Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

৩৭৭ ধারা নিয়ে ভাবছে সেনাও

সুপ্রিম কোর্ট সমকামিতাকে অপরাধ-মুক্ত করার পরে এ বার সামরিক বাহিনীর আইনেও বদল দরকার কি না, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০০
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্ট সমকামিতাকে অপরাধ-মুক্ত করার পরে এ বার সামরিক বাহিনীর আইনেও বদল দরকার কি না, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা।

সেনা, বায়ুসেনা ও নৌসেনা— তিন সামরিক বাহিনীরই ফৌজিদের জন্য নিজস্ব আইন রয়েছে। এবং তিন আইনেই সরাসরি না-হলেও, পরোক্ষ ভাবে সমকামিতার মতো বিষয়কে নৈতিক অধঃপতনের শ্রেণিতে ফেলে তার শাস্তির নিদান রয়েছে। সেখানেই সমস্যা রয়েছে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা। কারণ, ৩৭৭ ধারাকে খারিজ করার সময়ে সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে স্পষ্ট বলে দিয়েছে, সমকামিতার সঙ্গে নৈতিক মূল্যবোধের কোনও সম্পর্ক নেই। এটি কোনও ব্যক্তির নিজস্ব যৌন রুচির বিষয়। তার সঙ্গে নৈতিক ধ্যানধারণার কোনও সম্পর্ক নেই। আরও মুশকিল হল, তিন সামরিক বাহিনীর আইনই স্বাধীনতার পরে তৈরি। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার মতো তা ব্রিটিশ জমানায় তৈরি নয়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের মতে, ১৯৫০-র ওই সামরিক আইনে বলা হয়েছে, কোনও জওয়ান ‘অশালীন ও প্রকৃতি-বিরুদ্ধ আচরণে’ জড়ালে, তাঁর বিরুদ্ধে কোর্ট-মার্শাল হবে। ৭ বছর জেলে কাটাতে হতে পারে। একই কথা বলা হয়েছে বায়ুসেনার ১৯৫০-র আইনেও। ১৯৫৭-র নৌসেনার আইনেও বলা হয়েছে, অশালীন আচরণ করলে কোনও জওয়ানের দু’বছর জেল হতে পারে।

আইনজীবীদের একাংশের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে সামরিক বাহিনীতেও সমকামিতাকে প্রকৃতি-বিরুদ্ধ বলে তাকে অপরাধের শ্রেণিতে ফেলা মুশকিল। তবে সামরিক বাহিনীর পক্ষে মানানসই নয়, এমন কোনও অশালীন আচরণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে বাধা থাকবে না।

আর একটি অংশের যুক্তি হল, সুপ্রিম কোর্টের রায় পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে সমকামিতাকে নাগরিকদের ব্যক্তিগত অধিকার বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু সংবিধানেই বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের ক্ষেত্রে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারে রাশ টানা যেতে পারে। শৃঙ্খলা-রক্ষা ও সেনার কাজ পরিচালনার স্বার্থেই সংবিধানের ৩৩ নং অনুচ্ছেদে এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে সমকামিতা আর অপরাধ না-হলেও জওয়ানদের জন্য তাতে রাশ টানা যেতে পারে বলে তাঁদের মত। এই পরিস্থিতিতে সামরিক আইনে সংশোধন প্রয়োজন কি না, তা দেখতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা সামরিক আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবেন। তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Article 377 Defence Act Ministry Of Defence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE