নির্মল ভারত গড়তে এ বার সরকারি শিক্ষকদের ঘরে উঁকি দেবে ঝাড়খণ্ড।
কারও বাড়িতে শৌচালয় না থাকলেই বন্ধ হবে তাঁর বেতন!
এমনই ফরমান জারি হয়েছে রাজ্যে। আপাতত রাঁচীতে তা কার্যকর করার কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর মিলেছে, সরকারি কোনও শিক্ষকের বাড়িতে শৌচালয় না থাকলে এ মাসের বেতনও তিনি পাবেন না। ঝাড়খণ্ডের শিক্ষামন্ত্রী নীরা যাদব বলেন, ‘‘দ্রুত গোটা রাজ্যে ওই নিয়ম চালু করা হবে। আশা করি, শিক্ষকদের দেখে এ বার পড়ুয়ারাও বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করতে বলবে তাদের অভিভাবকদের।’’
রাঁচীর ডেপুটি কমিশনার মনোজ কুমারের কথায়, ‘‘কোনও শিক্ষকের বাড়িতে শৌচালয় না থাকলে তিনি খোলা জায়গায় শৌচকর্ম না করার শিক্ষা কী ভাবে দেবেন?’’ তিনি জানান, মুখ্যসচিব রাজবালা বর্মার দফতর থেকে এই নির্দেশ ইতিমধ্যেই তাঁদের কাছে পৌঁছেছে। শুধু সরকারি স্কুলের শিক্ষক নন, পার্শ্বশিক্ষক, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীও ওই নিয়মের আওতায় পড়বেন। বাড়িতে শৌচালয় না থাকলে বন্ধ হবে তাঁদেরও বেতন।
জেলা শিক্ষা আধিকারিক শিবেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই রাঁচীর ব্লক শিক্ষা অফিসে এ সংক্রান্ত নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নিজের নিজের বাড়ির শৌচালয়ের ছবি, বাড়ির ঠিকানা এবং ছবির নীচে স্বাক্ষর করে ব্লক এডুকেশন অফিসে পাঁচ দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে। তা না করলে এ মাসের বেতনও আটকানো হবে।
ঝাড়খণ্ডে খোলা জায়গায় শৌচকর্ম রুখতে হরেক উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষকদের সামনে এনে এমন পদক্ষেপ করা অভিনব। মনোজবাবু জানান, বেতন বন্ধের এই সিদ্ধান্ত তড়িঘড়ি করে নেওয়া হয়নি। জুন-জুলাই মাসে একটি সমীক্ষায় জানা যায়, গ্রামগঞ্জে অনেক শিক্ষকের বাড়িতে শৌচালয় নেই। তাঁদের দ্রুত শৌচালয় গড়তে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু নভেম্বরে ফের সমীক্ষায় দেখা যায়, অনেকে সে কথা কানে তোলেননি। বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিবেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘কোনও শিক্ষক এই নির্দেশ পেয়ে শৌচালয় তৈরির কাজ শুরু করলে তাঁর বেতন আপাতত আটকানো হবে না। কিন্তু তাঁকে নির্মীয়মান শৌচালয়ের ছবি সরকারি দফতরে পাঠাতে হবে।’’
কেউ তো পড়শি বাড়ির শৌচালয়ের ছবি তুলেও জমা দিতে পারেন? শিবেন্দ্রবাবু জানান, ব্লক শিক্ষা দফতরের কর্মীরা পরে প্রতিটি বাড়ি ঘুরে দেখবেন, ওই শৌচালয় সত্যিই শিক্ষকের বাড়িতে রয়েছে কিনা। ডিসি মনোজবাবুর আশা, প্রশাসনের মোক্ষম চালে এ বার ফাঁসবেন শিক্ষকরা। রাঁচীর ওরমাঁঝি গ্রামের সরকারি প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক জানান, ডিসেম্বরের বেতন না পাওয়ার ভয়ে তাঁরা সবাই এখন বাড়িতে শৌচালয় গড়তে ব্যস্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy