Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিপর্যস্ত বিহার, ঝড়ের দাপট এ রাজ্যেও

বিহারে কালান্তক হয়েই দেখা দিল কালবৈশাখী। কাল রাত দশটা নাগাদ স্রেফ মিনিট চারেকের এই তীব্র ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জন। জখম শতাধিক। শুধু পুর্ণিয়া জেলাতেই মৃতের সংখ্যা ৩০। ন’জনের প্রাণহািন হয়েছে মাধেপুরায়। মধুবনীতে মৃতের সংখ্যা ২ ও সীতামঢ়ীতে ১। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেই রাজ্য প্রশাসনের আশঙ্কা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিহারে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এ বিষয়ে নীতীশ কুমারের সঙ্গেও কথা বলে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।

মঙ্গলবার গভীর রাতের ঝড়ে বিহারের মতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মালদহ এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাও। ঝড়ের তাণ্ডবে মালদহে অন্তত চার হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও বাড়ির টিনের চালা উড়ে ঝুলতে দেখা গিয়েছে গাছে। কোথাও গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বন্ধ রাস্তা। ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ছবি: বাপি মজুমদার।

মঙ্গলবার গভীর রাতের ঝড়ে বিহারের মতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মালদহ এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাও। ঝড়ের তাণ্ডবে মালদহে অন্তত চার হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও বাড়ির টিনের চালা উড়ে ঝুলতে দেখা গিয়েছে গাছে। কোথাও গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বন্ধ রাস্তা। ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ছবি: বাপি মজুমদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটনা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪৬
Share: Save:

বিহারে কালান্তক হয়েই দেখা দিল কালবৈশাখী। কাল রাত দশটা নাগাদ স্রেফ মিনিট চারেকের এই তীব্র ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জন। জখম শতাধিক। শুধু পুর্ণিয়া জেলাতেই মৃতের সংখ্যা ৩০। ন’জনের প্রাণহািন হয়েছে মাধেপুরায়। মধুবনীতে মৃতের সংখ্যা ২ ও সীতামঢ়ীতে ১। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেই রাজ্য প্রশাসনের আশঙ্কা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিহারে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এ বিষয়ে নীতীশ কুমারের সঙ্গেও কথা বলে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।

ঘটনার শুরু কাল রাত ১০টা নাগাদ। ৭০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড় প্রথম আছড়ে পড়ে পুর্ণিয়ায়। সঙ্গে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টিপাত। যার পরিমাণ ছিল গড়ে ৩০ মিলিমিটার। প্রতিটি ক্ষেত্রে ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিল ৩ থেকে ৪ মিনিট। বিভিন্ন জায়গায় ঝড় তাণ্ডব চালিয়ে গাছ উপড়ে, ঘরবাড়ির চাল উড়িয়ে নিয়ে যায়। ধসে পড়ে দেওয়াল। পুর্ণিয়া থেকে ঝড় একে একে বিপর্যয় ঘটায় মাধেপুরা, ভাগলপুর, সীতামঢ়ী, মধুবনী-সহ বিভিন্ন জেলায়। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের প্রধান সচিব ব্যাসজী বলেন, “মৃতদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানার জন্য জেলাশাসকরা সমীক্ষা চালাচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আজ হেলিকপ্টারে করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। পরে পটনায় তিনি সাংবাদিকদের জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জেলাশাসকদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঠাণ্ডা হাওয়া হঠাত্ করেই সরে যাওয়ায় ও সেই জায়গায় দ্রুত গরম হাওয়া ঢোকার সময় এই দুইয়ের সংঘর্ষের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা আশিস সেন বলেন, “সাড়ে সাতটা নাগাদ প্রথম ঝড়ের আগাম ইঙ্গিত পাওয়া যায়। হঠাত্‌ করেই এই ধরনের বিপর্যয় নেমে আসে। ফলে সাধারণত এর খবর খুব বেশি আগে পাওয়া যায় না।” তবে কয়েক ঘণ্টা আগে এই ঝড়ের খবর জানতে পারায় আবহাওয়া দফতর প্রয়োজনীয় সতর্কতা জারি করেছিল বলে আশিসবাবু জানান। আশিসবাবু বলেন, “পূর্ণিয়া এবং ভাগলপুরে তখনই সতর্কতা জারি হয়। প্রতিটি ঘরে মোবাইলে সতর্কবার্তা পাঠানোর কোনও পরিকাঠামো নেই। তার ফলে এই প্রাণহানি।” ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে ফের এই ‘থান্ডার স্কোয়াল’ হানা দিতে পারে বলে জানিয়ে আশিসবাবু বলেন, “উত্তর-পূর্ব বিহারে ফের এই ঝড় আছড়ে পড়তে পারে।” পূর্ণিয়ার জেলাশাসক বলেন, “বাইশির-ডগরয়া গ্রামে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কোথায় কত ক্ষতি তা দেখা হচ্ছে।” মাধেপুরার জেলাশাসক বলেন, “মুরলিগঞ্জে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মাধেপুরা ও বিহারিগঞ্জে একজন করে মারা গিয়েছেন। আরও মৃত্যুর খবর আসছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE