Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

একে অন্যের ঘাঁটি ব্যবহার করবে দিল্লি-টোকিয়ো

একে অন্য দেশের সামরিক ঘাঁটিতে নিজেজের কৌশলগত ক্রিয়াকলাপ চালানোর অনুমতি পাবে। সেখানে গিয়ে যৌথ আদানপ্রদান এবং নিজস্ব কর্মসূচিও বাস্তাবয়িত করতে পারবে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৮ ০১:২৫
Share: Save:

একে অপরের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করার পথে এগোচ্ছে ভারত এবং জাপান। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই ভারত এবং জাপানের সেনা একে অন্য দেশের সামরিক ঘাঁটিতে নিজেজের কৌশলগত ক্রিয়াকলাপ চালানোর অনুমতি পাবে। সেখানে গিয়ে যৌথ আদানপ্রদান এবং নিজস্ব কর্মসূচিও বাস্তাবয়িত করতে পারবে।

অক্টোবরের ২৮ এবং ২৯ তারিখ টোকিওতে ভারত-জাপান ত্রয়োদশ শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানকার বৈঠকে এই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্তটি গৃহীত হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। মোদী এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বৈঠকের পরে এই বিষয়টি নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি করার পথে হাঁটবে দুটি দেশ।

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্যের মোকাবিলা করার জন্য এযাবৎ কাল যে সব পদক্ষেপগুলি করেছে ভারত, এটি তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হতে চলেছে। এই চুক্তির ফলে ভারত এবং জাপানের বায়ু, স্থল এবং জল — এই তিন সামরিক ক্ষেত্রেই পারস্পরিক সহযোগিতার কাজ অনেকটাই মসৃণ হয়ে যাবে। চিনের কৌশলগত পদক্ষেপগুলির উপর সরাসরি নজর রাখার বিষয়টিও অপেক্ষাকৃত সহজ হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এই চুক্তির বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক কথা শুরু হয় অগস্ট মাসে। নয়াদিল্লিতে জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইতসুনারি ওনোদেরা-র সফরকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে বৈঠকে স্থির হয়, চিনকে রুখতে এই ধরনের একটি মাইলফলক চুক্তি করা প্রয়োজন। এর পর কথা হয় দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মধ্যে। সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত-জাপান এই চুক্তির মাধ্যমে এক দেশ অন্য দেশকে শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ বা সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করার অনুমতি দেবে না, একে অন্যের যাবতীয় সহায়তা (প্রয়োজনে খাদ্য, তেল, পেট্রেলিয়াম, পোষাক সরবরাহ, বিমানবন্দর অথবা সমুদ্রপোত রক্ষণাবেক্ষণ, খারাপ হয়ে যাওয়া যন্ত্রাংশ মেরামত করা) করবে। ভারত মহাসাগরের পশ্চিমে জাপানের একমাত্র সামরিক ঘাঁটি জিবুতি-র ব্যবহারের অধিকার পাবে ভারত। আমেরিকা এবং জাপান ছাড়়াও চিনও জিবুতিতে সামরিক ঘাঁটি বানিয়ে রেখেছে। সংলগ্ন সমুদ্রপথে নজরদারির জন্য এই দ্বীপরাষ্ট্রটির অবস্থানগত গুরুত্ব অপরিসীম।

ভারত এবং জাপানের এই উদ্যোগ নিয়ে চিন কী ভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, এখন সে দিকে নজর রাখছে সাউথ ব্লক। এমনিতেই এই অক্ষ নিয়ে কিছুটা চাপে বেজিং। ভারত মহাসাগরে চিনের প্রবেশপথে পাহারা বসিয়ে আর চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমে ভিয়েতনাম, দক্ষিণে সিঙ্গাপুর, আরও দক্ষিণে অস্ট্রেলিয়া এবং পূর্বে জাপানের সঙ্গে সামরিক জোট গড়ে চিনের জলসীমাকে ধীরে ধীরে সব দিক থেকে ঘিরে ফেলার একটা চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই শুরু করেছে নয়াদিল্লি। এখন ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর আর চিন সাগরে মহড়া চলছে। বেজিং এই সব সামরিক অক্ষ নিয়ে মাঝেমধ্যে চড়া বিবৃতি দিচ্ছে ঠিকই। তবে পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা করছে না বেজিং।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Tokyo Japan Military
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE