মঞ্জুনাথ স্বামী মন্দিরে কুমারস্বামী।
ক্ষমতায় আসার তিন দিনের মধ্যে আস্থা ভোটে জিতল কর্নাটকের কংগ্রেস-জেডি(এস) জোট সরকার। স্পিকারের পদটি রইল কংগ্রেসের রমেশ কুমারেরই হাতে। কোনও ক্ষেত্রেই সংখ্যার লড়াইয়ের দরকার পড়ল না। মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর আনা আস্থা প্রস্তাব আজ পাশ হয় ধ্বনি ভোটে। কারণ, আস্থা প্রস্তাব আনার আগেই বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান বিজেপির বিধায়কেরা। এর আগে জেতার মতো সংখ্যা নেই বুঝে স্পিকার পদের জন্য জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রও ফিরিয়ে নেন বিজেপির প্রার্থী। ক’দিন আগে বিএস ইয়েদুরাপ্পা আস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি এড়িয়ে ইস্তফা দিয়েছিলেন, সংখ্যা তাঁর পক্ষে নেই বুঝে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর কুশলী চালে ৫৫ ঘণ্টার মধ্যে সরকার খোয়ানোর এক সপ্তাহের মধ্যে ফের বিজেপি মুখ পোড়াল শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসে।
গত কাল রাত পর্যন্ত বিজেপির সিদ্ধান্ত ছিল, পাঁচ বারের বিধায়ক এস সুরেশ কুমারকে স্পিকার পদে দাঁড় করিয়ে কর্নাটকে শেষ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে তারা। কিন্তু আজ সকালে বিধানসভায় স্পিকার নির্বাচনের ঠিক আগে নাটকীয় ভাবে সুরেশ জানিয়ে দেন, লড়াই থেকে তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তেমনই নির্দেশ। বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা, সুরেশকে জেতানোর মতো সংখ্যা ছিল না।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, গত কাল রাতে তবে কোন হিসেবে স্পিকার পদে লড়াইয়ের কথা ভাবা হয়েছিল? রাতারাতি যে অঙ্কটা বদলাচ্ছে না, তা কি বিজেপি নেতৃত্বের অজানা ছিল? ফলে গোটা বিষয়টিকে বিজেপির কৌশলগত ব্যর্থতা বলেই মনে করছেন রাজনীতির লোকজন।
স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রের খবর, রাজ্য স্তরের নেতাদের অতিরিক্ত উৎসাহের কারণেই স্পিকার পদে লড়াইয়ের বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন অমিত শাহেরা। শেষ মুহূর্তে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারেন, লড়ে হেরে গেলে (যেটা অবশ্যম্ভাবী), বিড়ম্বনা বাড়বে বৈ কমবে না। তাই শেষ মুহূর্তে এই বোধোদয়। এবং একই কারণে আস্থাপ্রস্তাব নিয়েও ভোটাভুটির আগে ওয়াকআউট করে সংখ্যার লড়াই আরও এক বার এড়িয়ে যায় বিজেপি।
ছ’মাস কুমারস্বামী সরকারের গরিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। তাই ঘোড়া কেনাবেচা নিয়ে বদনামের বোঝা আপাতত আর বাড়াতে চাইছে না বিজেপি। বরং রাজনৈতিক ভাবে ক্ষমতাসীন জোট তথা কুমারস্বামী সরকারকে চাপে রাখাই এখন তাদের কৌশল। ইয়েদুরাপ্পা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘এই কুমারস্বামীই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি থেকে নেওয়া ৫৩ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ মকুব করে দেবেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি কথা না রাখলে রাজ্য জুড়ে আন্দোলন শুরু হবে।’’
শক্তিশালী বিরোধী পক্ষের এমন চাপের মুখে কত দিন টিকবে তাঁর সরকার? কুমারস্বামীর বক্তব্য, ‘‘পুরো পাঁচ বছর। এই সরকার কাজ করবে মানুষের জন্য।’’ ২৪ ঘণ্টাতেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে কি না তা না বললেও কুমারস্বামী কৃষিঋণ নিয়ে প্রতিশ্রুতি রাখবেন বলে জানিয়েছেন এ দিন। কর্নাটক বিধানসভায় মোট আসন ২২৪। কুমারস্বামী সরকারের শক্তি ১১৬। কংগ্রেসের ৭৮, জেডি(এস)-এর ৩৬, বিএসপির ১ জন ছাড়াও সঙ্গে আছেন কেপিজেপি-র একমাত্র নির্দল বিধায়ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy