সাফল্য মুছে দিল ইভিএম ঘিরে সব অভিযোগ।
অথচ, ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে দলের অন্দরেই সংশয় ছিল। কিন্তু আজ গুজরাতে বিজেপির সঙ্গে রীতিমতো পাল্লা দিয়ে আসন দখল করার পরেই ইভিএমের কারচুপি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে কংগ্রেস। দল এখন বলছে, কংগ্রেস ইভিএমের বিরোধী নয়। তাদের দাবি হল, ইভিএমের সঙ্গে যখন ভোটের স্লিপ বেরোনোর মেশিন (ভিভিপিএটি) রয়েছে, তখন বিভ্রান্তি এড়াতে সেই স্লিপও গুনে দেখা হোক। এতে কোনও বিতর্কের অবকাশ থাকবে না। কংগ্রেস নীরব থাকলেও ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে ছাড়েননি তাদের জোটসঙ্গী হার্দিক পটেল। বিশেষ করে বিজেপির সুরাত জয়ে রীতিমতো অবাক তিনি। হার্দিকের কথায়, ‘‘সুরাতের ব্যবসায়ীরা, পাতিদার সমাজ বিজেপির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। অথচ ভোটের ফলে কোনও প্রতিফলন ঘটেনি! এই জয় হল অর্থের অপব্যবহার ও ইভিএমে কারচুপির জয়।’’ তাই ইভিএমের বিরুদ্ধে সব বিরোধী দলকে এক হওয়ার জন্য সুর চড়িয়েছেন ওই পাতিদার নেতা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটিএম মেশিনে যখন কারচুপি হতে পারে, তখন ইভিএমে কেন হবে না!’’
উত্তরপ্রদেশে ভোটের পর থেকেই ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে বিরোধী দলগুলি। অভিযোগ ছিল, ইভিএমে দুর্নীতি করেই বিভিন্ন রাজ্যে সাফল্যের মুখ দেখছে বিজেপি। গুজরাতেও ইভিএমে কারচুপির আশঙ্কায় গত শুক্রবার রাজ্যের অন্তত ২৫ শতাংশ বুথে ইভিএমের পাশাপাশি ভিভিপিএটি যন্ত্রের মাধ্যমে গণনা করার দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সে রাজ্যের কংগ্রেস সভাপতি ভরত সিংহ সোলাঙ্কি। শীর্ষ আদালত সেই দাবি খারিজ করায় গতকাল পর্যন্ত ঘনিষ্ঠ মহলে ইভিএম নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু আজ ফলের পরে কংগ্রেস নেতৃত্বের নীরবতা দেখে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্জাব বা গুজরাতে ভাল ফল করলে ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কেন কোনও প্রশ্ন থাকে না কংগ্রেসের?’’
হার্দিক গত ক’দিন ধরেই দাবি করছিলেন, বিজেপি ইভিএমে দুর্নীতি করে জেতার পরিকল্পনা করেছে। আজ কংগ্রেসের প্রায় আশির কাছাকাছি আসন পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, ইভিএমে দুর্নীতি হয়েছে। দু’দলের মধ্যে ব্যবধান বেশি হলে সন্দেহ হবে, তাই কায়দা করে কংগ্রেসকে ওই সংখ্যক আসন পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ হার্দিকের দাবি, অন্তত ১০ থেকে ১২টি আসনে জয়ী প্রার্থীর ব্যবধান খুব কম ছিল। সঠিক ভাবে গোনা হলে ফলাফল অন্য হত বলেই বিশ্বাস তাঁর। তাই ইভিএম ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে আন্দোলনে নামবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আজকের এই রায়ের পর ইভিএম-বিতর্কের অবসান চেয়েছেন প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টি এস কৃষ্ণমূর্তি। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস যেমন ওই রাজ্যে নিজেদের আসন বাড়িয়েছে, তেমনই হেরে গিয়েছেন একাধিক বিজেপি মন্ত্রী। ইভিএম নিজের কার্যকারিতা ও নিরপেক্ষতা প্রমাণ করেছে। আশা করব, এ বার অন্তত এই বিতর্কের অবসান ঘটবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy