Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ধৃত সেই কাফিল খান

কাফিলকে নিয়ে এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হলো। এর আগে ২৯ অগস্ট এসটিএফ গ্রেফতার করে বিআরডি হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ রাজীব মিশ্র এবং তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা শুক্লকে। শুক্রবার আদালত দু’জনকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে।

কাফিল খান।

কাফিল খান।

সংবাদ সংস্থা
গোরক্ষপুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৩৫
Share: Save:

রোগীর আত্মীয়দের দাবি, মরতে বসা শিশুদের বাঁচানোর জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়েছিলেন তিনি। আঙুল তুলেছিলেন হাসপাতালের বেআইনি অক্সিজেন সিলিন্ডার চক্রের দিকেও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিশুমৃত্যু ঘটনায় গ্রেফতার করা হল গোরক্ষপুরের বাবা রাঘব দাস (বিআরডি) মেডিক্যাল কলেজের সেই শিশু চিকিৎসক কাফিল খানকেই। আজ গোরক্ষপুর থেকে এই চিকিৎসককে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।

কাফিলকে নিয়ে এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হলো। এর আগে ২৯ অগস্ট এসটিএফ গ্রেফতার করে বিআরডি হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ রাজীব মিশ্র এবং তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা শুক্লকে। শুক্রবার আদালত দু’জনকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে।

গত মাসে বিআরডি হাসপাতালে পাঁচ দিনে ৬০ জন শিশুর মৃত্যু হয়। তার মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয় ৩৩ জনের। অভিযোগ ওঠে অক্সিজেনের অভাবেই ওই ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন: ধসে চাপা পড়ল ছ’টি গাড়ি, শিমলায় জাতীয় সড়কে

কাফিল খান বিআরডি হাসপাতালের শিশু বিভাগের নো়ডাল অফিসার ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার চুরি করে নিজের প্রাইভেট ক্লিনিক চালাতেন কাফিল। রাজীব এবং পূর্ণিমার সঙ্গে হাত মিলিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাচারের ব্যবসাও ফেঁদেছিলেন তিনি। এর পরেই যাবতীয় দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় কাফিল খানকে। যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনের অভিযোগ, ওই ৩৩ জন শিশুর মৃত্যুর জন্য কাফিল খানের গাফিলতিই দায়ী। অক্সিজেন সরবরাহ নেই বলে তাঁকে লিখিত ভাবে জানানো হলেও কাফিল কোনও ব্যবস্থা নেননি।

সাসপেন্ড হওয়ার পর থেকেই বেশ আতঙ্কে ছিলেন কাফিল খান। ২১ অগস্ট কাফিল খানকে আনন্দবাজারের তরফে ফোন করা হলে সন্ত্রস্ত গলায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওরা আমাকে মিডিয়ার সামনে মুখ খুলতে বারণ করেছে। কিছু বললেই কপালে দুঃখ আছে।’’ কারা মুখ বন্ধ রাখতে বলেছেন? কাফিলের উত্তর ছিল, ‘‘নাম জানতে চাইবেন না। আমার বিপদ হবে।’’

শুক্রবার গোরক্ষপুরের একটি আদালত কাফিল-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। কাফিল ছাড়া এই তালিকায় রয়েছেন অ্যানাস্থেসিস্ট সতীশ কুমার, ফার্মাসিস্ট গজানন জায়সবাল, অ্যাকাউন্ট্যান্ট সুধীর পাণ্ডে, অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লার্ক সঞ্জয় ত্রিপাঠী এবং অক্সিজেন সরবরাহের দায়িত্বে থাকা উদয়প্রতাপ সিংহ এবং মণীশ ভাণ্ডারী।

যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন কাফিল খানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনলেও অসুস্থ শিশুদের অভিভাবকরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন। তাঁদের চোখে কাফিল খান এক জন ‘হিরো’। রোগীর আত্মীয়দের অনেকের দাবি, শিশুদের বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে গিয়েছেন কাফিল খান। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের (আইএমএ) কেন্দ্রীয় শাখা বিআরডি হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে আলাদা করে তদন্ত করেছিল। তারাও কাফিল খানের চিকিৎসা পদ্ধতিতে কোনও ত্রুটি খুঁজে পায়নি।

কাফিলও জানিয়েছিলেন, হাসপাতালের বেআইনি অক্সিজেন চক্র ভাঙতে শীঘ্রই মুখ খুলবেন তিনি। একটি ফেসবুক ভিডিও-য় দেখা গিয়েছে, শিশুমৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকে আঙুল তুলছেন কাফিল খান। তার পরেই আজকের এই গ্রেফতারি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE