Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কথা রাখেনি রেল, সফর বাতিল ক্যানসার রোগীর

হাসপাতালের কাগজপত্র দেখালে টিকিটের ভাড়া নেওয়া হবে না এবং যে-কোনও সময় টিকিট ‘কনফার্ম’ বা নিশ্চিত করে দেওয়া হবে। ক্যানসার রোগীদের জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থার স্থায়ী আশ্বাস আছে রেলের। কিন্তু সেই আশ্বাসে ভর করে টিকিট কেটেও ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে শনিবার মুম্বই যেতে পারলেন না কলকাতার সুদীপ রায়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৮ ০৩:৩০
Share: Save:

হাসপাতালের কাগজপত্র দেখালে টিকিটের ভাড়া নেওয়া হবে না এবং যে-কোনও সময় টিকিট ‘কনফার্ম’ বা নিশ্চিত করে দেওয়া হবে। ক্যানসার রোগীদের জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থার স্থায়ী আশ্বাস আছে রেলের।

কিন্তু সেই আশ্বাসে ভর করে টিকিট কেটেও ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে শনিবার মুম্বই যেতে পারলেন না কলকাতার সুদীপ রায়। কেননা তাঁর টিকিট ‘কনফার্মড’ হয়নি। শুধু তা-ই নয়, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েও রেলের কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ সুদীপবাবুর। যাত্রা বাতিলের পরেও তাঁর বিড়ম্বনার কথা রেলকে জানাতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

২৩ জুন, শনিবার মুম্বই মেল ধরার কথা ছিল সুদীপবাবুর। সেই অনুযায়ী অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়েছিলেন মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে। সুদীপবাবু জানান, ক্যানসার রোগীদের জন্য রেলের ঘোষিত বিশেষ সুবিধার শর্ত মেনেই তিনি মুম্বইয়ের হাসপাতাল থেকে পাওয়া ফর্ম ও কাগজপত্র সহযোগে টিকিট কেটেছিলেন। তাই তাঁকে টিকিটের ভাড়া দিতে হয়নি। কিন্তু শনিবার যাত্রার নির্ধারিত সময় এসে পড়ার পরেও তিনি দেখেন, তাঁর টিকিট নিশ্চিত হয়নি। অগত্যা যাত্রা বাতিল করতে বাধ্য হন তিনি। বদলাতে হয় হাসপাতালের অ্যাপয়েন্টমেন্টও।

সুদীপবাবুর অভিযোগ, এই বিষয়ে রেলের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। রোগযন্ত্রণার উপরে শুশ্রূষা-সফর বাতিলের বিড়ম্বনা তাঁকে কতটা কষ্ট দিয়েছে, সেই ব্যাপারে রেলের নির্ধারিত সাইটে অভিযোগও জানাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই ফেসবুকে পুরো বিষয়টি তুলে ধরেন। রেলের দু’টি ফেসবুক পেজের টাইমলাইনে পোস্ট করেন নিজের বক্তব্য। কিন্তু অভিযোগ, বিস্ময়কর ভাবে টাইমলাইনে তাঁর লেখা দেখা যাচ্ছে না! মেসেঞ্জারেও রেলের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন সুদীপবাবু। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা কেটে যাওয়া সত্ত্বেও রেল-কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। বাধ্য হয়েই তাঁকে নতুন টিকিট কাটতে হয়েছে। ‘‘রেল মুখেই বড় বড় কথা বলে। আসল চেহারাটা স্পষ্ট হল,’’ বলছেন বিরক্ত সুদীপবাবু।

প্রশ্ন উঠছে, সময়ে ট্রেন চালানো, যাত্রী-সুরক্ষার প্রাথমিক শর্ত রেল তো লঙ্ঘন করে চলেইছে। রোগীদের পরিষেবার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিও তারা রাখতে পারছে না কেন?

এই বিষয়ে রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ ফোন ধরেননি। রেলের প্রাক্তন আধিকারিক সমীর গোস্বামী জানাচ্ছেন, করমণ্ডল এক্সপ্রেস আর মুম্বই মেলকে বলা হয় ‘হসপিটাল ট্রেন’। বিশেষ করে গরমের সময় অনেক রোগী এই দু’টি ট্রেনে চড়ে চিকিৎসা করাতে যান। ফলে রোগীদের জন্য বরাদ্দ কোটা প্রায়ই পূর্ণ হয়ে যায়। ‘‘এ ক্ষেত্রে সম্ভবত তেমনই কোনও দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে,’’ বলছেন সমীরবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE