রাজীব গাঁধীর ৭৫-তম জন্মদিনের অনুষ্ঠান দিল্লিতে রাহুল গাঁধী।—ছবি পিটিআই।
প্রায় মিনিট খানেক ধরে চলা সমবেত হাততালি তখন শেষ হয়ে গিয়েছে। একাই দিয়ে চলেছেন সনিয়া গাঁধী। কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভাপতি।
প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর ৭৫-তম জন্মদিনের অনুষ্ঠান দিল্লিতে। মঞ্চে ঝাঁঝালো বক্তৃতা দিচ্ছেন যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অমরেন্দ্র সিংহ রাজা। বলছেন, ‘‘কংগ্রেসের এখনই আসল পরীক্ষা। আমার নেতা রাহুল গাঁধী রেগে গেলে যাবেন। কিন্তু রাহুলজি আপনাকে বলতে চাই, আপনার জন্য এখানে আছি। প্রবীণদের থেকে অনেক অনুপ্রেরণা নিয়েছি। কিন্তু আপনিই আমার নেতা। যা বলবেন করব। আপনাকে চাই।’’
সঙ্গে সঙ্গে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আওয়াজ উঠল, ‘‘রাহুল গাঁধী আগে বড়ো, হাম তুমহারে সাথ হ্যায়।’’ গোটা দেশ থেকে আসা কংগ্রেস নেতারা রাজার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে হাততালি দিতে শুরু করলেন। সনিয়া, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা, মনমোহন সিংহ থেকে সকলে। শুধু চুপ থাকলেন রাহুল। সনিয়া বারবার মিটিমিটি হেসে রাহুলের দিকে তাকাচ্ছেন এবং আরও জোরে জোরে হাততালি দিচ্ছেন।
যখন সনিয়া মঞ্চে বক্তৃতা দিতে গেলেন, রাজীবের সঙ্গে রাহুলের তুলনা টেনে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন। মনমোহন সিংহের পাশাপাশি শুধু রাহুলেরই নাম নিলেন ‘রাহুলজি’ বলে। আর রাজীবের উদারতা, সততার কথা টেনে বললেন, ‘‘আজকের দিনে এমন কাজ আর কেউ করতে পারেন না রাজীবের মতো। তবে রাহুল করেছে।’’ রাহুল প্রসঙ্গে এই কথাটি সনিয়ার বিবৃতিতে আগে লেখা ছিল না। কিন্তু নিজে থেকেই জুড়ে দিলেন তিনি। ফের রাহুলের সমর্থনে স্লোগান উঠল স্টেডিয়ামে।
রাজীবের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানটি নিয়ে গত ক’দিন ধরে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন প্রিয়ঙ্কা। নিজে ঘুরে ঘুরে প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় সাজিয়েছেন। শুধু নেতাদের বক্তৃতা নয়, দেশের নানা প্রান্তের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়েছে। সনিয়া বললেন, রাজীবকে এক সময় অভিজাত বলা হত, কিন্তু তাঁর দেখানো পথেই গ্রামে উন্নয়ন হয়েছে। কম্পিউটার নিয়ে অনেকের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। দার্জিলিং থেকে শুরু করে নানা জায়গায় শান্তি এনেছেন।
শেষে ছিল রক ব্যান্ডের আয়োজন। কবীরের একটি গান নিয়ে পিছনের দিকে শ্রোতাদের উঠে দাঁড়াতে বললেন গায়ক। উঠে দাঁড়ালেন সনিয়া, মনমোহন, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা এমনকি মোতিলাল ভোরা, মল্লিকার্জুন খড়্গেরাও। গায়ক সকলকে গাইতে বললেন। মনমোহনের হাত ধরে সনিয়া বললেন, ‘‘গান না।’’ সকলে মিলে তালি দিলেন। উপস্থাপিকা স্বরা ভাস্কর সব দেখে বললেন, ‘‘কংগ্রেসকে বলা হয়, ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’। কিন্তু আজকের এই ছবি দেখে তো মনে হল ‘গ্র্যান্ড ইয়ং পার্টি’।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy