Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বধূ নিগ্রহে অভিযুক্ত প্রাক্তন বিচারপতি

পুলিশ জানিয়েছে, এপ্রিল মাসের ঘটনা। সে সময়ে তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখনই নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।

শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামীর সঙ্গে সিন্ধু শর্মা। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামীর সঙ্গে সিন্ধু শর্মা। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

সংবাদ সংস্থা 
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

সাজানো-গোছানো বসার ঘর। সেখানে বছর তিরিশের এক মহিলাকে নিগ্রহ করছেন এক যুবক ও প্রৌঢ় দম্পতি। ধাক্কাধাক্কির চোটে প্রথমে বিছানায়, পরে মাটিতে পড়ে যান তরুণী। টলমলে পায়ে একরত্তি শিশু মাকে বাঁচাতে এলে তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সিসিটিভি ফুটেজের সাদা-কালো এই ভিডিয়ো সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছে, ওই প্রৌঢ় সম্পর্কে তরুণীর শ্বশুর এবং মাদ্রাজ ও হায়দরাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। বাকি দু’জন স্বামী ও শাশুড়ি। সিন্ধু শর্মা নামে হায়দরাবাদের ওই নির্যাতিতার অভিযোগ, পণের দাবিতে তাঁর উপরে অত্যাচার করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।

পুলিশ জানিয়েছে, এপ্রিল মাসের ঘটনা। সে সময়ে তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখনই নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। তরুণী জানান, পণের দাবিতে তাঁর উপরে অত্যাচার চালাচ্ছেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বধূ নির্যাতনের মামলা করেন সিন্ধু। তাঁর দুই ও চার বছরের দু’টি শিশুকন্যা রয়েছে। অভিযোগ, ওই ঘটনার পরে শিশুদের প্রথমে মায়ের কাছে যেতে দেননি শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পরে আদালতের নির্দেশে দুই মেয়েকেই কাছে পেয়েছেন তিনি।

সিন্ধু জানিয়েছেন, ২০১২ সালে হায়দরাবাদের নুটি বশিষ্ঠের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই পণের দাবিতে তাঁর উপরে নির্যাতন চালাতেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। শাশুড়ি নুটি দুর্গা জয়লক্ষ্মী তাঁর উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। তরুণীর শ্বশুর নুটি রামমোহন রাও হায়দরাবাদ ও মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন। সিন্ধুর দাবি, এপ্রিল মাসে মামলা করলেও এত দিন বিষয়টি জনসমক্ষে আনতে চাননি। ভেবেছিলেন, মিটমাট হয়ে যাবে। সংবাদমাধ্যমে সিন্ধু বলেছেন, ‘‘আমার মেয়েরা খুবই ছোট। ওদের বাবার ভালবাসারও প্রয়োজন। তাই সব মিটিয়ে নিয়ে ফেরার কথা ভেবেছিলাম।’’ কিন্তু তা না-হওয়ায় সিসিটিভি ফুটেজটি প্রকাশ্যে এনেছেন তরুণী। সিন্ধুর কথায়, ফুটেজ ছাড়া কেউ তাঁর কথা বিশ্বাস করত না। তাই শ্বশুরবাড়ি ছাড়ার পরে ওই সিসিটিভির আইডি ও পাসওয়ার্ড মনে করে তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন। সেই সূত্র ধরেই ওই ফুটেজ উদ্ধার করে পুলিশ।

ভিডিয়ো ফুটেজের প্রমাণ সত্ত্বেও সিন্ধুর অভিযোগ মানেননি নুটি রামমোহন ও তাঁর পরিবার। পাল্টা হলফনামা দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, ছয় সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন সিন্ধু। তাঁকে আটকাতে গিয়েই ওই ধাক্কাধাক্কি হয়। ওই পরিবারের এক ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, ঘটনার দিন পোশাকের ভিতরে কীটনাশকের বোতল লুকিয়ে রেখে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন সিন্ধু। পরিবারের ভয় ছিল, নিজের সঙ্গে সঙ্গে শিশু দু’টিরও ক্ষতি করতে পারেন তিনি। তাই সকলে মিলে আটকাতে চাইছিলেন। ওই আত্মীয়ের পাল্টা অভিযোগ, প্রথম থেকেই সিন্ধু অবাস্তব দাবি-দাওয়া করতেন। শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি ভাগ করে নিজের নামে করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন ‘‘পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হলে, সিন্ধু ফিরতে চেয়েছেন কেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Domestic Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE