Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
বেঁচে থাকা সহজ করাই লক্ষ্য

নোটবন্দিতে উন্নত জীবন, দাবি মোদীর

মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’-এর সঙ্গে ‘ইজ অব লিভিং’-এর উপরেই জোর দিচ্ছে তাঁর সরকার। এটাই আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত। আর সেই প্রচারকেই নিয়ে যেতে হবে দেশের কোণে কোণে।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৭
Share: Save:

নোটবন্দির পর হন্যে হয়ে লাইনে দাঁড়ানো। ছোট-মাঝারি শিল্পে ধাক্কা। আঁচ গ্রামীণ অর্থনীতিতেও। সামাল দিতে পারেনি অর্থনীতি, বৃদ্ধির হারও।

তবু এই নোটবন্দিই নাকি মানুষের জীবনের মান বাড়িয়েছে।

‘ইজ অব লিভিং’ বা জীবনের মান সহজ করার জন্য মন্ত্রীদের যে প্রচারসামগ্রী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তাতে অন্তত এমনই দাবি করা হয়েছে। সম্প্রতি মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। শুধুমাত্র এটাই বোঝানোর জন্য যে, তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে কী করে মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিলেন ‘অচ্ছে দিন’ আনবেন। বিরোধীদের আক্রমণ এড়াতে এখন আর ওই স্পর্শকাতর শব্দবন্ধ নিয়ে উচ্চবাচ্য করছেন না। মূল ভাবনাটি একই রেখে এখন তিনি অন্য শব্দবন্ধে ভরসা রাখছেন। মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’-এর সঙ্গে ‘ইজ অব লিভিং’-এর উপরেই জোর দিচ্ছে তাঁর সরকার। এটাই আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত। আর সেই প্রচারকেই নিয়ে যেতে হবে দেশের কোণে কোণে।

মন্ত্রীদের হাতে যে প্রচারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে, তাতে নোটবন্দির পরে মানুষের জীবনের মান কী ভাবে বেড়েছে তার সবিস্তার খতিয়ানও দেওয়া হয়েছে। যেমন, নোটবন্দির ফলে আবাসনের দাম কমেছে। ফলে তা সাধারণ মানুষের নাগালে চলে এসেছে। এর পাশাপাশি সুদের হারও কমেছে। যার ফলে ইএমআই-এর বোঝাও লাঘব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে ঘর কেনার স্বপ্ন আর এখন অধরা নয়। আইনের মাধ্যমে গ্রাহকদের অধিকারও সুনিশ্চিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: তেলে শুল্ক কমানোর ভাবনা শুরু

মূল্যবৃদ্ধি কমায় বেড়েছে সঞ্চয়ও। গাড়ি-বাড়ি-শিক্ষা ঋণের সুদ কমেছে। স্টেন্টের দাম, হাঁটু প্রতিস্থাপনের খরচ কমায় ও আড়াই হাজারের বেশি ‘জন ওষধি কেন্দ্র’-এ সস্তায় ওষুধ বিলির মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও সুরাহা এসেছে। আগের থেকে আয়কর ফাইল করাও সহজ হয়েছে। ৯৭% রিটার্ন ফাইল এখন অনলাইনে হয়, ২০১৬-১৭ সালে ৯২% রিফান্ডও ৬০ দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়া হয়েছে। চার দিনে চলে আসছে নতুন রান্নার গ্যাস। পাসপোর্টও পাওয়া যাচ্ছে দ্রুত। আধারের সঙ্গে যোগ করে ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট পাওয়ার সুবাদে আর পেনশনভোগীদের দৌড়তে হচ্ছে না। চাকরি বদলালেও ইপিএফ অ্যাকাউন্ট বদলাতে হচ্ছে না। সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ডিজিটাল দুনিয়ায় এক ছাতের তলায় চলে এসেছে।

বিরোধীরা বলছে, সদ্য আজই দাভোসে বক্তৃতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার এক দিন আগে বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনের সমীক্ষাই বলছে, উন্নয়ন সকলের কাছে পৌঁছনোর নিরিখে ভারত পিছিয়ে সব প্রতিবেশী দেশের থেকেই। নোটবন্দির ফলে মানুষের হেনস্থা থেকে অর্থনীতিতে বড়সড় ধাক্কার কথা সকলেই জানেন। ধরা পড়ে গিয়েছে, তাঁর ‘অচ্ছে দিন’-এর প্রতিশ্রুতি কতটা ফাঁপা। তা সত্ত্বেও লোকসভা ভোটের আগে জনমনে স্বস্তির হাওয়া জাগাতে চান প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আসলে এক জন বিপণন বিশেষজ্ঞ। বাস্তবের ছবিটি যতই শোচনীয় হোক না কেন, বারবার মিথ্যা প্রচার করে উল্টো ছবির ঢাক পেটানোর বিশারদ তিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE