সমস্যা ছিল রাজ বব্বরকে নিয়ে। তার জায়গায় গুলাম নবি আজাদ দায়িত্ব নেওয়াতেই এগিয়ে গেল আলোচনা। ফলে উত্তরপ্রদেশে ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির জোটের সম্ভাবনা।
নীতিগত ভাবে শুরু থেকে রাহুল গাঁধী সপা-র সঙ্গে জোটের পক্ষে। বিহারের মডেলেই ওই রাজ্যে মহাজোট করে বিজেপিকে রুখতে চাইছেন তিনি। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া অখিলেশও। তিনিও মনে করেন, বিজেপিকে রুখতে হাত মেলানো প্রয়োজন। তাতে উভয় শিবিরেরই লাভ।
কিন্তু সমস্যা হল ছেলে চাইলেও শুরু থেকেই জোটের প্রশ্নে আপত্তি ছিল মুলায়মের। সপা সূত্রে খবর, এ নিয়ে পিতা-পুত্রের মধ্যে মতপার্থক্যও তৈরি হয়। মুলায়ম চাইছিলেন, একক ভাবে বিজেপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামুক দল। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে গো-হারা হেরে অখিলেশ কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। তাই শুরু থেকেই তিনি ছিলেন জোটের পক্ষে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ ও রাজ বব্বরের সঙ্গে মুলায়মের বৈঠক হওয়ার পরেই জোটের চাকা গড়াতে শুরু করে।
জোটপন্থী কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, আসন নিয়ে সমঝোতার দায়িত্ব রাজ বব্বরকে দেওয়াতেই বরফ গলতে সময় নেয়। কারণ এই রাজ বব্বরই ২০০৯ সালে অখিলেশের স্ত্রী ডিম্পলকে হারিয়ে লোকসভায় গিয়েছিলেন। ফলে রাজ বব্বর প্রশ্নে সপা শিবিরে অস্বস্তি ছিল। পরে ওই আলোচনার দায়িত্ব নেন গুলাম নবি আজাদ। অন্য দিকে কংগ্রেসের অনুরোধ মেনে অমর সিংহকে দূরে রাখে সপা। দু’পক্ষের ইতিবাচক পদক্ষেপে ছবিটি পাল্টাতে শুরু করে।
তবে আসন বণ্টন নিয়ে এখনও সমঝোতা হয়নি। উত্তরপ্রদেশের ৪০৩টি আসনের মধ্যে গত বিধানসভা ভোটে ২২৪টি আসন জিতেছিল সপা। ফলে সপা শুরুতেই বলে দেয় জেতা আসন ও যেখানে দলীয় প্রার্থীরা দ্বিতীয় হয়েছেন সেই আসন কোনওভাবেই অন্য দলের প্রার্থীকে ছাড়া হবে না। পাল্টা দাবিতে কংগ্রেস প্রাথমিক ভাবে ১২৫টি আসন দাবি করলেও সপা নেতৃত্ব তাদের ৬০ থেকে ৬৫টি আসনের বেশি দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। সপা-র অনড় মনোভাব দেখে অবশ্য পরে সুর নামান রাহুলেরা। ১০০টি আসনের দাবি জানায় কংগ্রেস। সপা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, খুব বেশি হলে ৭৫টি আসন তারা ছাড়বে কংগ্রেসকে। দর কষাকষি এখনও চালু রয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, শেষ পর্যন্ত ৯০টি আসনেই সম্ভবত রফাসূত্র বের হবে।
কংগ্রেসের একাংশ অবশ্য এখনও মনে করে জোট হলে ওই রাজ্যে দলের বৃদ্ধি থমকে যাবে। কারণ ৯০টি আসন পাওয়ার অর্থ হল গোটা রাজ্যে মাত্র এক-চতুর্থাংশ আসনের জন্য লড়াইতে নামবে দল। যা ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে অশুভ ইঙ্গিত। লোকসভা নির্বাচনের কথা ভেবে রাজ্যে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করার যে লড়াই রাহুল শুরু করেছিলেন, তা ধাক্কা খাবে বলেই মনে করছেন জোট-বিরোধী নেতারা। তবে রাহুল জোট নিয়ে আগ্রহ দেখানোয় আপাতত অবশ্য ওই নেতারা মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy