Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
National News

ট্রাম্পের সফরে অস্থিরতা তৈরির ছক, দিল্লির সংঘর্ষে মত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের

কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের নিশানা করে কিষেন রেড্ডির তোপ, ‘‘দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য কারা দায়ী তা আপনাদের বলতে হবে।’’

সংঘর্ষে উত্তাল উত্তর-পূর্ব দিল্লি (ইনসেটে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষেন রেড্ডি)। —ছবি পিটিআই

সংঘর্ষে উত্তাল উত্তর-পূর্ব দিল্লি (ইনসেটে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষেন রেড্ডি)। —ছবি পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২১:১৩
Share: Save:

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করতে পরিকল্পিত ভাবে গন্ডগোল করা হয়েছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী এবং সমর্থনকারীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনাকে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

ঘটনার তীব্র নিন্দার পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষেন রেড্ডি। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের নিশানা করে কিষেন রেড্ডির তোপ, ‘‘দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য কারা দায়ী তা আপনাদের বলতে হবে।’’ অন্য দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সচিব অজয় কুমার ভাল্লা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

শনিবার রাত থেকে শাহিন বাগের ধাঁচে দিল্লির জাফরাবাদে সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদে শামিল হন কয়েকশো মহিলা। তার পর থেকেই জাফরাবাদ-সহ সংলগ্ন এলাকাগুলিতে চাঞ্চল্য ছড়ায়। রবিবার স্থানীয় এক বিজেপি নেতার মিছিল ঘিরে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সোমবার ফের বিজেপির মিছিল ঘিরে উত্তেজনা, সংঘর্ষ, ইটবৃষ্টি, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে এক পুলিশ অফিসারের মৃত্যু হয়। অন্য দিকে, এক জন সাধারণ নাগরিকও মারা গিয়েছেন। তার পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়ে যায় খণ্ডযুদ্ধ। পরে আরও অতিরিক্ত পুলিশ এবং সিআরপিএফ পাঠিয়ে সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।

আরও পড়ুন: সিএএ বিরোধী ও সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহত পুলিশকর্মী-সহ ২, আগুন-ইটবৃষ্টি

সোমবারই দু’দিনের সফরে সপরিবার ভারতে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ দিন প্রথমে গুজরাতের সাবরমতি আশ্রম পরিদর্শন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর পর গুজরাতের মোতেরা স্টেডিয়ামে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানে ভাষণের পর আগরায় তাজমহল পরিদর্শন করেন তাঁরা। আগামিকাল দিল্লিতে একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। এমন পরিস্থিতিতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিরোধীরা চক্রান্ত করেই দিল্লিতে গন্ডগোল করেছে বলে অভিযোগ কিষেণ রেড্ডির।

দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। সেই মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কিষেণ রেড্ডি এ দিন সংবাদ সংস্থা এনআই-কে বলেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভারত সফরের কথা মাথায় রেখেই উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সংঘর্ষের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা করছি। ভারত সরকার এই অস্থিরতা কখনও বরদাস্ত করবে না। এর জন্য যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক পুরো ঘটনার উপর নজর রেখেছে।’’

আরও পডু়ন: ২৪টি নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার কিনছে ভারত, প্রতিরক্ষা চুক্তি কাল, ঘোষণা ট্রাম্পের

বিরোধীদের নিশানা করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, রাহুল গাঁধী, কংগ্রেস এবং যাঁরা সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদকে সমর্থন করছেন, তাঁদের বলতে হবে, দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য কারা দায়ী।’’ তিনি জানান, পুলিশকর্মীকে হত্যা, পাথর ছোড়া, আগুন লাগানোর ঘটনায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে। আমাদের প্রধান দায়িত্ব হল দিল্লিতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় কুমার ভাল্লা বলেন, ‘‘পদস্থ পুলিশকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। পর্যাপ্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’ দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, মোট আট কোম্পানি সিআরপিএফ জওয়ান উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের দুই কোম্পানি জওয়ান। প্রতিবাদীদের মধ্যে অনেকেই মহিলা। তাই মহিলা নিরাপত্তা কর্মীদেরও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দিল্লি মেট্রো রেলের তরফে জানানো হয়েছে, উদ্যোগ ভবন, পটেল চক, সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট স্টেশনে ঢোকা এবং বেরনো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi CAA Delhi Violence G Kishan Reddy MHA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE