ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনালের ঠিক এক দিন পরেই হেলসিঙ্কিতে দুই বৃহৎ শক্তির বৈঠক বসছে। সেই বৈঠককে নিয়েও বিশ্ব জুড়ে উত্তেজনার অভাব নেই। সে দিকে উৎসুক হয়ে তাকিয়ে ভারতও।
আগামী মাসের ১৬ তারিখ ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মহাবৈঠকটির সঙ্গে নয়াদিল্লির কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক স্বার্থ যথেষ্ট জড়িয়ে রয়েছে— এমনটাই ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক। মস্কো-ওয়াশিংটনের ওই বৈঠকের পর দু’দেশের সম্পর্কের বরফ গলে জল হয়ে যাবে এমন আশা সাউথ ব্লক করছে না। কিন্তু ট্রাম্প পুতিনের বৈঠকের পর সম্পর্ক কিছুটা সহজ হয়ে যদি সামান্য নিঃশ্বাস ফেলার পরিসরও পাওয়া যায়, সেটিও কূটনৈতিক ভাবে ভারতের কাছে লাভজনক হবে বলে মনে করছে তারা। দীর্ঘদিন এই দুই শক্তির মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলার পর নয়াদিল্লির কাছে সেই কাজটা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। হেলসিঙ্কি বৈঠক ভারতের জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল অর্থমূল্য দিয়ে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনা নিয়ে মস্কো আর ওয়াশিংটনের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে ফেঁসে ছিল দিল্লি। তার পর কিছুটা সাহসী পদক্ষেপ করে মোদী সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে আমেরিকার ক্যাটস্পা (ট্রাম্পের আনা রাশিয়া বিরোধী আইন)-কে অগ্রাহ্য করেই রাশিয়ার সঙ্গে পূর্বিনির্ধারিত চুক্তিটি আগামী অক্টোবরে সই করা হবে। ইত্যবসরে মার্কিন কংগ্রেসে নিজেদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের উপর চাপ তৈরি করা হবে যাতে নিষেধাজ্ঞার কবল থেকে ভারতকে এককালীন ছাড় দেওয়া হয়। সেই চেষ্টা শুরুও করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের আশা, পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা ইতিবাচক হলে ক্যাটস্পা নিয়ে কিছুটা নরম হবে আমেরিকা। আর সেই সুবিধা নিয়ে চুক্তিটি নির্বিঘ্নে সেরে নিতে পারবে ভারত।
শুধু সামরিক সরঞ্জাম কেনাই নয়। গত দু’মাস ধরে কার্যত আমেরিকার রক্তচক্ষুকে অগ্রাহ্য করেই মস্কোর দিকে ঝুঁকেছে মোদী সরকার। মে মাসে রাশিয়ার সোচি-তে পুতিনের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক করে দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত সহযোগিতার মঞ্চকে আরও প্রসারিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে রাশিয়ার প্রস্তাবকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সমর্থনও করেছে ভারত। আফগানিস্তানে যৌথ প্রকল্প, শক্তি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নতুন কর্মসূচি, মেগা অর্থনৈতিক সম্মেলন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে। অন্য দিকে আমেরিকাও গত দেড় দশক ধরে ভারতের অন্যতম কৌশলগত সহযোগী। আঞ্চলিক রাজনীতিতে চিনের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া, আফ-পাক নীতি অথবা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তার প্রশ্নে আমেরিকার উপর ভারতের নির্ভরতা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই বৃহৎ ব্লকের মধ্যে ভারসাম্য রাখাটা বড় চ্যালেঞ্জ ভারতের কাছে। দিল্লি তাই ব্যগ্র ভাবে তাকিয়ে হেলসিঙ্কির বৈঠকের দিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy