কুমারস্বামীর কান্না।
ফের প্রকাশ্যে চলে এল কর্নাটকে জেডিএস-কংগ্রেস জোট সরকারের কোন্দল। মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী জানালেন, তিনি আদৌ খুশি নন।
বিধানসভা ভোটের পরে বিজেপিকে রুখতে জেডিএস ও কংগ্রেস হাত মিলিয়ে সরকার গড়েছে ঠিকই। কিন্তু জোট শরিকদের
মধ্যে মন্ত্রিসভার গঠন ও বাজেট বরাদ্দের মতো বিষয় নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে বারবার। আগেও কুমারস্বামী বলেছিলেন, ‘‘আমি কংগ্রেসের দয়ায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছি।’’ পরে অবশ্য সেই বক্তব্য থেকে পিছু হটেন তিনি।
গত কাল বেঙ্গালুরুতে কুমারস্বামীর সংবর্ধনা সভার আয়োজন করে জেডিএস। সেই দলীয় সভাতে কেঁদে ফেলেন কুমারস্বামী। তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের এক ভাই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছে বলে আপনারা খুশি। কিন্তু আমার মনে আনন্দ নেই। এই জোট সরকারের যন্ত্রণা বিষকণ্ঠ
হয়ে পান করছি।’’ কুমারস্বামীর কথায়, ‘‘প্রয়োজনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দিতে পারি। আমি ক্ষমতালোভী নই। মানুষের সেবা করব বলেই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘প্রচারের সময়ে রাজ্যের সব প্রান্তের মানুষ আমাকে ভালবেসেছেন। কিন্তু ভোট দেওয়ার সময়ে তাঁরা আমাদের প্রার্থীদের ভুলে গিয়েছেন।’’ উপস্থিত জনতা চিৎকার করে জানায়, ‘‘আমরা আপনার সঙ্গে রয়েছি।’’
কুমারস্বামীর মন্তব্যে স্পষ্টতই অস্বস্তিতে কংগ্রেস। উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের মতে, ‘‘কুমারস্বামী এ কথা কেন বলছেন? মুখ্যমন্ত্রীকে সব সময়ে খুশি থাকতে হবে। তবেই আমরা খুশি থাকব।’’ কংগ্রেসের লোকসভার নেতা এবং কর্নাটকের প্রবীণ রাজনীতিক মল্লিকার্জুন
খড়্গের মতে, ‘‘কংগ্রেসের হাতে জেডিএসের চেয়ে বেশি আসন রয়েছে। এখন কুমারস্বামীকে সব পরিস্থিতিতে সাহসী হয়ে চলতে হবে। মানুষ তাঁকে ভোট দেননি, এমন কথা বলে লাভ নেই।’’ পরে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করে জেডিএসও। দলীয় মুখপাত্র
প্রসাদ গৌড়া বলেন, ‘‘বিজেপির আক্রমণের ফলেই মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ। মেঙ্গালুরুতে মৎস্যজীবীরা বিজেপির নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এতে রাজ্য সরকারের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।’’
কিন্তু আজ কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন কুমারস্বামীর বাবা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়াও। বাজেটে উত্তর কর্নাটকের গদগ অঞ্চলের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী এইচ কে পাটিলের মতো কয়েক জন কংগ্রেস বিধায়ক। দেবগৌড়ার কথায়, ‘‘১৯৫৬ সাল থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য বরাদ্দ নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হোক। তার পর তা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। তাহলেই পাটিল যখন মন্ত্রী ছিলেন তখন গদগ অঞ্চলের জন্য কী বরাদ্দ হয়েছিল তা জানা যাবে।’’
কুমারস্বামী বিজেপিকে কোনও ইঙ্গিত দিচ্ছেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে কংগ্রেসের একাংশের মনে। তাদের আশঙ্কা, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে হটানো না গেলে কুমারস্বামী বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন। তাই তাঁর মন আরও বুঝে চলার প্রয়োজন রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy