Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঘোষণার পর দিনই বাতিল পাক বৈঠক

প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কাল বৈঠকের কথা ঘোষণা করার ভিত্তি কী ছিল?

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:১৮
Share: Save:

চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ডিগবাজি!

কাল বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে পাকিস্তানের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ঘোষণা করে আজই তা বাতিল করে দিল বিদেশ মন্ত্রক। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানিদের হাতে ভারতীয় জওয়ানের নির্মম হত্যা ও জঙ্গিদের মহিমামণ্ডিত করে সে দেশের কুড়িটি ডাকটিকিট প্রকাশের ঘটনায় প্রমাণ, পাকিস্তান শোধরাবে না। এই পরিবেশে বৈঠক অর্থহীন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিউ ইয়র্কে ভারত-পাক বিদেশ মন্ত্রক পর্যায়ের বৈঠকটি হচ্ছে না।’ পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির প্রতিক্রিয়া, ‘‘অভ্যন্তরীণ চাপে নয়াদিল্লি এ রকম করল। এই সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’

প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কাল বৈঠকের কথা ঘোষণা করার ভিত্তি কী ছিল?

কালও দু’টি বিষয় নিয়ে বার বার প্রশ্ন করা হয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রকে। প্রথমত, জম্মু সীমান্তে ভারতীয় জওয়ানকে গলা কেটে হত্যা করার মতো মারাত্মক ঘটনার পরেও কী ভাবে ইমরান খানের অনুরোধে আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি হল ভারত? দ্বিতীয়ত ভারত যখন সামগ্রিক আলোচনা করতে চাইছে না বা পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে সার্ক-এর মতো বহুপাক্ষিক মঞ্চকে বয়কট করছে, তখন খাপছাড়া ভাবে পাক বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে কী লাভ হবে, যার আগে-পরে কিছু থাকছে না? বরং আলোচনার পরে পাকিস্তান নিজেদের শর্তে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে।

এই প্রশ্নগুলির কোনও সদুত্তর মেলেনি বিদেশ মন্ত্রকের কাছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তটি নেওয়ার পর সরকার যে অস্বস্তিতে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কংগ্রেস তীব্র সমালোচনা শুরু করে। পি চিদম্বরম টুইট করে বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে সরকার এক এক দিন এক এক রকম কথা বলছে। বোঝা যাচ্ছে বিদেশনীতি কী ভাবে চলছে!’

রাজনৈতিক সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে মোদী সরকারের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে আরএসএসও। আজ ভোরেই কাশ্মীরের শোপিয়ানে পাক অনুগত জঙ্গিগোষ্ঠী ৩ জন পুলিশকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। সব মিলিয়ে দুপুরে সরকার জরুরি বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেয়, দেরি না-করে বাতিল করে দেওয়া হোক বৈঠক। নয়তো ভুল বার্তা যাবে।

সামনেই ৪ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। লোকসভা নির্বাচনও কড়া নাড়ছে। এই সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে

ভালবাসা দেখানোর ফল যে ভাল হবে

না, তা স্পষ্ট। দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক হলে তার ওপর প্রচারমাধ্যমের আলো পড়বে। মোদী সরকার সে বৈঠক থেকে এমন কিছু কুড়িয়ে নিতে পারবে না, যা নিয়ে ছাতি পেটানো যায়। বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া ছাড়া এই বৈঠকে আর কিছু হবে না, দেরিতে হলেও দিল্লি তা বুঝেছে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।

আজকের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী তাঁদের চিঠিতে যে স্পিরিট দেখিয়েছিলেন তাকে গুরুত্ব দিয়েই তাঁদের প্রস্তাবে সাড়া দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কথা শুরুর পিছনে যে পাকিস্তানের অশুভ উদ্দেশ্য রয়েছে, তা স্পষ্ট। কয়েক মাসের মধ্যেই ইমরান খানের চেহারাটা বেরিয়ে পড়েছে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Foreign Ministry India Pakistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE