দিষ্ট’ শ্মশানে। সেখানেই সম্পন্ন হয় তাঁর শেষকৃত্য।
যদিও এই ঘটনাটির মধ্যে কোনও গলদই দেখছেন না ওই গ্রামের ঠাকুর সম্প্রদায়ের মানুষজন। উল্টে তাঁদের দাবি, ‘সব কিছুরই একটা নিয়ম আছে।’ তাঁদেরই একজন, চন্দন সিংহের কথায়, ‘‘প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা আলাদা শ্মশান রয়েছে। সকলকেই সেই নিয়ম মেনে চলতে হবে। আমরা আমাদের জায়গায় কাউকে প্রবেশাধিকার দেব না।’’ ওই সম্প্রদায়েরই অন্য এক জনের আবার যুক্তি, ‘‘নটেরা ভবঘুরে সম্প্রদায়। এখানে তাঁদের থাকার জায়গা দেওয়া হয়েছে। সেটাই কি যথেষ্ট নয়!’’
এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগই জমা পড়েনি বলে স্থানীয় থানা সূত্রে খবর। তবে সার্কেল অফিসার বি এস বীর কুমার জানান, বিষয়টি দু’পক্ষের মধ্যে ‘শান্তিপর্ণ ভাবে’ মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy