Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বর্মার বাড়ির সামনে আটক চার গোয়েন্দা

ছুটিতে পাঠানো হলেও তিনি এখনও সিবিআই প্রধানের পদেই রয়েছেন বলে আজ সিবিআইয়ের তরফেই স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আটক: অলোক বর্মার বাড়িতে নজরদারির অভিযোগে পাকড়াও গোয়েন্দাদের মধ্যে দু’জন। বৃহস্পতিবার। পিটিআই, টুইটারে পাওয়া ভিডিয়োগ্রাফ।

আটক: অলোক বর্মার বাড়িতে নজরদারির অভিযোগে পাকড়াও গোয়েন্দাদের মধ্যে দু’জন। বৃহস্পতিবার। পিটিআই, টুইটারে পাওয়া ভিডিয়োগ্রাফ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০২:১৩
Share: Save:

ছুটিতে পাঠানো হলেও তিনি এখনও সিবিআই প্রধানের পদেই রয়েছেন বলে আজ সিবিআইয়ের তরফেই স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ছুটিতে পাঠানোর এক দিনের মাথায় সেই সিবিআই প্রধান অলোক বর্মার বাড়িতে গোয়েন্দাগিরি করার অভিযোগ উঠল গোয়েন্দা সংস্থা ইনটেলিজেন্স বুরো (আইবি)-র বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে আটক চার গোয়েন্দাকে দুপুরে দিল্লি পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, আটক চার অফিসারকে রুটিন নজরদারির কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল। গোটা ঘটনায় যে ভাবে আইবি অফিসারদের পরিচয় ফাঁস হয়ে গিয়েছে তাতে ক্ষুব্ধ মন্ত্রক।

ঘটনার সূত্রপাত আজ সকালে। ২ নম্বর জনপথে সিবিআই প্রধান অলোক বর্মার বাড়ির উল্টো দিকে একটি গাড়িকে সন্দেহভাজন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা। অভিযোগ, চার ব্যক্তিকে সন্দেহজনক ভাবে উঁকিঝুঁকি মারতেও দেখা যায় বর্মার বাড়িতে। গত ক’দিন ধরেই সিবিআই প্রধানকে ঘিরে রাজধানী উত্তাল। সেই পরিস্থিতিতে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দেখে কোনও ঝুঁকি নেননি বর্মার নিরাপত্তারক্ষীরা। চার জনকে আটক করে তুলে দেওয়া হয় দিল্লি পুলিশের হাতে। আটক করার সময়ে ওই চার জনের সঙ্গে বর্মার নিরাপত্তারক্ষীদের ধস্তাধস্তিও হয়। আটক ব্যক্তিদের কাছে পাওয়া পরিচয়পত্রও প্রকাশ করে দেন বর্মার এক নিরাপত্তারক্ষী। জানা যায়, তাঁরা গোয়েন্দা সংস্থা আইবি-র কর্মী। তাঁদের নাম অজয় কুমার, বিনীতকুমার গুপ্ত, ডি কে সিংহ ও প্রশান্ত কুমার। আইবি-র তরফে দাবি করা হয়, রুটিন নজরদারির কাজে তাঁদের জনপথে মোতায়েন করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পরে বিবৃতি দিয়ে জানায়, দিল্লির সংবেদনশীল এলাকাতে দৈনন্দিন ভিত্তিতে গোয়েন্দাদের মোতায়েন করা হয়ে থাকে। রাজধানীর এমন একটি স্পর্শকাতর এলাকা হল জনপথ রোড।

মন্ত্রক জানিয়েছে, আজ সকালে ২ জনপথের সামনে জমায়েত দেখতে পান গোয়েন্দারা। কেন ওই জমায়েত তা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কোনও গোপন নজরদারি করছিলেন না। তাঁদের কাছে পরিচয়পত্রও ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁদের উপস্থিতিকে অন্য ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। গোটা ঘটনায় চটেছেন আইবি কর্তারা। তাঁদের যুক্তি, ওই চার অফিসার মোটেই বর্মার বাড়িতে উঁকিঝুঁকি মারছিলেন না। রাস্তার উল্টো দিকে দাঁড়িয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তাঁদের আটক করা হয়। অলোক ঘনিষ্ঠদের দাবি, ওই চার জনকে নিরাপত্তারক্ষীরা ধরতে যেতেই তাঁরা পালানোর চেষ্টা করেন। তা না করে পরিচয়পত্র দেখালেই ঘটনা দিল্লি পুলিশ পর্যন্ত গড়াত না। অলোক শিবিরের এখনও ধারণা, সিবিআই প্রধান মুখ খুলতে শুরু করায় চাপে পড়ে গিয়েছে সরকার। তাই তিনি কার সঙ্গে দেখা করছেন তা নিয়ে বিশদ তথ্য জোগাড়ে ওই অফিসারদের নিয়োগ করা হয়েছিল। আজ এ নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও উত্তর না দিয়ে হেসে চলে যান।

যে ভাবে বর্মার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ধৃত চার আইবি কর্মীর পরিচয়পত্র জনসমক্ষে প্রকাশ করে দিয়েছেন তাতে বেজায় চটেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মন্ত্রক সূত্রের দাবি, ওই নিরাপত্তারক্ষী দিল্লি পুলিশের কর্মী। তাঁর জানা উচিত ছিল, এ ভাবে আইবি অফিসারদের পরিচয় ফাঁস করা যায় না। ওই রক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। মন্ত্রকের দাবি, চার গোয়েন্দার পরিচয় ফাঁস হয়ে গিয়েছে। গোয়েন্দাদের তথ্য সংগ্রহ করতে হয় পরিচয় গোপন রেখে। এ ভাবে পরিচয় ফাঁস হয়ে গেলে তাঁদের পক্ষে সে কাজ করা সম্ভব নয়। পরিচয় ফাঁস হয়ে গেলে তাঁদের জীবনের ঝুঁকিও হতে পারে। ওই ৪ জনকে আপাতত আইবি-র ডেস্কে সরানো হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Intelligence Bureau IB CBI Alok VErma
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE