Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গুজরাত পুলিশের জালে দুই ‘আইএস’ ভাই

গুজরাতে বড়সড় নাশকতার ছক বানচাল করা গিয়েছে বলে দাবি করল সে রাজ্যের পুলিশ। রাজকোট ও ভবনগর থেকে ওয়াসিম রামোদিয়া এবং নইম রামোদিয়া নামে দুই ভাইকে আজ গ্রেফতার করেছে গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা (এটিএস)। তাদের দাবি, এই দুই ভাই আইএসের অনুগামী।

ধৃত ওয়াসিম রামোদিয়া এবং নইম রামোদিয়া। ছবি: পিটিআই

ধৃত ওয়াসিম রামোদিয়া এবং নইম রামোদিয়া। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
আমদাবাদ ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:৩৬
Share: Save:

গুজরাতে বড়সড় নাশকতার ছক বানচাল করা গিয়েছে বলে দাবি করল সে রাজ্যের পুলিশ। রাজকোট ও ভবনগর থেকে ওয়াসিম রামোদিয়া এবং নইম রামোদিয়া নামে দুই ভাইকে আজ গ্রেফতার করেছে গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা (এটিএস)। তাদের দাবি, এই দুই ভাই আইএসের অনুগামী। আগামী দু’দিনের মধ্যে গুজরাতের বিভিন্ন ধর্মস্থানে হামলা চালানোর ছক কষছিল তারা।

ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়ায় বহু বার ‘লোন উল্ফ’ হামলা চালিয়েছে আইএসের অনুগামীরা। গুজরাত পুলিশের দাবি, সে ভাবেই হানা দিতে চেয়েছিল ওয়াসিম ও নইম। এই ধরনের হামলায় জঙ্গি সংগঠনের বড়সড় চক্র হাজির থাকার প্রয়োজন হয় না। দু’চার জন অনুগামী ইন্টারনেটের মাধ্যমে জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে হামলা চালায়। ফলে মূল সংগঠনের সঙ্গে যোগ খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। গোয়েন্দাদের মতে, সিরিয়া-ইরাকে ধাক্কা খাওয়ার পরে এই ধরনের হামলা আরও বাড়াতে চাইছে আইএস।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ওয়াসিম এবং নইমের কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর ও স্নাতক ডিগ্রি আছে। ফেসবুক, টুইটার, টেলিগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের মাধ্যমে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত তারা। ২০১৬ সালে আইএস অনুগামী হিসেবে পরিচিত বিতর্কিত মৌলবি মুফতি আব্দুস সামি কাশমিকে গ্রেফতার করে এনআইএ। ওয়াসিম-নইমের সঙ্গে তারও যোগাযোগ ছিল বলে দাবি পুলিশের।

আরও পড়ুন: দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ছয় ‘বন্ধু’

ধৃত দুই ভাইয়ের বাবা আরিফ রামোদিয়া ক্রিকেট আম্পায়ার ও সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। দুই ছেলের গ্রেফতারির পরে দৃশ্যতই বিস্মিত আরিফ বলেন, ‘‘ওরা যে জঙ্গিদের সঙ্গে যুক্ত তা আমরা আদৌ জানতাম না। এই ঘটনা আমার সম্মানকে একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দিল।’’

গুজরাত এটিএসের ডেপুটি সুপার কে কে পটেল জানিয়েছেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দুই ভাইকে ধরার জন্য শনিবার রাতে দু’টি দল গঠন করা হয়। প্রায় দু’বছর ধরে তাদের উপরে নজর রাখা হচ্ছিল। ধৃতদের কাছ থেকে বোমা, বারুদ, মুখোশ এবং জেহাদি বইপত্র মিলেছে। তাদের ল্যাপটপেও মিলেছে বোমা তৈরির তথ্য।

চলতি মাসের গোড়াতেই কেরল থেকে এক সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গিকে গ্রেফতার করে এনআইএ। আবার কেরল থেকেই নিখোঁজ ২১ জন আইএসে যোগ দিয়েছে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। তাদের মধ্যে হাফিজ বলে এক যুবক আফগানিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছে বলে দাবি তার পরিবারের। কেরল পুলিশ জানিয়েছে, হাফিজ ‘শহিদ’ হয়েছে বলে হোয়াট্‌সঅ্যাপ মেসেজ পেয়েছেন তার এক আত্মীয়। গত বছর রাজস্থানেও এক আইএস জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ বার আইএস গ্রেফতারির তালিকায় যুক্ত হয়ে গেল গুজরাতের নাম।

বছর দেড়েক আগে লিবিয়া থেকে কে রামমূর্তি নামে এক ভারতীয় চিকিৎসককে অপহরণ করেছিল আইএস। ১৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান তিনি। গত কাল দিল্লিতে রামমূর্তি জানিয়েছিলেন, আইএস এখন ভারতে নিজের শিকড় ছড়িয়ে দিতে চাইছে। সেই কারণে ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা এবং অর্থনীতির উপর নজর রাখছে তারা। আর তার পর দিনই গুজরাত এটিএসের জালে পড়ল দুই উচ্চশিক্ষিত যুবক। ফলে উদ্বেগটা থেকেই যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Brothers Gujarat Police ATS ISIS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE