জয়ের পরে নবীন। ছবি: পিটিআই
ক’দিন আগেই সাইক্লোন ফণীর ধাক্কা সামাল দিয়ে দেশ-বিদেশের বাহবা কুড়িয়েছেন। আজ দেশ জোড়া মোদী-ঝড়ের সামনে মাথা উঁচু করে নিজের গড় রক্ষা করলেন নবীন পট্টনায়ক। আর কুড়িয়ে নিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন। ফলাফলের ছবিটা স্পষ্ট হতেই নরেন্দ্র মোদী টুইট করেন, ‘ওড়িশায় আরও এক বার জয়ের জন্য নবীন পট্টনায়ককে অভিনন্দন। পরের মেয়াদের জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ নবীনও পাল্টা টুইট করে মোদীকে তাঁর বিপুল জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ‘আশা করি ওড়িশার উন্নতির জন্য আমরা এক সঙ্গে কাজ করব।’
রাজ্যের ১৪৭টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে ১৪৬টিতে। তার মধ্যে ১১৫টিতে এগিয়ে থেকে পঞ্চম বারের জন্য রাজ্য শাসনের পথে বিজু জনতা দল। গোটা দেশ যদি মোদী-ম্যাজিকে বুঁদ হয়ে থাকে, ওড়িশা মজে নবীন ম্যাজিকেই।
তবে এটাও ঠিক, রাজ্য শাসনের জন্য ১৯ বছর পরেও ফের নবীনকে বেছে নিলেও লোকসভায় বিজেপি-কে বিমুখ করেননি ওড়িশাবাসী। ২১টি আসনের মধ্যে ৮টি জিতেছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দল। গত বারের থেকে ৭টা বেশি।
‘মিশন ১২০+’ স্লোগান নিয়ে ওড়িশা জয়ের জন্য ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গের পরেই নবীনের রাজ্যের দিকে নজর ছিল তাদের। পশ্চিমবঙ্গের মতোই ওড়িশায় বারবার ছুটে এসেছেন মোদী-শাহ। রাজ্য জুড়ে সভা করেছেন। ভুবনেশ্বরে চোখ ধাঁধানো রোড-শো করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপি সভাপতি ভুবনেশ্বরের পাশাপাশি পুরীতেও। তার পরেও বিধানসভায় এমন ফলে স্বাভাবিক ভাবেই মুষড়ে পড়েছেন রাজ্যের বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। দিল্লিতে যখন উচ্চনিনাদে বিজয়োৎসব পালন করছেন মোদী-শাহ, তখনও ভুবনেশ্বরের বিজেপি দফতর ম্রিয়মাণ। ‘‘মানতেই হবে, ব্র্যান্ড নবীনে মরচে পড়েনি এখনও,’’ বলছেন বিজেপি নেতা অনিল বিসওয়াল।
ওড়িশার মানুষ মোদীকে প্রত্যাখ্যান করেছেন, এমনটা অবশ্য মানতে নারাজ বিজেপি নেতারা। তাঁদের মতে, সংগঠনের খামতি ছিল বলেই মোদী-শাহের তৈরি করে দেওয়া জমি থেকে ফসল ঘরে তোলা যায়নি। কিন্তু মানুষ মোদীকে চেয়েছেন, তাই লোকসভায় তুলনামূলক ভাবে ভাল ফল হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, ভুবনেশ্বর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির অপরাজিতা ষড়ঙ্গী জিতলেও সাতটা বিধানসভার একটিতেও জিততে পারেনি দল।
ক্ষয় অব্যাহত কংগ্রেসের। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জানকীবল্লভ পট্টনায়কের সম্বন্ধী নিরঞ্জন পট্টনায়ককে প্রদেশ সভাপতির আসনে বসিয়েও গোষ্ঠী লড়াইয়ের রোগমুক্তি ঘটেনি। গত বার বিধানসভায় ১৬টা আসন জিতেছিল তারা। এ বার ৭টা কম। সেই ভোট ব্যাঙ্কের কিছুটা ঘরে তুলেছে বিজেপি।
তাতে অবশ্য বিজেডির কিছু যায়-আসেনি। দলের নেতাদের মতে, নবীন-ম্যাজিক তো আছেই, দলের জয়ে সেই সঙ্গে ইন্ধন জুগিয়েছে ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ আর গরিব-গুর্বোদের জন্য কল্যাণ প্রকল্প। এই তিন স্তম্ভে ভর করেই জগন্নাথ-রাজ্যে আরও এক দফা নবীন-রাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy