বাংলাদেশ সফরের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে দু’দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি চূড়ান্ত করার আর্জি জানালেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তাঁর মতে, ওই চুক্তি না হলে অসম থেকে বিদেশি বিতাড়ণ কখনওই পুরোপুরি সফল হবে না। সম্প্রতি নাগরিক পঞ্জী নবীকরণ নিয়ে রাজ্যের সব দল-সংগঠনের সমাবেশেও একই দাবি তোলা হয়েছিল। ওই চুক্তির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে রাজ্যে কংগ্রেস, অগপ সকলেই একমত। গগৈ বলেন, ‘‘রাজ্যের কোনও আদালত কাউকে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত করলেও, ভারত সরকার তাঁকে ফেরত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে জোর করতে পারে না। পুলিশ বা বিএসএফ ওই ব্যক্তিকে সীমান্ত পার করে দিলেও, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা তাঁদের ফেরত নিতে অস্বীকার করে। ফলে, তাঁরা ফের সুযোগ বুঝে ভারতে ঢুকে পড়ে।’’ গগৈয়ের বক্তব্য, বাংলাদেশ সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেন বাংলাদেশের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে প্রত্যর্পণ চুক্তির স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া শুরু করেন। রাজ্য সরকারের হিসেবে, অসম ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্তের দৈর্ঘ্য ২৬৭ কিলোমিটার। তার মধ্যে পূর্ত দফতর ১৭৬ কিলোমিটার সীমান্তে বেড়া বসিয়েছে। সাড়ে তিন কিলোমিটার স্থলভাগ বিতর্কিত এলাকায় পড়ছে। ২১৩.৭৪ কিলোমিটার এলাকায় আলো বসানো হয়েছে। কিন্তু জলভাগে ৪৪ কিলোমিটার এখনও উন্মুক্ত। রাজ্য সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৮৫ সাল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৭১ হাজার ২০১ জনকে বিদেশি হিসেবে শণাক্ত করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৩৮ হাজার ১৮৬ জন ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর এ দেশে এসেছিলেন। অর্থাৎ তাঁরা বহিষ্কারের যোগ্য। কিন্তু, তাঁদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার ৪৪৮ জনকে ফেরত পাঠানো গিয়েছে। ৬৮ জন ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছেন।
অন্য দিকে, জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর কাজ শুরু হওয়ার মুখে ফের জটিলতা বাড়িয়ে দিলেন বরাকের চার বিধায়ক। নতুন শর্ত আরোপ করে নিজের দলকেই সমস্যায় ফেললেন তাঁরা। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা গৌতম রায়ের নেতৃত্বে পাথারকান্দির বিধায়ক মণিলাল গোয়ালা, রটাবাড়ির বিধায়ক কৃপানাথ মালা ও বদরপুরের বিধায়ক জামালউদ্দিন একজোট হয়ে দাবি করেছেন, ২০১৪ সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী বরাকের নাগরিক পঞ্জীর নবীকরণ করতে হবে। তাঁদের দাবি, বরাকের অনেক পুরনো বাসিন্দার কাছে ১৯৭১ সালের আগেকার কোনও প্রামাণ্য নথি নেই। কিন্তু, তাঁদের বহিরাগত বলে চিহ্নিত করে দেওয়া চলবে না। গোয়ালা বলেন, ‘‘চা বাগানগুলিতে পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে প্রামাণ্য নথির অভাব রয়েছে। বাগান শ্রমিকদের পূর্বপুরুষরা ইংরেজ আমলে এখানে এসেছিলেন। তাই, বাগানে যে জন্ম নথিভুক্তিকরণের খাতা রাখা হয়, সেটিকেও নাগরিক পঞ্জীতে নথি হিসেবে গণ্য করতে হবে।’’ বিধায়কদের যুক্তি, ২০১৪ সালের ভোটার তালিকার ভিত্তিতে লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। তালিকায় থাকা ভোটারদের সমর্থনে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। তাই, তালিকার কোনও ভোটারকে অবৈধ ঘোষণা করা উচিত নয়। চার বিধায়ক হুমকি দিয়েছেন, নাগরিক পঞ্জী থেকে এক জন বঙ্গভাষীর নামও বাদ দেওয়া চলবে না। তেমন হলে তাঁরা পরের বছর নির্বাচন বয়কট করবেন।
টিহুতে মেগা ফুড পার্ক। উত্তর-পূর্বে মেগা ফুড পার্কের উদ্বোধন হল নলবাড়ির টিহুতে। আজ মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী হরসিমরত কউর বাদল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়া, যুবকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ওই অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন। ওই ফুড-পার্কে ত্রিস্তরীয় আধুনিক পরিকাঠামোর মাধ্যমে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ ও সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকদের সঙ্গে ক্রেতাদের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে এই প্রকল্প।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকে নিয়ে খানাপাড়া থেকে টিহু যাওয়ার পথে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেয়। বিমানবন্দর অধিকর্তা এম কে ভর্মা জানান, বিমানবন্দর ছাড়ার পরেই এমআই ১৭ কপ্টারের ইঞ্জিনে ত্রুটি টের পেয়ে চালকরা সেটিকে ব্রহ্মপুত্রের উপর দিয়ে ওড়ানোর ঝুঁকি নেননি। পরে, বিমানবাহিনীর অন্য একটি কপ্টারে গগৈ টিহু যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy