সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবিই দেখা যাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত।
পরনে কালো পোশাক। মাথা ঢাকা কালো ফেট্টিতে। গোঁফ-দাড়ির আড়ালে ১৭ বছরের সরল মুখ! মুঠো করা ডান হাতের তর্জনী উঁচিয়ে রাখা। কোমরবন্ধের সঙ্গে বাঁধা অস্ত্রশস্ত্রের ব্যাগ।
ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর পতাকার সামনে এ ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে এক কিশোরকে। ওই কিশোরের নাম এহতেশাম বিলাল সফি। সম্প্রতি সে যোগ দিয়েছে জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর কাশ্মীর শাখায়। ফেসবুক-সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকেই নিখোঁজ সফি। গ্রেটার নয়ডার সারদা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্র সফি আদতে শ্রীনগরের বাসিন্দা। দিল্লি যাবে বলে গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বেরিয়েছিল সে। তার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দিল্লি মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু এক দিন কেটে গেলেও হস্টেলে ফিরে আসেনি সফি। এমনকি তার খোঁজও মেলেনি। সফির বাড়িতেও খবর যায়। তবে কোথাও তার সন্ধান মেলেনি। এর পর পুলিশে খবর দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গ্রেটার নয়ডা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করার পাশাপাশি, শ্রীনগর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু, সফির খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুন
বাঙালিদের উপরে হামলা চালাতে পারে আলফা, সাত দিন আগেই সতর্ক করেছিল দিল্লি!
সফি নিখোঁজ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর তার মোবাইলের লোকেশনের সন্ধান পায় পুলিশ। মোবাইল টাওয়ারের সূত্র ধরে পুলিশ আধিকারিকেরা জানতে পারেন, সেটি শ্রীনগরে রয়েছে। সেই তথ্য যাচাই করে পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার, ২৯ অক্টোবর শ্রীনগরে তার বাবার সঙ্গে শেষ বারের মতো কথা বলেছিল সফি।
গ্রেটার নয়ডার নলেজ পার্ক থানার আধিকারিক অরবিন্দ পাঠক বলেন, “এহতেশামের মোবাইল লোকেশন শ্রীনগর দেখাচ্ছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সেখান থেকেই বাবার সঙ্গে কথা বলেছিল সে। সফি তার বাবাকে জানিয়েছিল, সে দিল্লি মেট্রোতে চড়ে তার ইউনিভার্সিটিতে ফিরছে। এর পর থেকেই তার মোবাইল সুইচড অফ হয়ে যায়।” ওই পুলিশ আধিকারিক আরও বলেন, “এর থেকেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, সে সময় কাশ্মীরে ছিল সফি। কিন্তু বাবাকে মিথ্যে কথা বলেছিল সে।”
আরও পড়ুন
‘সামনে গুলিবিদ্ধ মানুষগুলো তখন হামাগুড়ি দিয়ে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে, আর আমি...’
ওই ঘটনার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে ওঠে আইএস-এর পতাকার সামনে দাঁড়ানো এক কিশোরের ছবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোস্টে দাবি, সেটি আসলে সফির ছবি। আইএস-এ যোগ দিয়েছে সে। ওই ছবির কিশোর সফি কি না, তা নিয়ে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়।
তবে ২৮ অক্টোবর থেকেই গোটা ঘটনার উপরই নজর রাখছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কোয়া়ড (এটিএস)। এটিএস-এর আইজি অসীম অরুণ বলেন, “আমরা জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।” সফি যে কাশ্মীর উপত্যকাতেই রয়েছে, তেমনটাই অনুমান পুলিশের। দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলাতেই শেষ বারের মতো তার মোবাইল লোকেশন ছিল। নয়ডা পুলিশের দাবি, দিল্লির বিমানবন্দর থেকে ২৮ অক্টোবর দুপুরেই শ্রীনগরের উদ্দেশে রওনা দেয় সফি। পর দিনই সে পুলওয়ামায় পৌঁছয়।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy