Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

এনসিসি থেকে এ বার আকাশযুদ্ধে মেয়েরাও

শুধু অর্ধেক আকাশ নয়। পুরো আকাশ, এমনকী যুদ্ধের আকাশ বা আকাশযুদ্ধেও মহিলাদের সমান অধিকার স্বীকৃতি পাচ্ছে ভারতে। যুদ্ধবিমানে ওঠার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল বছরখানেক আগেই। এ বার লড়াইয়ের ময়দানে মহিলাদের জন্য নতুন দিক খুলে দিল বিমানবাহিনী।

ত্রয়ী: (বাঁ দিক থেকে) মোহনা সিংহ, অবনী চতুর্বেদী এবং ভাবনা কান্ত। —নিজস্ব চিত্র।

ত্রয়ী: (বাঁ দিক থেকে) মোহনা সিংহ, অবনী চতুর্বেদী এবং ভাবনা কান্ত। —নিজস্ব চিত্র।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০২:৩৯
Share: Save:

শুধু অর্ধেক আকাশ নয়। পুরো আকাশ, এমনকী যুদ্ধের আকাশ বা আকাশযুদ্ধেও মহিলাদের সমান অধিকার স্বীকৃতি পাচ্ছে ভারতে।

যুদ্ধবিমানে ওঠার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল বছরখানেক আগেই। এ বার লড়াইয়ের ময়দানে মহিলাদের জন্য নতুন দিক খুলে দিল বিমানবাহিনী। বৃহস্পতিবার বায়ুসেনা জানিয়েছে, এ বার থেকে এনসিসি ‘সি’ সার্টিফিকেটধারী মহিলারা ‘স্পেশ্যাল এন্ট্রি স্কিম’-এর মাধ্যমে সরাসরি বিমানবাহিনীতে যোগ দিতে পারবেন। এত দিন যা পুরুষদের জন্যই সীমাবদ্ধ ছিল। শুধু তা-ই নয়, যোগ্যতামান পেরোলে মহিলারা বসতে পারবেন যুদ্ধবিমানের ককপিটেও।

মহিলাদের মুকুটে এই নতুন পালক সংযোজনের ইতিহাসে কোথাও একটুখানি থেকে গেল বাংলার ভূমিকাও। কেননা এই নতুন সিদ্ধান্তের কথা যখন ঘোষণা করা হল, সেই সময়ে এ রাজ্যেরই আকাশে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এ দেশে যুদ্ধবিমানের প্রথম তিন মহিলা শিক্ষার্থী-অফিসার অবনী চতুর্বেদী, ভাবনা কান্ত এবং মোহনা সিংহ! বিমানবাহিনী সূত্রের খবর, সুখোই-৩০ বা তেজস-এর মতো

যুদ্ধবিমানে ওঠার আগে প্রশিক্ষণের শেষ ধাপ হিসেবে কলাইকুন্ডা বিমানঘাঁটিতে ‘হক’ বিমানে প্রশিক্ষণ চলছে তাঁদের।

সেনাবাহিনীতে মহিলাদের সম-অধিকার নিয়ে এ দেশে বিতর্ক রয়েছে বহু দিনই। গত বছর নামে অবনী, ভাবনা এবং‌ মোহনা পুরুষ সহকর্মীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধবিমান চালানোর ছাড়পত্র পাওয়ায় সেই ধারণায় বদল আসতে শুরু করেছিল। এ বার সেই বদলটাকেই আরও কিছুটা এগিয়ে দেওয়া হল বলে মনে করছেন বায়ুসেনা কর্তারা। ব্যারাকপুরের বায়ুসেনা ঘাঁটির কম্যান্ডার গ্রুপ ক্যাপ্টেন অমিয় ত্রিপাঠী বললেন, ‘‘মহিলাদের জন্য আরও সুযোগের দরজা খুলে দেওয়া হল। এতে এনসিসি-র মাধ্যমে আরও অনেক তরুণী বিমানবাহিনীতে যোগ দেবেন বলে আশা করা যায়।’’

আরও পড়ুন:গ্রেফতার হলেন ‘রিভলভার রানি’

বায়ুসেনার তরফে জানানো হয়েছে, এনসিসি-র ‘স্পেশ্যাল এন্ট্রি স্কিম’-এর মাধ্যমে মহিলারা শর্ট সার্ভিস কমিশনের জন্য বিবেচিত হবেন। অর্থাৎ চাকরির মেয়াদ হবে ১৪ বছর। পুরুষেরা অবশ্য পার্মানেন্ট কমিশনে যেতে পারেন। বায়ুসেনার এক মুখপাত্রের কথায়, ‘‘এটাই আপাতত স্থির হয়েছে। পরবর্তী কালে এই সিদ্ধান্তেও বদল হবে কি না, সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়।’’

বায়ুসেনা সূত্রে বলা হচ্ছে, ওই বাহিনীতে মহিলাদের যোগদান বা অবদান স্থলসেনা এবং নৌবাহিনীর থেকে অনেক বেশি। হেলকপ্টারের পাইলট হিসেবে মহিলাদের নিয়োগ শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালেই। সেই প্রথম ব্যাচের দুই অফিসার গুঞ্জন সাক্সেনা, শ্রীবিদ্যা রাজন কার্গিল যুদ্ধেও কৃতিত্বের ছাপ রেখেছিলেন। যুদ্ধে হানাদারির দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া হয়নি ঠিকই। কিন্তু চিতা হেলিকপ্টার নিয়ে দ্রাস, বাতালিকের মতো লড়াইয়ের ময়দানে বাহিনীকে রসদ জোগানো, উদ্ধারকাজ চালানোর মতো দায়িত্ব পালন করেন তাঁরা।

গুঞ্জন, শ্রীবিদ্যার উত্তরসূরিরা এ বার কতটা লড়াকু মেজাজ দেখান, তা দেখার অপেক্ষায় গোটা দেশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NCC Woman Indian Air force
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE