Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জৌলুস অটুট গৌতম, রাহুলের পুজোয়

জেলার সব থেকে পুরনো সর্বজনীন হাইলাকান্দি যুব সমিতির পুজো। এ বার ৭৫ বছরে পা দিল। অর্থাৎ যুব সমিতির এ বার প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী বর্ষ। তবে জেলার মানুষের কাছে এর খ্যাতি গৌতম রায়ের পুজো হিসেবেই।

হাইলাকান্দির যুব সমিতির মণ্ডপ। — নিজস্ব চিত্র

হাইলাকান্দির যুব সমিতির মণ্ডপ। — নিজস্ব চিত্র

অমিত দাস
হাইলাকান্দি শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১২
Share: Save:

জেলার সব থেকে পুরনো সর্বজনীন হাইলাকান্দি যুব সমিতির পুজো। এ বার ৭৫ বছরে পা দিল। অর্থাৎ যুব সমিতির এ বার প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী বর্ষ। তবে জেলার মানুষের কাছে এর খ্যাতি গৌতম রায়ের পুজো হিসেবেই। পুজো কমিটির সভাপতি তিনি, আর সম্পাদক তাঁর পুত্র রাহুল রায়। গৌতমবাবুর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা আড়ালে কটাক্ষ করেন রায়বাড়ির পুজো বলেও। হবে নাই বা কেন! আজ থেকে ৭৫ বছর আগে যুব সমিতির পুজোর পত্তন করেছিলেন গৌতমবাবুর পিতা, প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক সন্তোষ রায়। বংশ পরম্পরায় পুজো সভাপতির পদটি রায় পরিবারের জন্য ‘সংরক্ষিত’।

এমন পুজোর জৌলুস তো থাকবেই। তবে অনেকে এ বার ভেবেছিলেন, রাজ্যে ক্ষমতার ব্যাটন হাত বদল হয়েছে। গৌতমবাবুর মন্ত্রিত্ব গিয়েছে। এমনকী বিধায়ক পদও খুইয়েছেন। নির্বাচনে হেরেছেন পুত্র রাহুলও। সুতরাং তার প্রভাব হয়তো বা যুব সমিতির পুজোয় পড়তে পারে। ভুল ভেবেছিলেন। এ বারেও যুব সমিতির বাজেট জেলার আর পাঁচটা সর্বজনীনের থেকে বেশি। কত? সঠিক হিসেব কেউই দিচ্ছেন না। তবে সমিতির সদস্যদের মুখে মুখে তা ২০-২৫-৩০ লক্ষ, যা কিছু হতে পারে। এক সদস্যের কথায়, বাজেট কত সেটা বড় কথা নয়। যেটা দেখার সেটা এ পুজোর জাঁকজমক। এবং স্রেফ হেরে গিয়েছেন বলে জাঁকজমকে কোনও খামতি রাখতে চান না গৌতমবাবু। বিশেষ করে প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী বর্ষ বলে কথা!

৭৫ বছরে এই পুজোর জৌলুস বেড়েছে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। গত ক’বছর ধরে যুব সমিতির পুজো বরাক উপত্যকার বিগ বাজেটের পুজোগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। কেমন হবে প্রতিমা? প্রতিমা শিল্পী, পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা উত্তম জানা জানালেন, কয়েক লক্ষ সাদা পুঁতি বা নকল মুক্তো দিয়ে এই প্রতিমা গড়া হচ্ছে। প্রতিমার পরিধেয়ও হবে মুক্তোখচিত। স্বাভাবিক ভাবেই অলংকার ‘মুক্তোর’। উপত্যকার মানুষকে এ বার যুব সমিতি এক অপরূপ প্রতিমা উপহার দেবে বলে জানালেন শিল্পী। পাশাপাশি শ্বেতশুভ্র রাজপ্রাসাদের আদলে গড়া হচ্ছে মণ্ডপ। হাইলাকান্দি শহরের বিবেকানন্দ রোডের টাউন হলে আয়োজিত এই পুজোর মণ্ডপ হবে ৬০ ফুট, অর্থাৎ ছ’তলা উঁচু। পুরোদমে চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। প্রাসাদের গায়ে থাকছে প্রাচীন ভারতীয় স্থাপত্য কলার নিদর্শন। মণ্ডপ তৈরির দায়িত্বে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপ থেকে আসা বুলু সাধুখাঁ। তাঁর কথায়, মণ্ডপের গায়ে চিত্রিত থাকবে জীবন-চক্র। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের বেড়ে ওঠা প্রতিফলিত হবে ‘প্রাসাদ গাত্রে’। বুলুবাবু গত এক মাস ধরে মণ্ডপের কাজ করে যাচ্ছেন।

পুজো পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রাজেশ সাহা জানালেন, মণ্ডপ এবং প্রতিমার পাশাপাশি আলোর ঝর্ণা বইয়ে দেওয়া হবে এ বারের পুজোয়। আলোকসজ্জার জন্যও সেই নবদ্বীপ থেকে আসছেন আলোকশিল্পী অজয় বর্মন। দশ জনের একটি দল নিয়ে অজয়বাবু যে কোনও দিন এসে পড়বেন। এরই পাশাপাশি, পুজোর দিনগুলিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়েছে। একেবারে বীরভূম থেকে বাউল শিল্পীদের আটজনের একটি দল আসছে। সব মিলিয়ে জমজমাট যুব সমিতি। খামতি নেই কোথাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hailakandi district
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE