প্রায় ছ’দিন ধরে টানা বৃষ্টি। থামার এতটুকুও লক্ষণ নেই। প্রবল বর্ষণে কার্যত অচল বাণিজ্যনগরী।
রবিবার অর্থাৎ আগামিকালই বর্ষা আসার কথা মুম্বইয়ে। কিন্তু ক্যালেন্ডারের কথা কবেই বা শুনেছে প্রকৃতি। প্রবল বর্ষণ ধীরে ধীরে বিপর্যয়ের চেহারা নিতে পারে, এমনটা আঁচ করে শনিবার সকাল থেকেই তাই মুম্বইয়ের সমুদ্রসৈকতগুলিতে ভারতীয় নৌবাহিনীর তরফে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। এলফিনস্টোন রোড-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা।
দক্ষিণ মুম্বইয়ের হাল আরও খারাপ। ফুরাচ্ছে খাবার। জলসংকটে ভুগছেন এলাকার বাসিন্দারা। বৃহন্মুম্বই কর্পোরেশন জানিয়েছে, বাসিন্দারা ঘরে থাকলেই নিরাপদে থাকবেন। স্কুল-কলেজ যেতেও নিষেধ করা হয়েছে। বানভাসি হওয়ার মুখে বিমানবন্দরও।বাতিল হয়েছে চারটি আন্তর্জাতিক উড়ান। রাস্তাঘাট পিচ্ছিল হওয়ায় পুলিশের তরফে গাড়ি চালানোর সময় সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মুম্বইকরদের।
বর্ষণে নাজেহাল মুম্বইকররা।ছবি: পিটিআই
আরও খবর:পরীক্ষায় ১০০ শতাংশের বেশি নম্বর! হ্যাঁ সত্যিই, সেই বিহারে
মুম্বইয়ের সেন্ট্রাল রেলওয়ের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১০ জুন রবিবার রেললাইন মেরামতের কাজের জন্য সকাল ১১টা ৩৪ মিনিট থেকে বিকেল ৪টে ৪৭ মিনিট পর্যন্ত ছত্রপতি মহারাজ শিবাজি টার্মিনাস স্টেশন থেকে ভাসি, বেলাপুর, পানভেলগামী ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে। বান্দ্রা, আন্ধেরি, গোরেগাঁও যাওয়ার ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে সকাল ৯টা ৫৩ মিনিট থেকে বিকেল ৩টে ২০ মিনিট পর্যন্ত।
এমনই হাল মুম্বইয়ের রাস্তাঘাটের।ছবি: পিটিআই
একে লাইন মেরামত, তার উপরে বৃষ্টির কারণে প্রতিটি ট্রেন অন্তত ১৪-১৫ মিনিটে দেরিতে চলা, সব মিলিয়ে রীতিমতো অসহায় অবস্থা নিত্যযাত্রীদের। পারেল, দাদর, মাতুঙ্গা, মুলুন্দ, ভিখরোলি, ঘাটকোপার, কুরলা, দিবা স্টেশনে প্রতিটি ট্রেন দেরিতে চলছে। রেললাইলে জল জমায় এই বিপত্তি।
দেখুন ভিডিয়ো:
ইতিমধ্যেই জল জমেছে মুম্বই, কান্দিভালি, বোরিভেলি, আন্ধেরি ও ভাণ্ডপ এলাকায়। মহারাষ্ট্রের নাসিক শহরেও প্রতিটি নিচু এলাকা জলমগ্ন। পারভানি, আহমেদনগর, রায়গড়, সাংলি, পুণে, কোলাপুর, কোলাবা, ওয়ারলি, ট্রম্বে, মালাড-এ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে।
এভাবেই চলছে যাতায়াত।ছবি: পিটিআই
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বিশেষ বাহিনী পারেল, মানখুর্দ, আন্ধেরি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে (পশ্চিম শহরতলি)-তে মোতায়েন করা হয়েছে। ত্রাণসামগ্রী, শুকনো খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে তাদের কাছে। মু্ম্বইয়ের দমকল দফতরের বিশেষ বন্যা মোকাবিলা বাহিনীর ছ’টি টিমকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্যার্তদের আশ্রয়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি স্কুল।