ছবি: এএফপি।
সমুদ্র-নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে মার্কিন সাহায্যের হাত দরাজ হবে। বিনিময়ে আমেরিকা থেকে বাড়াতে হবে তেল এবং অস্ত্র আমদানি। আজ সিঙ্গাপুরে ভারত এবং আমেরিকার শীর্ষ স্তরের বৈঠকটিকে এক কথায় এ ভাবেই ব্যাখ্যা করছেন কূটনীতিকেরা।
ইরান থেকে তেল আমদানি এবং রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনার প্রশ্নে আমেরিকা তার নিষেধাজ্ঞা থেকে আপাতত ছাড় দিয়েছে ভারতকে। কিন্তু সেই ছাড় যে ‘বিনামূল্যে’ দেওয়া হয়নি এবং ছাড়ের মেয়াদও যে স্বল্পমেয়াদি— তা আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্য এবং কৌশলগত ক্ষেত্রে চিনের আধিপত্যকে খর্ব করার বিষয়টি নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটনের যৌথ স্বার্থের মধ্যে পড়ে। আজকের বৈঠকে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কথা হয়েছে দুই নেতার মধ্যে। বৈঠকের পর তা জানিয়েছেন বিদেশসচিব বিজয় গোখলে। কিন্তু তার সঙ্গে এ কথাও গোখলে বলেছেন, ‘‘শক্তি ক্ষেত্র নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ভারত-আমেরিকার সম্পর্কে এ’টি একটি নতুন ক্ষেত্র। চলতি বছরে আমরা আমেরিকা থেকে ৪০০ কোটি ডলারের তেল এবং গ্যাস আমদানি করেছি। সে দেশে থেকে আরও বেশি তেল আমদানি করার জন্য যে আমরা প্রস্তুত, সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রটির উল্লেখ করে ভারতীয় কর্তা জানিয়েছেন, ‘‘দু’দেশই একমত যে আমেরিকা থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি ক্রমশ বাড়িয়েছে ভারত। প্রতিরক্ষা সম্পর্ক চোখে পড়ার মত উন্নতি হয়েছে। যৌথ উদ্যোগে ভারতে অস্ত্র সরঞ্জামের উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তুলতে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেটা শুধু এই কারণেই নয় যে আমাদের বাজার বিশাল। আঞ্চলিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানও রয়েছে ভারতের। আর তাই গোটা অঞ্চলে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানির প্রশ্নে ভারত একটি উল্লেখযোগ্য ঘাঁটি হয়ে উঠতে পারে।’’
কূটনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে, ভারতের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে দ্রুত ইরান থেকে তেল রফতানি বন্ধ করতে আবার চাপ তৈরি করেছে ট্রাম্প সরকার। এর ফলে ভারতের শক্তি ক্ষেত্রে যে বিশাল চাহিদা তৈরি হবে, তা অজানা নয় হোয়াইট হাউসের। সেই সুযোগে নিজেদের সরবরাহ বাড়াতে চায় আমেরিকা।
আজ সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি নিয়েও মোদী-পেন্স কথা বলেছেন। মুম্বই হামলার দশ বছর পূর্তি হতে চলেছে। বৈঠকে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন পেন্স। সন্ত্রাস-প্রশ্নে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে কথা হয়েছে। একই সঙ্গে এইচওয়ানবি ভিসার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে তুলেছেন মোদী। গোখলের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আজ মার্কিন নেতৃত্বকে জানিয়েছেন যে আমেরিকায় যে সব ভারতীয় পেশাদার এবং ছাত্রছাত্রীরা যাচ্ছেন, তাঁরা যে শুধুমাত্র নিজেদের দক্ষতা, প্রতিভা এবং উদ্ভাবনী শক্তি নিয়েই যাচ্ছেন— বিষয়টি শুধু এমন নয়। গণতন্ত্রের মূল্যবোধটুকুও নিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী এই মর্মে আশা প্রকাশ করেন যে এইচওয়ান বি ভিসা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে মার্কিন নেতৃত্ব এ বিষয়টিও নজরে রাখবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy