Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Meghalaya Mining

এখনও খনির সুড়ঙ্গে আটক ১৫ শ্রমিক, উদ্ধারে গাফিলতি নিয়ে কাঠগড়ায় প্রশাসন

সুড়ঙ্গের ভিতর সঙ্কট আরও বাড়ছে, কারণ পাম্প করে জল বের করা যাচ্ছে না। উল্টে পার্শ্ববর্তী নদী এবং একটি পরিত্যক্ত খনি থেকে ক্রমাগত জল ঢুকছে সুড়ঙ্গে। এই পাম্প নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনীতি। দু’সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কেন দুর্ঘটনাস্থলে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প পৌঁছল না তাই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।  যে দু’টি ছোট পাম্পের সাহায্যে শুরুতে জল বের করার চেষ্টা হচ্ছিল, তা অকেজো বলে ইতিমধ্যেই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।

দুর্ঘটনাস্থলের সামনে উদ্বিগ্ন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের উদ্ধারকারীরা। ফাইল চিত্র।

দুর্ঘটনাস্থলের সামনে উদ্বিগ্ন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের উদ্ধারকারীরা। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:০৮
Share: Save:

মেঘালয়ে যে কয়লা খনির সুড়ঙ্গে দু’সপ্তাহ ধরে আটক ১৫ জন শ্রমিক, সেই সুড়ঙ্গে নেমে পচা গন্ধ পেলেন ডুবুরিরা। এর ফলে যে শ্রমিকেরা আটকে আছেন, তাঁদের নিয়ে বাড়ল দুশ্চিন্তা। আটক শ্রমিকদের মৃতদেহ থেকেই পচা গন্ধ বেরোচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করে জানাননি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের উদ্ধারকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই সুড়ঙ্গে জল জমে আছে দু’সপ্তাহ ধরে। সেই জল পচেও দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে।

সুড়ঙ্গে জল জমে থাকার কারণেই পুরো দমে উদ্ধারকার্য চালাতে পারছেন না উদ্ধারকারীরা। এই মুহূর্তে সুড়ঙ্গে জলের উচ্চতা প্রায় ৭০ ফুট। সাধারণত জলের সর্বাধিক উচ্চতা ৪০ ফুট হলে তবেই জলে নেমে তলদেশ পর্যন্ত উদ্ধারের কাজ চালাতে পারেন ডুবুরিরা। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘ আমাদের ডুবুরিরা জলের ভিতর কিছুটা নেমে পচা দুর্গন্ধ পাচ্ছেন। কিন্তু এই গন্ধ পচা মৃতদেহ থেকেই আসছে, তা বলা যাচ্ছে না। শেষ তিন দিন ধরে সুড়ঙ্গ থেকে একটুও জল বের করা যায়নি। তাই জল পচেও দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে।’’

সুড়ঙ্গের ভিতর সঙ্কট আরও বাড়ছে, কারণ পাম্প করে জল বের করা যাচ্ছে না। উল্টে পার্শ্ববর্তী নদী এবং একটি পরিত্যক্ত খনি থেকে ক্রমাগত জল ঢুকছে সুড়ঙ্গে। এই পাম্প নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনীতি। দু’সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কেন দুর্ঘটনাস্থলে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প পৌঁছল না তাই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। যে দু’টি ছোট পাম্পের সাহায্যে শুরুতে জল বের করার চেষ্টা হচ্ছিল, তা অকেজো বলে ইতিমধ্যেই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।

আরও পড়ুন: ‘পোজ় না দিয়ে শ্রমিক বাঁচান’! খনি-কাণ্ডে তির রাহুলের

দু’সপ্তাহ পর অবশ্য পাম্প পাঠাতে নজরে এসেছে কিছু উদ্যোগ। সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প প্রস্তুতকারী সংস্থা কির্লোস্কার ব্রাদার্স লিমিটেড। এই বছরের জুলাই মাসেই থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে পড়া কিশোর ফুটবলারদের উদ্ধারে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প পাঠিয়েছিল তারা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তাঁদের বার্তা, ‘‘ আটক শ্রমিকদের জন্য আমরা উদ্বিগ্ন। তাঁদের উদ্ধারে সব রকম সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত। ’’

পাম্প পাঠাতে উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কোল ইন্ডিয়াও। পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল এবং ঝাড়খণ্ডের খনি থেকে মেঘালয়ে পাম্প পাঠাচ্ছে কোল ইন্ডিয়া। অসমের কয়ালাখনিগুলিতেও কোনও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প ব্যবহার করেনা কোল ইন্ডিয়া। যে কারণে সময় লাগছে প্রয়োজনীয় পাম্প পাঠাতে।

আরও পড়ুন: তিন রাজ্যে হারের ধাক্কা! ১৭ নয়া পর্যবেক্ষক আনলেন অমিত

এ সবের মধ্যেই উঠছে নানা প্রশ্ন। দেখা যাচ্ছে শ্রমিকদের আটকে থাকার খবর পাওয়ার এক সপ্তাহ পরে জেলা প্রশাসন উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প চেয়ে পাঠায় রাজ্য সরকারের কাছে। তারও এক সপ্তাহ পরে পাম্পের বিষয়টি কোল ইন্ডিয়াকে জানায় মেঘালয় রাজ্য প্রশাসন।পরিবেশের কারণেই ২০১৪ সালে মেঘালয়ে খননকার্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তা সত্ত্বেও বহাল তবিয়তে চলে অবৈধ খনন। সেই কারণেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকারের ভূমিকা।

বুধবারই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। টুইট করে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘১৫ জন শ্রমিক গত দু’সপ্তাহ ধরে খনিতে জলের মধ্যে আটকে ছটফট করছেন। এরই মধ্যে, প্রধানমন্ত্রী বগিবিল সেতুর উপরে ক্যামেরার সামনে অহঙ্কারী ভঙ্গিতে হাঁটাচলা করছেন। কিন্তু তার সরকার উদ্ধারের জন্য পাম্পের ব্যবস্থা করতে নারাজ। প্রধানমন্ত্রী দয়া করে খনির শ্রমিকদের বাঁচান!’

(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE