Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দক্ষদেরই স্থান রাহুলের টিমে

এক দিকে বৃদ্ধতন্ত্র, সামন্ততন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে নতুন প্রজন্মের আগমনী বার্তা, অন্য দিকে লাটিয়েন্স দিল্লির বাইরে দলের প্রসারের জন্য বাস্তবের সঙ্গে সংযোগহীন নেতাদের বাদ দেওয়া।

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০৫:১৯
Share: Save:

এক ঢিলে অনেক পাখি মারলেন রাহুল গাঁধী।

এক দিকে বৃদ্ধতন্ত্র, সামন্ততন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে নতুন প্রজন্মের আগমনী বার্তা, অন্য দিকে লাটিয়েন্স দিল্লির বাইরে দলের প্রসারের জন্য বাস্তবের সঙ্গে সংযোগহীন নেতাদের বাদ দেওয়া। এমনকি নিজের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতদেরও কংগ্রেসের শীর্ষ কমিটিতে না-রেখে বার্তা দেওয়া— কাজ করে দেখাতে না-পারলে জায়গা মিলবে না। মঙ্গলবার রাতে কংগ্রেসের নতুন ওয়ার্কিং কমিটি ঘোষণার পরে এমনই বিশ্লেষণ চলছে দলের অন্দরে।

সনিয়া গাঁধী সভানেত্রী থাকার সময়েই রাহুলের আস্থাভাজন বলে পরিচিত ছিলেন দিগ্বিজয় সিংহ, মোহন প্রকাশ, মধুসূদন মিস্ত্রির মতো নেতারা। বস্তুত, দিগ্বিজয়ই বরাবর রাহুলকে দ্রুত সভাপতি করার দাবি তুলেছেন। সেই দিগ্বিজয়, মোহন-মধুসূদনদেরই ওয়ার্কিং কমিটি থেকে সরিয়েছেন রাহুল। আস্থাভাজন বলে পরিচিত, উচ্চশিক্ষিত জয়রাম রমেশকেও কমিটিতে রাখেননি। জায়গা পাননি কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, সলমন খুরশিদের মতো দিল্লির চোস্ত ইংরেজি-বলিয়ে, আইনজীবী নেতারাও। যা দেখেই অনেকে মনে করছেন, লাটিয়েন্সের বাইরে কংগ্রেসকে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর নতুন সভাপতি।

যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা জায়গা পেয়েছেন। যেমন, শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব। বরাক উপত্যকায় বিজেপির বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই করা সুস্মিতা মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী হিসেবে জায়গা পেয়েছেন কমিটিতে। একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত গৌরব গগৈ, রাজীব সতভ, রণদীপ সুরজেওয়ালার মতো নতুন প্রজন্মের পরিশ্রমী নেতারা জায়গা পেয়েছেন কমিটিতে। কর্নাটকে একার শক্তিতে ক্ষমতা ধরে রাখতে না-পারলেও পরিশ্রম ও ভাল কাজের জোরে কমিটিতে এসেছেন সিদ্দারামাইয়া এবং রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত কে সি বেণুগোপাল।

হরিয়ানায় রবার্ট বঢরার জমি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার। রাহুলের কমিটিতে জায়গা হয়নি ভূপেন্দ্রর। নেতাদের মতে, ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ। অথচ হুডার ছেলে দীপেন্দ্র বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে এসেছেন কমিটিতে। আবার হুডার বিরোধী শিবিরের দলিত নেত্রী কুমারী সেলজা, ভজন লালের ছেলে কুলদীপ বিষ্ণোইকে নিয়ে এসেছেন সভাপতি।

রাহুল যে নিজের টিমে বৃদ্ধতন্ত্রের অবসান ঘটাবেন, তা অনেকটাই প্রত্যাশিত ছিল। স্বাভাবিক নিয়মেই সনিয়ার জমানায় সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত জনার্দন দ্বিবেদী বা মহারাষ্ট্রের দলিত নেতা সুশীলকুমার শিন্দেরা নতুন ওয়ার্কিং কমিটিতে নেই। রাজস্থানের নেতা সি পি জোশীর বদলে এসেছেন গুজরাতের বিধানসভা ভোটের দায়িত্বে থাকা অশোক গহলৌত। গুজরাতে ভাল ফল করেছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া জায়গা পেয়েছেন স্থায়ী আমন্ত্রিত হিসেবে।

যে সব রাজ্যে সংগঠনের হাল ভাল নয়, সেখান থেকে প্রতিনিধি নেই রাহুলের কমিটিতে। যেমন অন্ধ্র, তেলঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ। উল্টো দিকে কর্নাটক, কেরল থেকে কমিটিতে এসেছেন একাধিক সদস্য। নীতিগত ভাবেই ওয়ার্কিং কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রী বা প্রদেশ সভাপতিদের নেওয়া হয়নি। ফলে পঞ্জাবের ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ, রাজস্থানের সচিন পায়লট, পুদুচেরির ভি নারায়ণস্বামীরা কমিটিতে নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Congress Wroking Committee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE