রেনি-ডে হবে। শুক্রবার লাঞ্চের পরে হঠাৎ খবরটা নিয়ে এল সহকর্মী। বিশ্বাস করিনি। এ কি স্কুল নাকি? বেসরকারি অফিসে আবার রেনি ডে। কিন্তু আমার অবিশ্বাসকে পাত্তা না দিয়ে সরকারি ভাবে ঘোষণাটা হয়ে গেল বেলা দু’টোর পরেই।
বাইরের আকাশ ঘন অন্ধকার। বেলা দু’টোতেই হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলছে। অফিস থেকে বলা হল রাস্তার পরিস্থিতি খুব খারাপ। ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। দ্রুত বাড়ি ফিরে যান। বৃষ্টির জন্য ১৪৪ ধারা! ভূ-ভারতে কেউ শুনেছে! পরে জেনেছি, লোকজন যাতে গুড়গাঁওতে কম আসে তাই ওই পদক্ষেপ।
বুধবার রাত থেকে শুরু হয় অঝোরে বৃষ্টি। প্রথমে খারাপ লাগছিল না। কলকাতায় বন্ধুরা যখন আয় বৃষ্টি ঝেঁপে-র ফটো ফেসবুকে পোস্ট করছে, তখন দিল্লি খটখটে। অফিস থেকে বেরোতেই আঁতকে উঠলাম। পার্কিং লটের সামনে প্রায় হাঁটু জল। রাস্তায় নামতেই বুঝলাম ভোগান্তি আছে। দিল্লি-জয়পুর জাতীয় সড়কে সব স্থির। যন্ত্রণা বাড়িয়ে জল ঢুকে দাঁড়িয়ে গিয়েছে অনেক সিএনজি চালিত গাড়ি। ফলে এক বিচিত্র হযবরল অবস্থা।
আমার অফিস গুড়গাঁওয়ের ইফকো চকে। অন্য দিন যেতে সময় লাগে ১০ বা ১৫ মিনিট। আজ লাগল ঝাড়া দু’ঘন্টা। দিল্লিতে ঢুকে গতি সামান্য বাড়লেও, বিমানবন্দর পেরিয়ে বসন্ত কুঞ্জের রাস্তা ধরতেই ফের ঝাঁপ দিলাম যানজটের সমুদ্রে। বৃষ্টিতে খারাপ ট্র্যাফিক সিগন্যাল। যে যে দিকে খুশি গাড়ি ঢুকিয়ে দিচ্ছে। ফলে প্যাঁচ আরও জটিল হচ্ছে। সেই জট খুলে যখন পূর্ব দিল্লির পটপরগঞ্জে আমার বাড়িতে ঢুকলাম ততক্ষণে চার ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। গুড়গাঁওয়ের সহকর্মী যাঁরা সিগনেচার টাওয়ার, সেক্টর-৪৪ বা ৫৮-এর একটু দূরে থাকেন তাঁদের বাড়ি ফিরতে সময় লেগেছে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। গাড়িতে বসেই মোবাইল নেটে পড়ছিলাম, এই জল জমার দায় নিয়ে তরজায় নেমে পড়েছেন দিল্লি আর হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীরা। যদি নিকাশির উন্নতিতে মন দেওয়া হতো তা হলে বোধ হয় এই ভোগান্তি হতো না।
(লেখক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy