Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জিয়ো প্রশ্নে স্তুতি, ফাঁপরে প্রধানমন্ত্রী

বিতর্কের মুখ সোজা প্রধানমন্ত্রীর দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে শাসক শিবিরের অস্বস্তি বাড়ালেন নীতি আয়োগের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পানাগড়িয়া। তাঁর মতে, জিয়োর মতো অস্বিস্তহীন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উৎকর্ষের শিরোপা দেওয়াটা যথেষ্ট সাহসী পদক্ষেপ।

নরেন্দ্র মোদী।

নরেন্দ্র মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৫:৪৪
Share: Save:

জিয়ো প্রশ্নে প্রশংসাই বেজায় অস্বস্তিতে ফেলে দিল নরেন্দ্র মোদীকে। এ যাবৎ জিয়ো সংক্রান্ত বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর ও তাঁর মন্ত্রক। বিতর্কের মুখ সোজা প্রধানমন্ত্রীর দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে শাসক শিবিরের অস্বস্তি বাড়ালেন নীতি আয়োগের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পানাগড়িয়া। তাঁর মতে, জিয়োর মতো অস্বিস্তহীন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উৎকর্ষের শিরোপা দেওয়াটা যথেষ্ট সাহসী পদক্ষেপ। আর সেটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্য। পানাগড়িয়ার দাবি, ঝুঁকি থাকলেও মোদীর মতো সাহসী ব্যক্তিই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। নীতি আয়োগের প্রাক্তন কর্তার এই স্তুতি রাজনীতির ময়দানে ব্যুমেরাং হওয়ার আশঙ্কায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপি নেতারা।

চলতি সপ্তাহে দেশের ছ’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উৎকর্ষের শিরোপা দেয় কেন্দ্র। এর পাঁচটিতে দীর্ঘদিন ধরে পঠন-পাঠন চালু থাকলেও, জিয়ো প্রতিষ্ঠানটি এখনও রয়েছে খাতায়-কলমে। জাভড়েকরের মন্ত্রকই স্বীকার করেছে, গত মার্চ মাসে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঘোষণা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত শুধু জমি কেনা হয়েছে এর। তা সত্ত্বেও মুকেশ অম্বানীর প্রস্তাবিত জিয়ো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উৎকর্ষের শিরোপা দেয় কেন্দ্র। আইআইটি দিল্লি-মুম্বই, কিংবা বিটস পিলানির মতো জাতীয় স্তরে স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাসনে বসে জিয়ো। দেশব্যাপী সরকারের ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু হলে পিছু হটেন প্রকাশ জাভড়েকরেরা। শুরু হয় অভিযোগ খণ্ডনের চেষ্টা। এক দিকে কেন্দ্র যখন কোনও ভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরিয়া, তখন আজ নতুন করে একপ্রস্ত বিতর্ক উস্কে দিলেন পানাগড়িয়া। তা-ও আবার বিদেশের মাটিতে। ওয়াশিংটনে ভারত-মার্কিন লিডারশিপ সামিটে।

আলোচনাসভায় জিয়ো সংক্রান্ত বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই অম্বানীর ওই সংস্থাকে উৎকর্ষের মর্যাদা দেওয়ার পিছনে প্রধানমন্ত্রীর হাত রয়েছে বলে দাবি করেন পানাগড়িয়া। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের মতো দেশে অস্তিত্বহীন একটি প্রতিষ্ঠানকে উৎকর্ষের মর্যাদা দেওয়ার আগে অন্য প্রধানমন্ত্রীরা দু’-তিন বার ভাববেন। কারণ ঘোষণা হতেই ওই সিদ্ধান্তের কাঁটাছেড়ায় নামবে সংবাদমাধ্যম।’’ অরবিন্দের মতে,‘‘তা সত্ত্বেও ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন। কারণ তিনি সাহসী।’’ পানাগড়িয়া মনে করেন, জিয়োকে ওই মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নীতিগত ভাবে ঠিক। তাঁর যুক্তি, ‘‘নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই নির্দিষ্ট নিয়মবিধি চালু করা সুবিধের। কারণ, পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলিতে নতুন কোনও পরিবর্তন আনা বেশ কষ্টকর।’’

শুরু থেকেই জিয়ো বিতর্কে ব্যাকফুটে বিজেপি। এখন যে ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে গোটা ঘটনায় পানাগড়িয়া জড়িয়ে ফেললেন তাতে বেজায় অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃ্ত্ব। মুখ খুলে নতুন করে বিতর্ক বাড়াতে চাইছেন না দলের কোনও নেতাই। আর সব দেখে কংগ্রেস নেতার কটাক্ষ, ‘‘সত্যিই সাহসের ব্যাপার। সাহস না থাকলে অস্বিস্তহীন প্রতিষ্ঠানকে কেউ কি উৎকর্ষের শিরোপা দিতে পারে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE