Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মনের ক্ষোভ তুলে ধরেই এই সাফল্য

স্পষ্ট হল, মোদীকে কী ভাবে টক্কর দিতে হবে, সে’টি ধরে ফেলেছেন রাহুল। সেই পথে হেঁটেই মাত্র তিন মাসের প্রচারে মোদীর গড়ে আর একটু হলে তাঁকে ধরাশায়ী করে ফেলেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:২৩
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদীকে ঠেকানোর পন্থাটা ধরে ফেলেছেন রাহুল গাঁধী।

এ’টিকেই গুজরাত ভোটের সব থেকে বড় ‘সাফল্য’ হিসেবে দেখছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সংখ্যার বিচারে গুজরাত বা হিমাচলপ্রদেশ— কোনওটিই জিততে পারেনি কংগ্রেস। খোদ রাহুল গাঁধীই সেই জনমত স্বীকার করেছেন। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের মতে, ‘ব্র্যান্ড মোদী’র পাশাপাশি ‘ব্র্যান্ড রাহুল’-এরও উদয় হল আজ। স্পষ্ট হল, মোদীকে কী ভাবে টক্কর দিতে হবে, সে’টি ধরে ফেলেছেন রাহুল। সেই পথে হেঁটেই মাত্র তিন মাসের প্রচারে মোদীর গড়ে আর একটু হলে তাঁকে ধরাশায়ী করে ফেলেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। নিজের রাজ্যেই সেঞ্চুরি করতে পারলেন না পরাক্রমশীল প্রধানমন্ত্রী। আবার হিমাচলে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী মুখকে পরাজিত করে দুর্নীতির দাগ লাগা দলের মুখ্যমন্ত্রীকে জিতিয়ে এনেছেন রাহুল।

কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘আজ গুজরাতে জিতলে ছবিটা অবশ্যই ভিন্ন হতো। রাহুলকে নিয়ে আরও হইচই হতো। কিন্তু যে ফল হল, তাতে বন্ধু দলগুলি তো বটেই, ঘোর বিরোধীরাও বলছেন রাহুলের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’’ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকেও আজ কবুল করতে হয়েছে, গুজরাতে কংগ্রেসের কৌশলের কারণেই বিজেপির আসন কমেছে। বিজেপি শরিক শিবসেনাও আজ বলেছে, মোদী-অমিত শাহের মতো পাহাড়ের সঙ্গে লড়াই করে গুজরাতে ভাঙ্গন ধরিয়েছেন রাহুল। যে রাজ্য থেকে মোদী গোটা দেশে ‘গুজরাত মডেল’ ছড়িয়েছিলেন, সেই রাজ্য আজ দেখাল সেখানকার জনতার ‘মন-কি-বাত’ কী।

কংগ্রেস নেতাদের মতে, গুজরাতে কোনও ওজনদার নেতা ছিলেন না। তার উপর নেতায় নেতায় লড়াই। মোদী জমানায় কার্যত ‘বি-টিম’ হয়েই ছিল কংগ্রেস। সেই কংগ্রেসকে একজোট করে মাথা তুলতে শিখিয়ে গোটা রাজ্যে যে ভাবে ঝড় তুলেছেন রাহুল, তাতে হাঁটু কেঁপে গিয়েছিল মোদী-শাহের। মোদীর উগ্র আক্রমণের মুখে কেবল উন্নয়নকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে গিয়েছেন রাহুল। আজ রাহুলও টুইটে দলের কর্মীদের বলেছেন, ‘‘আপনারা আমাকে গর্বিত করেছেন। যাঁদের সঙ্গে লড়াই করেছেন, তাঁদের থেকে আপনারা ভিন্ন। কারণ, মর্যাদার সঙ্গে ক্রোধকে মোকাবিলা করেছেন। সাহস ও শালীনতাই কংগ্রেসের বড় শক্তি।’’

নেতাদের রাহুল বলেছেন— মোদীকে মোকাবিলার এটাই পন্থা। অসম উন্নয়ন কিংবা দুর্নীতিগুলি নিয়ে লাগাতার বলে যাওয়া, মানুষের অসন্তোষ দৃঢ় ভাবে তুলে ধরা। তা হলেই মোদীর ফানুস ফাটানো যাবে। মোদীরা তখন মেরুকরণ কিংবা অন্য পথে ছোটাছুটি করবেন। কিন্তু মানুষের দুর্দশা নিয়ে সরব হলে সংখ্যাতেও সাফল্য আসবে কংগ্রেসের। কংগ্রেস নেতাদের মতে, এর সঙ্গেই দরকার আরও দুটি বিষয়। কংগ্রেসের সংগঠনকে আরও তৃণমূল স্তর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া আর বিরোধীদের আরও একজোট করা। তা হলেই কেল্লা ফতে।

এক বিরোধী নেতার মতে, ‘‘একটিই বিষয়। গুজরাতের লড়াইয়ে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার পরে রাহুলকে এ বার ৩৬৫ দিন রাজনীতিটা করে যেতে হবে। ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার দিন শেষ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE