Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

চিনকে বার্তা দিতে জাপান-আমেরিকার সঙ্গে নৌ-মহড়া ভারতের

আজ থেকেই বঙ্গোপসাগরে ভারত-আমেরিকা-জাপানের ত্রিপাক্ষিক নৌ-মহড়া শুরু হতে চলেছে। যার পোশাকি নাম ‘মালাবার ২০১৭’। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত মহাসাগরে ডুবোজাহাজ মোতায়েন করে আধিপত্য বাড়াতে চাইছে চিন। জাতীয় নিরাপত্তার খাতিরে চিনা জাহাজের টহল দিল্লির মাথাব্যথার কারণ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৫
Share: Save:

সিকিম সীমান্তে সেনা মোতায়েন নিয়ে ভারতকে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে বেজিং। এ বার বঙ্গোপসাগরে ত্রিপাক্ষিক নৌ মহড়া করে পাল্টা বার্তা দিতে চলেছে নয়াদিল্লি।

আজ, শুক্রবার থেকেই বঙ্গোপসাগরে ভারত-আমেরিকা-জাপানের ত্রিপাক্ষিক নৌ-মহড়া শুরু হতে চলেছে। যার পোশাকি নাম ‘মালাবার ২০১৭’। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত মহাসাগরে ডুবোজাহাজ মোতায়েন করে আধিপত্য বাড়াতে চাইছে চিন। জাতীয় নিরাপত্তার খাতিরে চিনা জাহাজের টহল দিল্লির মাথাব্যথার কারণ। তাই মার্কিন ও জাপানি নৌবহরের সঙ্গে মহড়া করে ভারত চিনের কাছে কড়া বার্তা পাঠাতে পারবে। তা ভারতের সামরিক কূটনীতির শক্তি প্রদর্শনও বটে।

দিল্লির মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, মালাবার মহড়ায় তাদের বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস নিমিৎজ’, ‘ইউএসএস প্রিন্সটন’ এবং ‘ডেস্ট্রয়ার’ গোত্রের ‘ইউএসএস শ্যুপ’ এবং ‘ইউএসএস কিড’ রণতরী আসছে। আসছে বোয়িং পি-৮এ সামরিক বিমান। নৌসেনা সূত্রের খবর, ভারতের সবচেয়ে বড় মাপের বিমানবাহী রণতরী ‘আইএনএস বিক্রমাদিত্য’-সহ একাধিক রণতরী এবং বিমানকে মহড়ায় নামানো হবে। জাপানেরও একাধিক রণতরী আসছে। প্রথম ৩ দিন চেন্নাইয়ে যুদ্ধের পরিকল্পনা এবং অন্যান্য মহড়া চলবে। ১০ জুলাই জলে নামবেন নৌসেনারা।

শুধু পাহাড়ের সীমান্ত নয়, চিনের দিক থেকে হামলার ক্ষেত্রে বঙ্গোপসাগরও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ক’দিন আগেও ভারতীয় উপগ্রহে বঙ্গোপসাগরে চিনা ডুবোজাহাজের অস্তিত্ব জানা গিয়েছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, জলযুদ্ধে চিনা ডুবোজাহাজের ক্ষমতা চিন্তার কারণ। চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে তাদের জুড়ি মেলা ভার। সে কথা মাথায় রেখে মালাবার মহড়ায় ডুবো়জাহাজের যুদ্ধকৌশল বিশেষ ভাবে অনুশীলন করা হবে। নতুন প্রযুক্তির ডুবোজাহাজ এবং তা মোকাবিলার কৌশল শেখানো হবে। পাশাপাশি রণতরী থেকে কী ভাবে বিমান হানা চালানো যায় এবং টহলদারির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা যায়, তা-ও একে অন্যকে দেখাবেন তিন দেশের সেনা অফিসারেরা। সেই কারণেই বোয়িং পি-৮ বিমান আনা হয়েছে। একই ধরনের বিমান ভারতের ভাঁড়ারেও রয়েছে। সেটিও এই মহড়ায় কাজে লাগানো হতে পারে।

সমর-বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত মহাসাগরে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে একাধিক দেশ মিলে কী ভাবে সামরিক অভিযান চালানো সম্ভব সেটা অনুশীলন করাও এই ধরনের মহড়ার উদ্দেশ্য। অর্থাৎ ওই তিন দেশের একটির বিরুদ্ধে একাধিক দেশ অভিযান শুরু করলে যাতে সমন্বয় বজায় থাকে সেটা মাথায় রেখেই মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে।

সেনা সূত্রে বলা হচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রভাব বাড়াতে সামরিক কূটনীতিকে ক্রমাগত ব্যবহার করা হচ্ছে। ত্রিপাক্ষিক নৌ-মহড়ার পাশাপাশি চলতি সপ্তাহে হিমাচলপ্রদেশে তাইল্যান্ডের সেনার সঙ্গে যৌথ মহ়়ড়া চালাচ্ছে ভারত। সেখানেও সেনা অভিযানের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমন্বয় বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE