Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

‘দলিত’কে বিয়ে, রাস্তায় ফেলে মেয়েকে কাস্তে দিয়ে কোপালেন বাবা

বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদের বানজারা পুলিশ স্টেশন এলাকার এররাগাড্ডায়। অপরাধীকে গতকালই গ্রেফতার করা হয়েছে।

স্বামী সন্দীপের সঙ্গে মাধবী চারি। মন্দিরে বিয়ের পর। ছবি- সংগৃহীত।

স্বামী সন্দীপের সঙ্গে মাধবী চারি। মন্দিরে বিয়ের পর। ছবি- সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:৩২
Share: Save:

দলিত যুবককে বিয়ে করায় দিনদুপুরে রাস্তায় মেয়ে, জামাইয়ের ওপর কাস্তে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন শ্বশুর। প্রথমে কোপাতে গেলেন জামাইকে। তার পর কাস্তের একের পর এক কোপ বসালেন মেয়ের হাতে, ঘাড়ে ও কপালে। সদ্য বিবাহিত মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদের বানজারা পুলিশ স্টেশন এলাকার এররাগাড্ডায়। অপরাধীকে গতকালই গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানাচ্ছে, সপ্তাহখানেক আগে একটি মন্দিরে গিয়ে দলিত যুবক বি সন্দীপকে বিয়ে করেছিলেন মাধবী চারি। তার আগে পাঁচ বছর ধরে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল দু’জনের। মাধবীর মা, বাবার ওই বিয়েতে সায় ছিল না। তাঁরা ওবিসি সম্প্রদায়ের। বিয়ের পরেই মাধবী থানায় বিষয়টি জানান। যাতে পুলিশ মাধবীর মা, বাবাকে বুঝিয়েসুজিয়ে বিষয়টি মেটাতে সাহায্য করে। তার পর পুলিশ মাধবীর মা, বাবাকে থানায় ডেকে বুঝিয়েছিল।

দেখুন সেই ভিডিয়ো

আরও পড়ুন- হোমের মধ্যেই ওয়ার্ডেনকে খুন করল সিরাপ নেশাড়ু পাঁচ কিশোর​

আরও পড়ুন- শরীর খারাপ করছে, খাবার আনতে বলে আরজি কর থেকে শিশু নিয়ে চম্পট​

বুধবার সকালে হঠাৎ মাধবীর বাবা মনোহর চারি তাঁর মেয়েকে টেলিফোন করে এররাগাড্ডায় আসতে বলেন। সেখানে আলাপ-আলোচনায় বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলেন মনোহর। তা শুনে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান মাধবী। স্বামী সন্দীপকে নিয়ে একটি স্কুটিতে চেপে কিছু ক্ষণের মধ্যেই এররাগাড্ডায় ‘গোকুল থিয়েটার’-এর সামনে পৌঁছন মাধবী। প্রায় তখনই সেখানে পৌঁছন মনোহরও। তার পর তাঁর বাইক থেকে নেমে মনোহর তাঁর ব্যাগ থেকে একটি কাস্তে বের করেন। তার পর আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়েন স্কুটিতে বসে থাকা মাধবীর স্বামী সন্দীপের ওপর। কোপ মারতে থাকেন সন্দীপের ঘাড়ে। গুরুতর জখম সন্দীপ প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে যায়। তার পরেই কাস্তে নিয়ে মেয়ে মাধবীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন মনোহর। একের পর এক কোপ মারেন মেয়ের হাতে, ঘাড়ে, কপালের এক পাশে। মাধবী ওই সময় স্কুটি থেকে পড়ে যান রাস্তায়। ‘‘নান্না (বাবা) আমাকে মেরো না, আমাকে মেরো না’’, বলে রাস্তায় পড়ে আর্তনাদ করতে থাকেন মাধবী। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হননি মদ্যপ অবস্থায় থাকা মনোহর। তিনি যখন মেয়ের ওপর ফের কাস্তের কোপ বসাতে যাচ্ছেন, তখনই পিছন থেকে এসে এক পথচারী হাত টেনে ধরেন মনোহরের। টাল সামলাতে না পেরে তখন মনোহর রাস্তায় পড়ে যান। এর পরেই বিপদ বুঝে পালিয়ে যান মনোহর। পুলিশ পরে মনোহরের শ্যালকের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে তাঁকে। মনোহরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ নম্বর ধারা (খুনের চেষ্টা) ও তফসিলি জাতি ও উপজাতি আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। মনোহর একটি গয়নার দোকানের কর্মী।

পুলিশের জেরায় মনোহর বলেছেন, ‘‘বিয়ে করার পরেই জানতে পারি দু’জনের সম্পর্কের কথা। আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না এই বিয়ে। আমি কাল খুনই করে ফেলতাম মেয়েকে।’’

হায়দরাবাদ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (পশ্চিমাঞ্চল) এ আর শ্রীনিবাস বলেছেন, ‘‘মনোহর আমাদের জানিয়েছেন, মেয়ের বিয়ের কথা শোনার পরেই গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি বার বার সন্দীপের বাড়িতে গিয়েছিলেন মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু তাঁকে তাঁর মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE