Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
National News

বীরভূম লাগোয়া পাথর খাদানে বিস্ফোরণ, মৃত ৫

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে এখনও পর্যন্ত পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিন জনকে ইতিমধ্যেই সনাক্ত করা গিয়েছে।

পাথর খাদানে মজুত ছিল প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক। —নিজস্ব চিত্র।

পাথর খাদানে মজুত ছিল প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৮ ১১:৫০
Share: Save:

মাটি খুঁড়ে লুকোনো বিস্ফোরক বার করার সময় ঘটে গেল বিপত্তি। মাটি কাটার যন্ত্রে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন ধরে গেল বিস্ফোরকে। তাতেই পর পর বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল বীরভূম লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের একাধিক পাথরখাদান।

পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণ মারা গিয়েছেন পাঁচ জন। গুরুতর জখম দুই। বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে শিকারিপাড়া এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই ঘটনায় খাদান ম্যানেজার-সহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের পাল্টা দাবি, মৃতের সংখ্যা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে এখনও পর্যন্ত পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিন জনকে ইতিমধ্যেই সনাক্ত করা গিয়েছে। তাঁরা হলেন, বিমল ভাণ্ডারী (৪৫), লাদেন শেখ (১৮) এবং রাকেশ রাই (১৮)। মহম্মদবাজার থানার মাঠ মহুলার বাসিন্দা বিমল ওই খাদানের ম্যানেজার ছিলেন। লাদেন ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থানা এলাকার গোঁদাইপুরের বাসিন্দা। রাকেশের বাড়ি মহম্মদবাজারের চাঁদায়। দু’জনই খাদানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার রাতে শিকারিপাড়া এলাকার একটি পাথর খাদানে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটে। শিকারিপাড়া থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত গ্রাম কুলকুলি। সেখানকার লিপিপাড়ায় রয়েছে ওই খাদান।

দেখুন ভিডিয়ো

বিস্ফোরণের পর অনেকটা সময় কেটে গেলেও পুলিশ রাতে গিয়ে পৌঁছতে পারেনি। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই খাদানটি ১৯৯৪ সালের। শিকারিপাড়া থানার ওসি মনোজ ঠাকুর জানিয়েছেন, প্রথম দিকে খাদানের বৈধ ছাড়পত্র থাকলেও বছর দেড়েক হল খনি মন্ত্রকের কাছ থেকে তার নবীকরণ করা হয়নি। মনোজ ঠাকুর আরও জানিয়েছেন, ওই খাদানে প্রায় চার ফুট গভীরে প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখা ছিল। গত রাতে তা মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে খুঁড়ে বার করার সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে।

বিস্ফোরণে ছিটকে পড়ে একাধিক শ্রমিকের দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বীরভূমের মহম্মদবাজার লাগোয়া ওই পাথর খাদানে মাটি কাটার যন্ত্রে শর্ট সার্কিট থেকেই ওই বিস্ফোরণ ঘটে। এমনিতে পাথর খাদানে ডিটোনেটর এবং জিলেটিন স্টিক দিয়ে নিয়ন্ত্রিত ভাবে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সে কারণে ওই পাথর খাদানে প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত ছিল। শর্ট সার্কিটের ফলে ওই বিস্ফোরকে আগুন লেগে যায়। পর পর বিস্ফোরণ হতে থাকে। শুধুমাত্র ওই পাথর খাদানটিই নয়। আশপাশের খাদানেও বিস্ফোরক ছিটকে পড়ে। তাতে আহত হন একাধিক খাদান শ্রমিক।

আরও পড়ুন: ১০ হাজার ভুয়ো ভোটার কার্ড আটক
আরও পড়ুন: গাঁ থেকে গুগলে, বেতন কোটিতে

তদন্তে নেমেছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় প্রশ্নচিহ্নের মুখে খাদান শ্রমিকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Death Stone Mine Blast Jharkhand
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE