বহু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসাকে যাতে বিদেশি লগ্নির জন্য খুলে দেওয়া না হয়, সে জন্য ইউপিএ আমলে তার তীব্র বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। অথচ আজ মনমোহন জমানার সেই নীতিই বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিল তারা। যা দেখে এখনকার বিরোধী কংগ্রেস তো বটেই, রাজনীতিকদের একটা বড় অংশও কটাক্ষ করেছে শাসক দলকে। তাদের বক্তব্য, গুরুত্ব বুঝলেও শুধু রাজনীতি করার লক্ষ্যেই এর আগে তা হলে এই নীতির বিরোধিতা করেছিল বিজেপি!
আক্রমণ শুধু বাইরে থেকেই আসেনি। বিজেপি সমর্থিত ব্যবসায়ী সংগঠনও মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছে। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ২০১২-র শেষে বহু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় ৫১ শতাংশ বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্র দিয়েছিল মনমোহন সরকার। কিন্তু সে সময় বিজেপি, তৃণমূল-সহ প্রায় সব বিরোধী দল এর বিরোধিতায় ৮ দিন সংসদ অচল করে রাখে। গুজরাত-সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিও এর বিরোধিতা করেছিল। সংসদে দাঁড়িয়ে খোদ দুই কক্ষের তত্কালীন দুই বিরোধী দলনেতা সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলি পর্যন্ত সরব হন। ব্যবসায়ীদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভায় রাজনাথ সিংহ প্রতিশ্রুতি দেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে এ বিষয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা হবে।
বিজেপি সূত্র বলছে, ব্যবসায়ীরা বরাবরই তাদের বড় ভোটব্যাঙ্ক। তাই ভোটের আগে তাঁদের দাবি মেনে ভোটের আগে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা করা হয়। সরকারি সূত্র বলছে, এখন ক্ষমতায় আসার পরে মোদী, অরুণ জেটলিরা বুঝতে পারছেন, বিদেশি লগ্নিকে ছাড়পত্র না দিয়ে উপায় নেই। কারণ, তা না হলে সংস্কার প্রক্রিয়াও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। তা ছাড়া, এই ব্যাপারে বহুজাতিক সংস্থাগুলিও সরকারের উপর চাপ দিচ্ছে। শুধু কেন্দ্রই নয়, রাজ্যের অনুমতিও প্রয়োজন। তাই বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছেন, তাঁদের শাসিত রাজ্যগুলিকেও এ ক্ষেত্রে নরম সুর নিতে হবে।
বিজেপির এই দুই বিপরীত অবস্থানকে সুবিধাবাদী রাজনীতি বলেই অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। ইউপিএ-জমানার বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা জানান, এর জন্য আখেরে ক্ষতি হয়েছে দেশের অর্থনীতিরই। কারণ বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৫১% বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত বদলে ফেলবে— এই আশঙ্কাতেই এখনও কোনও বহুজাতিক সংস্থা ভারতে বিনিয়োগ করেনি। উল্টো দিকে, বিজেপি সমর্থিত সর্বভারতীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রধান প্রবীণ খাণ্ডেলওয়াল বলেন, ‘‘সব ব্যবসায়ী সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের কর্মসূচি করতে ৮ জুন নাগপুরে সংগঠনের বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy