Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
এইএস-এ শিশুমৃত্যুর মোকাবিলায়

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে জোট বাঁধার পরিকল্পনা

দু’বছর আগে গোরক্ষপুরে শিশু মৃত্যু রুখতে হু-এর সঙ্গে হাত মেলায় যোগী-সরকার। এবং তাতে সাফল্য মিলেছে। গত বছর ওই রাজ্যে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৬৬ শতাংশ।

অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে (এইএস) মৃত শিশুকে জড়িয়ে মায়ের কান্না। বুধবার মুজফ্ফরপুরের এক হাসপাতালে। ছবি: এএফপি

অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে (এইএস) মৃত শিশুকে জড়িয়ে মায়ের কান্না। বুধবার মুজফ্ফরপুরের এক হাসপাতালে। ছবি: এএফপি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০০:৫৯
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের পরে বিহারের মুজফ্‌ফরপুর। আজ পর্যন্ত মুজফ্ফরপুর ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে অ্যাকিউট এনসেলেফাইটিস সিনড্রোম (এইএস)-এ ১৪৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ভারতে এই রোগ কার্যত মহামারির চেহারা নেওয়ায় উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। ভবিষ্যতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটি সার্বিক পরিকল্পনা তৈরি করতে চাইছে হু।

দু’বছর আগে গোরক্ষপুরে শিশু মৃত্যু রুখতে হু-এর সঙ্গে হাত মেলায় যোগী-সরকার। এবং তাতে সাফল্য মিলেছে। গত বছর ওই রাজ্যে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৬৬ শতাংশ। আক্রান্ত দুই এলাকার ভৌগোলিক পরিবেশ এক হওয়ায় বিহারেও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে জোট বেঁধে এগানোর পক্ষপাতী হু। মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তৈরি হয়েছে একটি স্থায়ী কমিটি। সেখানে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা ছাড়াও থাকবেন বিজ্ঞান এবং নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা।

বিহারের আক্রান্ত জেলাগুলির শিশু স্বাস্থ্যের ছবিটি বেশ উদ্বেগজনক বলে স্বীকার করেছে কেন্দ্র। পরিসংখ্যান বলছে, ছবিটি আফ্রিকার পিছিয়ে থাকা দেশগুলির থেকেও খারাপ। কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা (৪)-এর তথ্য অনুযায়ী মুজফ্‌ফরপুর জেলার পাঁচ বছরের নিচে থাকা ৪৮ শতাংশ শিশু বয়সের তুলনায় উচ্চতায় খাটো। সেখানে আফ্রিকার গড় ৩১ শতাংশ। ওই মহাদেশের অন্তত ৪৩টি দেশের পরিস্থিতি মুজফ্‌ফরপুর জেলার থেকে ভাল। যুদ্ধ কবলিত ঘানা, দক্ষিণ সুদান, সিয়েরা লিওনে-ওই পরিসংখ্যান যথাক্রমে ১৮.৮ %, ৩১.১% ও ২৮.৮%। মুজফ্‌ফরপুরের ১৭.৫ % শিশু উচ্চতার তুলনায় রোগা। সেখানে আফ্রিকার গড় পরিসংখ্যান হল ৬.৩ %। মন্ত্রক সমীক্ষায় দেখেছে, এর অন্যতম কারণ হল অপুষ্টি। ওই এলাকার প্রায় ৪২ % শিশুই অপুষ্টির শিকার।

বিহারে শিশু মৃত্যুর কারণ নিয়েও রয়েছে ভিন্ন মত। ভারতের অন্যতম লিচু উৎপাদনকারী এলাকা হল মুজফ্‌ফরপুর ও সংলগ্ন জেলাগুলি। যে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে শিশুদের একাংশ। এক পক্ষের বক্তব্য, অনেক সময়ে খালি পেটে লিচু খাওয়ার কারণে হাইপোগ্লাসিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে মৃত্যু ঘটছে। ল্যানসেটের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাতে খালি পেটে থাকা এবং সকালে উঠে লিচু খাওয়ার ফলে লিচুর বীজে থাকা রাসায়নিক রক্তের সংস্পর্শে আসে। ফলে রক্তে শকর্রার মাত্রা দ্রুত নেমে যায়। অন্য পক্ষের বক্তব্য, যদি লিচুই একমাত্র কারণ হতো তাহলে লিচু উৎপাদনকারী সব এলাকায় ওই সমস্যা দেখা যেত। ওই শিবিরের মতে, ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা ও বাতাসে আর্দ্রতা ৬৫-৭০ শতাংশে পৌঁছে গেলেই ওই রোগ দ্রুত ছড়াতে শুরু করে। সব মিলিয়ে মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও ধন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Encephalitis WHO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE