Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
TikTok

২২ জুলাইয়ের মধ্যে জবাব না দিলে সরকার বন্ধ করে দেবে টিকটক, হেলো

কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রে খবর, বুধবার টিকটক ও হেলো অ্যাপ-এর কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠানো হয়। ওই নোটিসে জানানো হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী এবং বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে।

ব্যান হতে পারে টিকটক-হেলো।

ব্যান হতে পারে টিকটক-হেলো।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ১৭:৫৯
Share: Save:

খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। দেশবিরোধী ‘কনটেন্ট’ ছড়াচ্ছে তারা। গত রবিবার সঙ্ঘ পরিবারের শাখা সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের অভিযোগ পেয়ে তৎপর হয়ে বুধবারই কড়া অবস্থান নিল কেন্দ্রীয় সরকার। তাদের নজরে এ বার টিকটক। সঙ্গে রয়েছে হেলো অ্যাপও। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রে খবর, বুধবার টিকটক ও হেলো অ্যাপ-এর কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠানো হয়। ওই নোটিসে জানানো হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী এবং বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের সঙ্গে মন্ত্রককে জানাতে হবে। আগামী ২২ জুলাইয়ের মধ্যে জবাব না দিলে সরকার ওই অ্যাপগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবে বলে সূত্রের খবর।

রাজনৈতিক সূত্রে খবর, সঙ্ঘ পরিবারের অংশ স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ওই দুই অ্যাপের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের সহ আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে টিকটক-হেলো অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার অনুরোধ করেন। ওই চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘টিকটক-হেলোর মাধ্যমে ভারতীয় যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ভারতবিরোধী বিষয় ছড়িয়ে পড়ছে। যুব সম্প্রদায়কে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করছে তারা।’’

সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচার করতে দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে ‘মর্ফড’ ভিডিয়ো বা ছবিও ছিল। হেলো নিজেদের অ্যাপে এমন কোনও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেনি। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় ১১ হাজার ‘মর্ফড’ রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রকাশের জন্য বিপুল অঙ্কের টাকা ঢেলেছে হেলো। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অশ্বিনী মহাজনের অভিযোগ, ‘‘হেলো প্রায় ৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে ১১ হাজার বিকৃত রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য।’’ লোকসভা নির্বাচনের সময়ও বহু বিজেপি নেতা নির্বাচন কমিশনের কাছে এই অ্যাপ দু’টির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বলেও মহাজনের দাবি।

আরও পড়ুন: বন্যাতেও প্রাণভোমরা এনআরসি নথি

তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাপ পরিচালনার নাম করে টিকটক এবং হেলো ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু অভিযোগ, সে তথ্যের সবটাই অ্যাপ পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয় না। কী ধরনের তথ্য তারা সংগ্রহ করছে এবং অতিরিক্ত তথ্য কোন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, দুই অ্যাপ কর্তৃপক্ষের কাছে নোটিস দিয়ে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। আগেই ওই দুই সংস্থা জানিয়েছিল, তাদের সংগৃহীত তথ্য আমেরিকা এবং সিঙ্গাপুরের সার্ভারে জমা থাকে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, যে হেতু অ্যাপ দু’টির মালিকানা চিনা সংস্থার হাতে, তাই সে দেশে ভারতীয় ব্যবহারকারীদের তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে কি? ভারতীয় ব্যবহারকারীদের তথ্য অন্য কোনও দেশের সরকার ব্যবহার করছে কি? ভবিষ্যতে কোনও ‘থার্ড পার্টি’র সঙ্গে সেই তথ্য ভাগ করা হবে কি না সেই সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছে।

বেশ কিছু বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়া হিসেবে ‘অরকুট’ খুবই জনপ্রিয় ছিল। অরকুট যারা তৈরি করেছিলেন, তাঁরাই বানিয়েছেন এই হেলো। এই মুহূর্তে ভারতে প্রচুর মানুষ টিকটক এবং হেলো ব্যবহার করেন। ২০১৬ সালে ভারতে আত্মপ্রকাশ করেছিল এই দু’টি অ্যাপই। সরকারি নোটিস পেয়ে দুই সংস্থাই বিবৃতি দিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছে। সমাজের প্রতি যথেষ্ট দায়িত্ব সচেতন হিসাবে দাবি করে দুই সংস্থাই জানিয়েছে, তারা সরকারকে সব রকম তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি তারা জানিয়েছে, ভারতের বাজার অনেক শক্তিশালী। ডিজিটাল ভারতের অংশ হিসাবে তারা গর্বিত। আগামী তিন বছরে একশো কোটি ডলারও তারা বিনিয়োগ করতে চায় বলে জানিয়েছে টিকটক-হেলো। অ্যাপ দু’টির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে কি না, তা নির্ভর করছে তাদের জবাবের উপর।

আরও পড়ুন: তুমি যে এ ঘরে কে তা জানত...কাজিরাঙায় ঘরে ঢুকে সোজা বিছানায় বাঘ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE