Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

‘খতনা’ মামলা গেল সাংবিধানিক বেঞ্চে 

সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে নয়, মেয়েদের ‘খতনা’ তথা যোনির অঙ্গচ্ছেদ প্রথার বৈধতা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে শীর্ষ আদালতের  সাংবিধানিক বেঞ্চে। মুসলিমদের দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের দাবি ছিল বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে বিবেচিত হোক। নরেন্দ্র মোদী সরকারও আজ সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে। মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে চলে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত আপাতত পিছিয়ে গেল।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে নয়, মেয়েদের ‘খতনা’ তথা যোনির অঙ্গচ্ছেদ প্রথার বৈধতা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চে। মুসলিমদের দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের দাবি ছিল বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে বিবেচিত হোক। নরেন্দ্র মোদী সরকারও আজ সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে। মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে চলে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত আপাতত পিছিয়ে গেল।

দিন দশেক আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে ইনদওরের সাইফি মসজিদে গিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, বোহরা সমাজের সঙ্গে তাঁর পুরনো সম্পর্ক। তিনি এক রকম এই সমাজের সদস্যই হয়ে গিয়েছেন। তবু আইনজীবী মহলে প্রশ্ন উঠেছে, মুসলিমদেরই তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথা বন্ধ করতে মোদী সরকার যেখানে এত সক্রিয়, আদালতে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের বিরোধিতা করেছে— সেখানে যোনির অঙ্গচ্ছেদ নিয়ে সরকার কেন দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের দাবিকে সমর্থন করল?

এ দেশে শিয়া মুসলিমদের দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের মধ্যেই মহিলাদের যোনি অঙ্গচ্ছেদের প্রথা সব থেকে বেশি প্রচলিত। আইন করে সেই প্রথায় নিষেধাজ্ঞা জারি দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বেঞ্চে আজ তার শুনানি হয়। দাউদি বোহরাদের আইনজীবী মুকুল রোহতগি দাবি করেন, সাংবিধানিক বেঞ্চেই এর ফয়সালা হওয়া উচিত। তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করেন কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল।

যোনির অঙ্গচ্ছেদ প্রথায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে, একে জামিন-অযোগ্য ফৌজদারি অপরাধের তকমা দেওয়ার দাবিতে মামলা করেছিলেন আইনজীবী সুনীতা তিওয়ারি। দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের দুই মহিলাও একই দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। মামলাকারীরা এ দিন প্রশ্ন তোলেন, সব মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানোর প্রয়োজন কী? রোহতগি যুক্তি দেন, সব মামলার প্রশ্ন নয়। এ’টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মামলা। অ্যাটর্নি জেনারেলও তাঁকে সমর্থন করায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চও মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানোর পক্ষে মত দেয়।

মামলাকারীদের দাবি, যোনির অঙ্গচ্ছেদ আদিম প্রথা। সংবিধান অনুযায়ী, সমস্ত শিশুকন্যা ও মহিলার সম্মানের সঙ্গে, নিখুঁত শরীর নিয়ে বাঁচার অধিকার রয়েছে। অথচ যোনির অঙ্গচ্ছেদ বা ‘খতনা’ প্রথায় মেয়েদের জন্ম থেকে বয়ঃসন্ধির মধ্যে বয়সে যৌনাঙ্গের বাইরের কিছু অংশ বাদ দেওয়া হয়। মনে করা হয়, এতে সামাজিক সম্মান বাড়বে, মেয়েদের পবিত্র রাখা যাবে। এতে মহিলাদের কাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, এর ফলে সংক্রমণ-সহ নানা রোগ, সন্তান প্রসবে সমস্যা তৈরি হয়।

এর বিরোধিতা করে ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে দাউদি বোহরা মহিলাদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে দাবি তুলেছে, এই ধর্মীয় প্রথা প্রায় হাজার বছর ধরে চলছে। এর সঙ্গে স্বাস্থ্যহানিরও কোনও সম্পর্ক নেই। তা ছাড়া সকলেরই ধর্মীয় প্রথা পালন করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court Constitutional Bench Ritual Female
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE