Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Donald Trump

অভিবাসন স্থগিতের নির্দেশিকায় সই ট্রাম্পের

ট্রাম্প ৬০ দিনের জন্য গ্রিন কার্ড দেওয়া বন্ধ রাখার কথা বলেছেন ঠিকই। কিন্তু দু’মাস পরেই যে সেই দরজা ফের খুলবে, সেই নিশ্চয়তা দেননি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।—ছবি রয়টার্স।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।—ছবি রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৪৫
Share: Save:

আপাতত দু’মাসের জন্য মার্কিন মুলুকে অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) বন্ধ রাখার বিতর্কিত নির্দেশিকায় সই করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বুধবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের ঘোষণা, “মহান মার্কিন কর্মীদের (গ্রেট আমেরিকান ওয়ার্কার্স) সুরক্ষিত রাখতে আমেরিকায় আপাতত অভিবাসন বন্ধ রাখার নির্দেশিকায় সই করলাম।”

আপাত দৃষ্টিতে নির্দেশিকা নিরীহ। শুধু আমেরিকায় পাকাপাকি ভাবে থাকার ভিসা (গ্রিন কার্ড) দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তা-ও ৬০ দিনের জন্য। সেখানে বাদ রাখা হয়েছে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, উদ্যোগপতির মতো অনেককে। কোপ পড়েনি এইচ-১বি কিংবা এল-১ ভিসায়। মূলত যাতে ভর করে আমেরিকায় কাজ করেন বহু অনাবাসী ভারতীয় ও বিপুল সংখ্যক কর্মী পাঠায় এ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। তা সত্ত্বেও এই নির্দেশিকা আমেরিকার বহু অনাবাসী ভারতীয় এবং দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার পক্ষে যথেষ্ট।

কারণ, ট্রাম্প ৬০ দিনের জন্য গ্রিন কার্ড দেওয়া বন্ধ রাখার কথা বলেছেন ঠিকই। কিন্তু দু’মাস পরেই যে সেই দরজা ফের খুলবে, সেই নিশ্চয়তা দেননি। বরং বলা হয়েছে, সময়সীমা শেষের ১০ দিন আগে অর্থনীতির অবস্থা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োর সঙ্গে আজ ফোনে কথা হয় ভারতের বিদেশসচিব এস জয়শঙ্করের। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কথার পাশাপাশি জয়শঙ্কর অনুরোধ করেন, অভিবাসন নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি যেন মাথায় রাখা হয়।

প্রসঙ্গত, গ্রিন কার্ডের জন্য নাম লিখিয়ে রেখেছেন প্রায় ৪.৪ লক্ষ অনাবাসী ভারতীয়। ওয়াশিংটন যে সংখ্যায় ওই ভিসা দেয় এবং তা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয়দের যা কোটা, তাতে এমনিতেই এঁদের সবার গ্রিন কার্ড পেতে সময় লাগবে অন্তত ৫০ বছর! ফলে সে দিক থেকে দু’মাস তেমন বড় সময় নয়। কিন্তু নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ট্রাম্প এ নিয়ে ক্রমশ সুর চড়াতে থাকলে সমস্যা বাড়বে।

এ ছাড়া, ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “কিছু কর্মী-ভিসা পেতে দক্ষতার শংসাপত্র (সার্টিফিকেট) লাগে।… কিন্তু দক্ষতার শংসাপত্র দেওয়ার সেই পদ্ধতির পক্ষে এখনকার কাজের বাজারের ছবিকে ধরা শক্ত।” অর্থাৎ ইঙ্গিত, এইচ-১বি, এল-১ এর মতো যে সমস্ত ভিসায় ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন পেশার দক্ষ কর্মীরা আমেরিকায় কাজ করতে আসেন, এ বার তাঁদেরও আতস কাচের তলায় ফেলতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন। এমনকি, ঘরবন্দি দশা শেষে কাজকর্ম শুরু হলে মার্কিনদের বাদ দিয়ে সে দেশের সংস্থাগুলি যাতে সস্তায় ভিন্ দেশি কর্মী নিতে না-পারে, তা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন খোদ ট্রাম্পও।

এটিই ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মাথাব্যথা। ফি বছর ইস্যু হওয়া ৮৫ হাজার এইচ-১বি ভিসার প্রায় ৭৫% থাকে তাদের পকেটে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষেও মোট এইচ-১বি ভিসা আবেদনের ৬৮% করেছেন ভারতীয় পেশাদাররাই। ফলে ট্রাম্পের কোপ তার উপরে নামলে, বড় সমস্যার মুখে পড়তে হবে এ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Immigrants Green Card
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE