অনিতা কুমারস্বামী এবং রাধিকা কুমারস্বামী।
ছ’বছরের ছেলেটাকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে হাঁটা শুরু করেছিলেন মহিলা। স্বামীর হয়ে প্রচারে ঘুরেছিলেন গ্রামের পর গ্রাম। সালটা ১৯৯৬। সে বার কর্নাটকের কনকপুরা থেকে প্রথম বার সাংসদ হয়েছিলেন এইচ ডি কুমারস্বামী। তখন তিনি অবিভক্ত জনতা দলের। বছর দশেকের মধ্যে বিধানসভা হয়ে সটান মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে। কাল, বুধবার ফের ওই পদে শপথ নিতে চলেছেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার পুত্র।
ছ’বছরের ওই ছেলেটা এখন বছর আঠাশের যুবক। চুটিয়ে কন্নড় ছবিতে অভিনয় করছেন নিখিল কুমার।
কিন্তু এখনও গ্রাম থেকে গ্রাম, প্রায় সবক’টা বাড়ির চৌকাঠ ছুঁয়ে যাচ্ছেন নিখিলের মা, এইচ ডি-র বড়বৌ পঞ্চান্ন ছুঁইছুঁই অনীতা কুমারস্বামী।
এ বার নিজের জন্য ভোট চাইতে। দু’টি আসন থেকে লড়ে জেতা কুমারস্বামী রামনগরের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সদ্য। সেই রামনগর, যেখানে শুটিং হয়েছিল ‘শোলে’র। তাঁর দল জেডি (এস) বলছে, এই আসনের উপনির্বাচনে অনীতার জেতা শুধুই সময়ের অপেক্ষা। আর তা হলে, ফের বিধানসভায় একসঙ্গে বসতে চলেছেন স্বামী-স্ত্রী। ২০০৮-এ এমনই এক উপনির্বাচনে টুমকুর বিধানসভা আসনে জিতে প্রথম বার বিধানসভায় এসেছিলেন অনীতা।
আরও পড়ুন:
জোট মসৃণ, আজ শপথ নেবেন কুমারস্বামী
এক মুখ্যমন্ত্রীর শপথই যুদ্ধের মঞ্চ ’১৯-এর
আরও খানিকটা আগেই অবশ্য নিজের জন্য প্রচারে নামার কথা ছিল অনীতা কুমারস্বামীর। এ বারের ভোটে চান্নাপটনা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে টিকিটের আশা করেছিলেন তিনি। পাননি। কারণ, পরিবার থেকে আরও কেউ ভোটে দাঁড়াক, সেটা স্বামী-শ্বশুর কেউই চাননি। তবু ভেঙে পড়েননি অনীতা। হাঁটার পুরনো সেই অভ্যেস যাবে কোথায়! স্থানীয়রা বলেন, বরাবরই কম কথার মানুষ তিনি। বরং শুনতে বেশি ভালবাসেন। ২০১৩-১৪-য় দু’বার ভোটে হেরেছেন তিনি। এক বার বিধানসভা, আর এক বার লোকসভা ভোটে। তবু দাঁত কামড়ে পড়ে থেকেছেন দলের স্বার্থে। এ বারের ভোটে পুরনো মাইসুরু অঞ্চলের অন্তত পাঁচটি আসনে অনীতার কারণেই জয় এসেছে বলে মনে করে দল।
তবে ২০০৬ সালে চিত্রতারকা রাধিকাকে গোপনে বিয়ে করেন কুমারস্বামী। তা নিয়ে এতদিন প্রকাশ্যে চর্চা না হলেও জয়ের পর কুমারস্বামী, রাধিকা এবং তাঁদের কন্যার ছবি ‘ভাইরাল’ হয়েছে ইন্টারনেটে। কন্নড় অভিনেত্রী রাধিকা ১৬ বছর বয়সে ফিল্মে আসেন। তামিল ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। তবে হালে তেমন পানি পাচ্ছিলেন না। যদিও এখন শোনা যাচ্ছে, ফিল্মে ‘মহাপ্রত্যাবর্তন’ হবে রাধিকার।
রাধার আগমন অবশ্য ছায়া ফেলেনি মুখচোরা অনীতার রাজনৈতিক জীবনে। একটি টিভি চ্যানেলও চালান কুমারস্বামীর প্রথমা। ছবি প্রযোজনা করেন। তাঁর নামে পেট্রল পাম্পও আছে। দল এবং পরিবারের যদিও দাবি, অনীতার ধ্যানজ্ঞান রাজনীতিই। ২২টা বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে পড়ে থেকেছেন ময়দানে। আর বিপদে-আপদে পরামর্শ চাইতে ছুটে যান শ্বশুরমশাইয়ের কাছে। রাজনীতিতে তিনিই যে তাঁর বরাবরের আদর্শ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy