ক্ষত-বিক্ষত সেই পা।
শেকুবাই ওয়াগলের নাম শুনলে কেউ চট করে চিনবেন না। অথচ ঠিক এক সপ্তাহ আগে ৬৫ বছর বয়সি শেকুবাইয়ের ক্ষতবিক্ষত পায়ের ছবি দেখেই শিউরে উঠেছিল দেশ।
নাশিক থেকে মুম্বই— মহারাষ্ট্রের কৃষকদের ‘লং মার্চে’ হেঁটেছিলেন শেকুভাই। প্রায় ২০০ কিলোমিটার হাঁটতে গিয়ে চটি ছিঁড়ে গিয়েছিল। ফোসকা পড়ে দু’পায়ের তলার পুরো চামড়াটাই প্রায় উঠে এসেছিল। গায়ে জ্বর নিয়ে কখনও রাস্তায় বসে পড়েছেন। কিন্তু থামেননি। গত সোমবার শেকুবাই ও তাঁর মতো হাজার চল্লিশেক চাষির সামনেই মাথা নত করতে বাধ্য হয় বিজেপি সরকার। শেকুবাইয়ের ক্ষতবিক্ষত পা হয়ে উঠেছিল আন্দোলনের প্রতীকী ছবি।
এক সপ্তাহ পরে কেমন আছেন শেকুবাই?
অশোক ধাবলে, অজিত নাবলে, কিষাণ গুজরের মতো মহারাষ্ট্রের কৃষক আন্দোলনের নেতারা আজ এসেছিলেন দিল্লিতে। কৃষক সভার বৈঠকে যোগ দিতে। তারই ফাঁকে অজিত জানালেন, ‘‘শেকুবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল। আমরাও অনেক পরে জানতে পারি। অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করি। কিন্তু ব্যান্ডেজ বাঁধার পরেও উনি থামেননি। বাড়ি ফিরেছেন। এখনও ব্যান্ডেজ বাঁধাই আছে।’’
আরও পড়ুন: প্রবাসী নিপীড়িতাদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ
অজিতই জানালেন, নাসিক থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ওয়ার্খেড়া গ্রামে এক কামরার কুঁড়েতে বাস শেকুবাইয়ের। স্বামী মারা গিয়েছেন। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একর খানেক জমি রয়েছে। কিন্তু সরকারি খাতায় তা অরণ্যের জমি। জমির পাট্টার জন্য আবেদন করেছিলেন। মেলেনি। অরণ্যের জমি বলে পৌঁছয়নি সেচের জলও। বেশির ভাগ মরসুমেই চাষের জন্য জল কেনার টাকা জোগাড় করতে পারেন না। গ্রামের অন্যদের সঙ্গে তাই তিনিও হাঁটতে শুরু করেছিলেন। কৃষক সভার সভাপতি অশোক ধাওয়ালে বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে গত ২৫ বছরে ৭৫ লক্ষ কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। তাঁদের পরিবারের সকলেও হেঁটেছেন লং মার্চে।’’
কৃষক সভার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ফসলের ন্যায্য দাম, ঋণ মকুবের দাবিতে গোটা দেশে ১০ কোটি কৃষকের সই সংগ্রহ করে তা মোদী সরকার ও রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ৯ অগস্ট সেই দাবিতে জেল ভরো কর্মসূচিতে নামবেন চাষিরা। অরণ্যের অধিকার আইনে জমি আদিবাসী কৃষকদের হাতে জমি তুলে দেওয়া হোক, এটাও অন্যতম দাবি ছিল লং মার্চের। দেবেন্দ্র ফডণবীস সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেই দাবি মেনে নেওয়া হবে। না হলে? কৃষক নেতাদের উত্তর, ফের আন্দোলন হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy