Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Father

বাবা ধার শোধ না করায় শিকলে বেঁধে অত্যাচার কিশোরী মেয়েকে

পুলিশের কাছে ওই কিশোরী আরও বলেছে, ‘‘বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আমাকে দিয়ে সমস্ত কাজকর্ম করিয়ে নিতে শুরু করে মহাজনেরা। মারধরও করত। আর সারা দিনে একবেলা মাত্র সামান্য কিছু খাবার দিত।

সংবাদ সংস্থা
পটনা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০১:৪৭
Share: Save:

ঋণ শোধ করেননি বাবা। সেই ‘অপরাধে’র শাস্তি হিসাবে তাঁর কিশোরী মেয়েকে শিকলে বেঁধে দিনের পর দিন নির্মম অত্যাচার চালাল মহাজন।

১৪ বছরের ওই কিশোরীকে দিনে এক বার মাত্র খেতে দেওয়া হতো। সেই সঙ্গে দিনভর বাড়ির কাজকর্ম করানোর পাশাপাশি মারধরও করা হতো। এর পর দিনের শেষে একটি পিলারের সঙ্গে তাকে বেঁধে রাখা হতো, যাতে সে পালিয়ে যেতে না পারে। প্রায় তিন মাস ধরে এই রকম নির্যাতন সহ্য করার পর বৃহস্পতিবার কোনও ভাবে মহাজনের বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে ওই কিশোরী। গ্রামবাসীরা তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তখনও তার পায়ে শিকল বাঁধা ছিল। আর সেই শিকল এতটাই শক্তপোক্ত যে, সেটি কাটতে প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লাগল। বিহারের ভোজপুর জেলার বিহিয়া থানার তিপুরা গ্রামের এই ঘটনা সামনে আসতেই শিউরে উঠেছেন এলাকাবাসী।

ঘটনার পরই পুলিশ অভিযুক্তের বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু তত ক্ষণে অভিযুক্ত মহাজন নিজের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তবে যে কামারের কাছ থেকে শিকল বানিয়েছিলেন ওই মহাজন, তাঁকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ কর্তাদের আশা, শীঘ্রই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারবেন তাঁরা।

থানায় বসে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে কিশোরী জানায়, ‘‘আমার বাবা লম্বু খারওয়ার গ্রামেরই মহাজন কে পি খারওয়ারের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেন। কিন্তু চরম অভাবের কারণে সেই টাকা বা তার সুদ কোনওটাই ফেরত দিতে পারেননি। এক দিন কাউকে কিছু না জানিয়ে আমাকে বাড়িতে রেখেই গ্রাম ছেড়ে চলে যান বাবা। এর পরই মহাজন, তাঁর মা, ভাই আমার উপর অত্যাচার শুরু করে। বাবার পালিয়ে যাওয়ার কথা জানতে পেরে এক দিন আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় ওরা। মা আর ভাই পালাতে পারলেও আমি পারিনি।’’

আরও পড়ুন: সিসিটিভির ছবি দেখেই শুজাত বুখারি খুনে প্রথম গ্রেফতার

পুলিশের কাছে ওই কিশোরী আরও বলেছে, ‘‘বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আমাকে দিয়ে সমস্ত কাজকর্ম করিয়ে নিতে শুরু করে মহাজনেরা। মারধরও করত। আর সারা দিনে একবেলা মাত্র সামান্য কিছু খাবার দিত। সন্ধের পরই শিকল দিয়ে একটি পিলারের সঙ্গে আমাকে বেঁধে রাখত, যাতে পালাতে না পারি। গত প্রায় তিন মাস ধরে এ রকমই চলছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার সুযোগ বুঝে হামাগুড়ি দিয়ে পায়ে শিকল নিয়েই কোনও রকমে পালিয়ে আসি। বাড়ির বাইরে বেরিয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকি। তখনই এলাকার কিছু লোকজন আমাকে থানায় নিয়ে যান।’’

ভোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনজিৎ সায়োরান বলেন, ‘‘আমরা বাড়িটিতে অভিযান চালিয়ে কাউকে পাইনি। অভিযুক্ত দম্পতিকে যাতে শীঘ্রই গ্রেফতার করা যায়, সে চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে শিকল তৈরি করা কামারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bihar Father
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE