অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।
অসমে একের পর এক তরুণ-তরুণী আলফা স্বাধীনে যোগ দেওয়ার রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারও উদ্বিগ্ন। বিষয়টি নিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। সতর্ক করা হয়েছে পুলিশ ও সেনা গোয়েন্দাদের।
বাবা প্রাক্তন সেনাকর্মী। এক কাকা সেনাবাহিনীতে ছিলেন। আরও এক কাকা শিক্ষক। পিসেমশাইও প্রাক্তন সিআরপি জওয়ান। কিন্তু এমন পরিবারে বড় হয়েও শেষ পর্যন্ত দেশ গড়া নয়, দেশবিরোধীদের দলে নাম লিখিয়েছে তিনসুকিয়ার মুন্না বরুয়া। ছোট কাকা পরেশ বরুয়া আলফা স্বাধীনের মাথা। পুলিশের দাবি, তার ডাকে সাড়া দিয়েই মায়ানমার পাড়ি দিয়েছে পরেশের বড়দা বিমল বরুয়ার ছোট ছেলে মুন্না।
তিনসুকিয়ার এসপি মুগ্ধজ্যোতি মহন্ত জানান, আলফার পেশাদার সদস্য নিয়োগকারীর মাধ্যমেই ২৪ বছরের মুন্না তাঁর কাকার সংগঠনে যোগ দিতে গিয়েছেন। নবজিৎ মহন্ত ও রাজু মরাণ নামে আরও দুই যুবক আলফা স্বাধীনে যোগ দেওয়ার উদ্দেশে যোগাযোগ শুরু করেছিলেন। পালানোর আগেই তাঁদের আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে আলফা স্বাধীনের লিঙ্কম্যান পলাশজ্যোতি মরাণ। তিনসুকিয়ার লেখাপানির এক দশম শ্রেণির ছাত্রীও আলফা স্বাধীনে নাম লেখায়। বরপেটার তিন জন, ওদালগুড়ির তিন জন, দেরগাঁও আসু উপসভাপতিও আলফা স্বাধীনে যোগ দিয়েছেন বলে জেনেছে পুলিশ।
রাজ্য পুলিশের বিশেষ শাখার ডিজি পল্লব ভট্টাচার্য সম্প্রতি মেনে নিয়েছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আসার পরেই নতুন প্রজন্মের মধ্যে বেড়েছে আলফার প্রতি সহানুভূতি ও আকর্ষণ। ওই সংশোধনীর বিরুদ্ধে রাজ্যে ৭০টি সংগঠন আন্দোলনে নেমেছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েই আলফার উত্থান ঘটছে ফের। যা চিন্তায় ফেলেছে কেন্দ্রকে। গত কাল দিল্লিতে বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। আলফার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন রাজনাথ।
এই পরিস্থিতিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিষয়ক যৌথ সংসদীয় কমিটি সদস্যদের একাংশের প্রস্তাব, আপাতত সংশোধনী থেকে বাংলাদেশ থেকে আসা শরার্থীদের বাদ রাখা হোক। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ২০ নভেম্বর কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।
প্রদেশ কংগ্রেসের দাবি, এক দিকে রাজ্যে সব উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ। অন্য দিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এনে অসমীয়াদের মনে অসন্তোষের বীজ বোনা হয়েছে। তার ফলেই রাজ্যে শক্তি বৃদ্ধির সুযোগ পেয়েছে ক্ষয়িষ্ণু আলফা স্বাধীন। ছাত্রছাত্রীরাও নাম লেখাচ্ছে আলফায়। এর দায় বর্তমান সরকারকেই নিতে হবে। কংগ্রেস মুখপাত্র অভিজিৎ মজুমদারের মতে, সরকার উন্নয়নে মন দিচ্ছে না, জঙ্গিদেরও দমন করছে না। নাগরিকত্ব বিল রাজ্যসভায় পাশ হবে না জেনেও তাকে সামনে রেখে হিন্দু বাঙালিদের ভোট আদায় করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হচ্ছে। হিন্দু বাঙালিদের নাগরিকত্ব দূরের কথা, তাঁদের নিরাপত্তাই দিতে ব্যর্থ সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy