Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National news

'ভুল পথে গিয়েছিলাম, এটা জিহাদ নয়', দল ছাড়ার পর স্বীকারোক্তি কিশোর জঙ্গির

ঠিক ১০ দিন পর তাঁর একটা ছবি দেখে আত্মীয়-পরিজন রীতিমতো বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন।কালাশনিকভ হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন রেহান! এর কিছু দিন পর খবর পাওয়া যায় তেহরিক উল-মুজাহিদিন জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছেন রেহান।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:১৭
Share: Save:

একমাস আগেও দম ফেলার সময় ছিল না। একের পর এক টিউশন নিতেন একাদশ শ্রেণির ছাত্র। নিট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতেও শুরু করেছিলেন।তারপর হঠাৎই একদিন নিখোঁজ হয়ে যান।তার ঠিক ১০ দিন পর তাঁর একটা ছবি দেখে আত্মীয়-পরিজন রীতিমতো বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন।কালাশনিকভ হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন রেহান! এর কিছু দিন পর খবর পাওয়া যায় তেহরিক উল-মুজাহিদিন জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছেন রেহান।

পুলিশ চেক-পয়েন্টে গ্রেনেড হামলার অপরাধে সম্প্রতি তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রেহান বর্তমানে শ্রীনগরের জুভেনাইল হোমে রয়েছেন। সেখান থেকেই ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রেহান জানান, জঙ্গি দলে যোগ দেওয়াটা আসলে তাঁর ভুল পথে যাওয়া। রেহান বলেন, ‘‘আমি অনুভব করতে শুরু করি, এটা ভুল পথ, এটা জিহাদ নয়। আমরা কখনই সাধারণ মানুষের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাঁদের বাড়িতে আমাদের আশ্রয়ের জন্য জোরজবরদস্তি করতে পারি না।’’ওই স্বীকারোক্তি ভিডিয়োয় রেহান এটাও জানান যে কীভাবে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। ভুল বুঝতে পারার পরও তাঁকে বাড়ি ফিরতে দেননি জঙ্গিরা। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা-মা একটা ভিডিয়ো বার্তায় জিহাদে যোগ দেওয়ার বিরুদ্ধে আমাকে বার্তা দিয়েছিলেন। আমার মায়ের হার্ট অ্যাটাক হয়। আমি জঙ্গিদের বলেছিলাম বাড়ি যেতে চাই। কিন্তু তারা ফিরতে দেয়নি।’ এবং সেই দিনই নাকি কালাশনিকভ হাতে তাঁর ওই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

১৭ অক্টোবর পাত্তানের পুলিশ চেক-পয়েন্টে গ্রেনেড হামলা করার জন্য গ্রেফতার হন রেহান। পুলিশরে সঙ্গে যুদ্ধে মৃত্যু হয় রেহানের সহকর্মী শওকত আহমেদ নামে আর এক জঙ্গির। সেই ঘটনা নিয়েও দুঃখপ্রকাশ করেন রেহান। সে দিন চোখের সামনে নিরাপরাধ পুরুষ-মহিলা-শিশুদের জখম হতে দেখেছিলেন। আর সেই ঘটনাই নাকি ভীষণ ভাবে নাড়িয়ে দিয়েছিল রেহানকে। নিরাপরাধ মানুষের ক্ষতি করা কখনও জেহাদ হতে পারে না, বুঝতে পারেন তিনি। ওই ভিডিয়ো বার্তায়তাঁর মতো অন্যদেরও সতর্ক করেছেন রেহান। জঙ্গি গোষ্ঠীতে নাম লেখানোর আগে একবার ভেবে দেখার অনুরোধ করেছেন।

আরও পড়ুন: কলকাতা-সহ সব বড় শহরের আকাশে ক্ষেপনাস্ত্র-রোধী ঢাল তৈরি করছে ভারত

তেহরিক-উল-মুজাহিদিনের ওয়েবসাইটে রেহানকে হার্ডকোর জঙ্গি বলে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু গ্রেফতারের পর রেহানকে তাদের সদস্য মানতে চায়নি ওই জঙ্গিগোষ্ঠী। পুলিশ জানিয়েছে, বুরহান ওয়ানির গ্রামেরই বাসিন্দা রেহান। গ্রেনেড হামলার দিন পুলিশের গুলিতে মৃত জঙ্গি শোওকতের সঙ্গে অনেক দিনের পরিচয় রেহানের। শওকতই তাঁকে জঙ্গিগোষ্ঠীতে নিয়ে এসেছিল। ডক্টর ইশাক নামে একজনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পাত্তানে গ্রেনেড হামলার সময় তাঁরা শ্রীনগর থেকে অবন্তিপুরে যাচ্ছিলেন। শুধু রেহানই নন, প্রায় একই সঙ্গে তাঁর মতো আরও ১৫-১৬ জন কিশোর যাঁরা এতদিন পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তেন, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তাঁরাও এখন জঙ্গি দলে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE