Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রিয়াং শিবিরে মৃত্যু কি অনাহারেই?

দু’দশক আগে মিজোরাম থেকে জাতি সংঘর্ষে উৎখাত হয়ে ত্রিপুরায় আশ্রয় নেয় ব্রু বা রিয়াং জনজাতির হাজার হাজার মানুষ।

রেশনের দাবিতে বিক্ষোভ। রবিবার। ছবি: পিটিআই।

রেশনের দাবিতে বিক্ষোভ। রবিবার। ছবি: পিটিআই।

বাপি রায়চৌধুরী
আগরতলা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২৩
Share: Save:

গত এক সপ্তাহে ত্রিপুরার নাইসিং পাড়ার রিয়াং শরণার্থী শিবিরে দু’টি শিশু ও দুই বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনাহার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

দু’দশক আগে মিজোরাম থেকে জাতি সংঘর্ষে উৎখাত হয়ে ত্রিপুরায় আশ্রয় নেয় ব্রু বা রিয়াং জনজাতির হাজার হাজার মানুষ। গত দু’দশক উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুর মহকুমার ছ’ টি শরণার্থী শিবির ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ। সেই তাঁদেরই মিজোরামে ফেরাতে দফায় দফায় উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শরণার্থী নেতারা তা বানচাল করে দেয়। কয়েক মাস আগে ফের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, মিজোরাম ও ত্রিপুরা সরকারের প্রতিনিধিরা শরণার্থী সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। ঠিক হয়, অক্টোবরে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথম দিকে কয়েকটি দল ফেরত যাওয়ার পর ফের তা আটকে যায়।

এ দিকে কেন্দ্রও এ বার অনমনীয় মনোভাব নিয়েছে। অক্টোবর থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শরণার্থীদের রেশন ও ভাতা। ফলে সঙ্কটে পড়েছেন প্রচুর মানুষ। বিভিন্ন মহলে দরবার করেও কোনও ফল না হওয়ায় পথ অবরোধ শুরু করেছেন তাঁরা। আজ চার দিন চলছে অবরোধ। সকাল পাঁচটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অবরোধে আটকে পড়েছে পারিপার্শ্বিক জনজীবন। তার মধ্যেই উঠেছে এই অনাহার মৃত্যুর অভিযোগ।

আরও পড়ুন: দূষণে জেরবার দিল্লি ছেড়ে পালাতে চাইছেন ৪০ শতাংশ নাগরিক, বলছে সমীক্ষা

‘মিজোরাম ব্রু ডিসপ্লেসড পিপলস্ ফোরাম’-এর নেতারা বলেছেন অনাহারই তাদের মৃত্যুর কারণ। পাশাপাশি, যথারীতি প্রশাসনের তরফে তা অস্বীকার করা হয়েছে। এসডিএম অভেদানন্দ বৈদ্য জানিয়েছেন, অজানা রোগই মৃত্যুর কারণ। ফোরামের নেতাদের বক্তব্য, গত এক মাস ধরে শিবিরে রেশন দেওয়া হচ্ছে না। বন্ধ ভাতাও। ফলে শিবিরের হাজার হাজার মানুষ অনাহার, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। সব থেকে সমস্যায় পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা।

কাল সরকারের জোট শরিক আইপিএফটি-র বিধায়ক প্রেমকুমার রিয়াং অবরোধ স্থলে গিয়ে জানান, পুনরায় রেশন চালু না হলে তিনি বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। কোনও বিজেপি নেতার অবশ্য দেখা নেই। সিপিএমেরও সহায়তা তাঁরা পাচ্ছেন না বলে ফোরামের অভিযোগ। পরিস্থিতির তাগিদে খাদ্য গুদাম লুট করার হুমকিও শরণার্থী নেতারা দিয়েছেন। তেমন কিছু হলে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে তড়িঘড়ি গুদামের চারদিকে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Reang Refugees Reang Refugees Tripura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE